আইনের শাসন বলতে কি বুঝায়ঃ আইনের শাসন একটি রাজনৈতিক আদর্শ যা অনুযায়ী কোনও দেশ, রাষ্ট্র বা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত সব নাগরিক বা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলি একই আইনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে, এবং এর মধ্যে আইনপ্রণেতা ও নেতারাও অন্তর্ভুক্ত। সরল ভাষায় বলা যায় যে “কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়”। আইনের শাসন পরিভাষাটি সংবিধানবাদ ও রেখটসষ্টাট মতবাদগুলির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
এটি এক ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নির্দেশ করে, কোনও নির্দিষ্ট আইনি শাসনকে নয়।আইনের শাসন হল সেই কার্যপদ্ধতি, প্রক্রিয়া, প্রতিষ্ঠান, চর্চা ও সামাজিক আদর্শ যেখানে সকল নাগরিক আইনের চোখে সমান এবং যেখানে ক্ষমতার যথেচ্ছ প্রয়োগের স্থান নেই।
আইনের শাসন বলতে কি বুঝায় – বাংলাদেশে আইনের শাসনের প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন
আইনের শাসন এর নীতি ও অভিব্যক্তিঃ সাধারণ অর্থে আইনের শাসন হলো আইনের সর্বোচ্চ প্রাধান্য ক কর্তৃত্ব। রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয় নির্ধারণের মাপকাঠি হবে আইন এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক আইনের চোখে সমান বলে বিবেচিত হবে। সুতরাং আইনের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব Supremacy of law) এবং আইনের চোখে সমতা (Equality before law) এ দুটি বিষয়কে হল পরলেও আইনের শাসনের আরো কিছু প্রাসধিক দিক বা বিষয় চলে আসে। যেমন-
শাসনকার্যে স্বেচ্ছাচারিতার স্থান নেই
আইনের শাসনের মৌলিক প্রণোদনা হলো শাসনকার্যে স্বেচ্ছাচারিতার কোনো স্থান থাকবে না। রাষ্ট্র কেবল সংবিধিবদ্ধ আইন বা প্রচলিত রীতিনীতি ও বিশ্বাসের ফলে গড়ে উঠা আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দল নয়, আইনই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল মাপকাঠি।
আইনের চোখে সকলেই সমানঃ আইনের শাসনের আরেকটি মূলনীতি হলো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ- গোত্র-দল বা উপদল নয়, বরং রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের প্রতিটি ব্যক্তিই আইনের চোখে সমান বলে বিবেচিত হবে। রাষ্ট্রের কোনো নাগরিক যেমন আপন প্রভাবে আইনের ঊর্ধ্বে উঠতে পারে না, তেমনি কোনো নাগরিকই আইনের চোখে নিম্নতর বলে বিবেচিত হতে পারে না।
আইনের আশ্রয় গ্রহণের অধিকার ও সুযোগঃ আইনের শাসনের আরেকটি দিক হলো, রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের যেমন তার কৃতকর্মের জন্য আইনের মুখোমুখি হতে হবে, তেমনি তার অধিকার ও দাবির ব্যাপারে আইনের আশ্রয় গ্রহণের অধিকার ও সুযোগ থাকতে হবে।
আইন যৌক্তিক হবেঃ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার একটি পূর্বশর্ত হলো আইনকে অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে। কোনো আইন যদি নীতিগত বা পদ্ধতিগতভাবে অযৌক্তিক হয়, তাহলে সে আইনে পরিচালিত শাসন আইনের শাসনের মূলনীতির অনুকূল হতে পারে না।
ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাঃ আইন প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং আইনের যথার্থ প্রয়োগ ও মূল্যায়নসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োজিত সরকারের আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা আবশ্যক। বিশেষত বিচার বিভাগকে আইন ও শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখতে হবে।
জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার অনুকূল আইন প্রণয়নঃ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আইনপ্রণেতাদের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার অনুকূল হতে হবে। সুতরাং আইনের শাসন একটি সার্বিক প্রক্রিয়া এবং এটি একটি প্রায়োগিক বিষয়।
বাংলাদেশে আইনের শাসন ও সংবিধান
আইনের শাসন বাংলাদেশের সংবিধানের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সংবিধানের ২৭ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশের সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান বলে বিবেচিত হবে এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী হবে। সংবিধানের ৩১ ধারা অনুযায়ী আইনের আশ্রয় লাভ এবং আইনানুযায়ী আচরণ লাভের অধিকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের অবিচ্ছেদ্য অধিকার।
প্রচলিত আইনের বাইরে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না যাতে তার জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি হতে পারে। সুতরাং বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী- সরকার প্রচলিত আইনের বাইরে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন না, যা ব্যক্তির জান, মাল, সম্মান ও সুনামের জন্য হানিকর। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে তা অবশ্যই প্রচলিত আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই যথাযথ নিয়মনীতি ও পদ্ধতির অনুসরণ করে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
কেননা সংবিধান অনুযায়ী ব্যক্তির বিচার হওয়ার যেমন বিধান আছে, তেমনি তার আইনের আশ্রয় লাভেরও অধিকার আছে। পার্লামেন্টে কোনো আইন পাসের ক্ষেত্রে অবশ্যই সংবিধানের ২৭ ও ৩১ ধারার মূলনীতি ও চেতনার প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে। আইন অনুযায়ী কারো বিচার চাওয়া বা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হবে একটাই যে, সে বাংলাদেশের নাগরিক।
বাংলাদেশে আইনের শাসনের বিভিন্ন দিক
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের একটি অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ। সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা, আদর্শ সংবিধান, নির্বাচিত সরকার ও আইন পরিষদ এবং দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত বিচারব্যবস্থা ইত্যাদির বিচারে এ দেশে আইনের শাসনের একটি অনুকূল পরিবেশ থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক এতোসব আয়োজন সত্ত্বেও বাস্তবে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে আইনের শাসনের প্রতিফলন একেবারেই সীমিত।
কেননা আমাদের আইনি কাঠামো, প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা-প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইনের শাসনের প্রতিকূল উপসর্গ বিদ্যমান।
নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:..
ব্যক্তির প্রাধান্যঃ আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, আইনের ওপর ব্যক্তির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত। রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী আমলা বা রাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয়দের জন্য আইনের পরিধি অনেক সময় সীমিত হয়ে পড়ে। ব্যক্তির অবস্থানভেদে আইন প্রয়োগে ভিন্নতা এখানে নিত্যদিনের ঘটনা।
একই অপরাধে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে আইনের যে বিধান, ক্ষমতা হারালে তা অন্যরকম। অনুরূপ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় কেউ দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হলেও ক্ষমতায় গেলে সে অভিযোগ আইনের চোখে ধরা পড়ে না। অর্থাৎ আইনের সমপ্রয়োগ নীতি আমাদের সমাজে অনুপস্থিত।
আইন প্রণেতা কর্তৃক আইন ভঙ্গঃ এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোকে Gunnar Myrdal এক কথায় Soft Society বলে চিহ্নিত করেছেন। তার মতে, এসব দেশে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব যাদের হাতে থাকে তারা এ কথা বেমালুম ভুলে যান যে, তাদের এ ক্ষমতা ও কর্তৃত্বও আইন এবং আইনি প্রতিষ্ঠানের অধীন। তাই এ সকল দেশে আইনের শাসন টিকে থাকা খুবই কঠিন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানে আইনপ্রণেতারাই প্রধান আইন ভঙ্গকারী। এখানে আইন থাকে প্রভাবশালীদের পকেটে। প্রয়োজনমতো নোট লিখে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা বিচারকদের নিকট পাঠিয়ে দিলে এ নির্দেশই আইন হিসেবে গণ্য হয়।
প্রশাসনিক দুর্বলতাঃ তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আইনের শাসনের পথে একটা গুরুত্বপূর্ণ অন্তরায় হলো প্রশাসনিক দুর্বলতা। প্রশাসন এখানে রাজনীতিবিদদের হাতে জিম্মি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নির্ভয়ে ও নির্দ্বিধায় তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে না।
কোনো আইন কোথায়, কখন, কীভাবে এবং কতটুকু প্রয়োগ করা হবে তা আইনের নিজস্ব বিধিতে নয় বরং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নামক মন্ত্রী, নেতা বা তাদের অনুগত আমলার ইচ্ছানুযায়ী নির্ধারিত হয়। এটা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের মৌলিক চেতনার বিরোধী।
পোষক-পোষিতের প্রভাবঃ আইন ও বিচার ক্ষেত্রে পোষক-পোষিতের (Patron-Client relationship) সম্পর্কের উপস্থিতির ফলে আইনের সুবচন আর সুশাসন প্রায়ই নির্বাসিত হতে দেখা যায়। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও আমলাদের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থককে আনুকূল্য প্রদানের জন্য এখানে আইনকে প্রায়ই পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায়। আমাদের নেতা-নেত্রীরা দলীয় রাজনীতির নোংরা মানসিকতার বশে দলীয় নেতা-কর্মীদের যাবতীয় অপকর্মকেও বৈধ বলে চালিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। আইনের মাপকাঠিতে ব্যক্তি কতটা অপরাধী তা কোনো বিষয় নয়, বরং ক্ষমতাসীন দল বা প্রভাবশালী মহলের সাথে তার সম্পর্কের মাত্রাটাই বিচারের মানদণ্ডে পরিণত হয়।
অপ-আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ
বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বার্থে সরকারগুলো একের পর এক অপ-আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে যাচ্ছে। যখন কোনো দল বিরোধী দলে থাকে তখন তার দৃষ্টিতে যেটি গণবিরোধী কালো আইন, ক্ষমতায় আরোহণ করার পর তো আর কালো আইন থাকে না। ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে সেটি রাতারাতি সাদা হয়ে যায়। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ৫৪ বিধি, জননিরাপত্তা আইন, সন্ত্রাস দমন আইন, দ্রুত বিচার আইন প্রভৃতি সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনার তীর ছুড়লেও বাস্তবে সকলেই এ সকল অপ-আইনের পক্ষে।
আইনের সমতানীতি উপেক্ষিতঃ বাংলাদেশে আইনের চোখে সমতার নীতি কেবল ওপর মহলের বেলায়ই প্রযোজ্য। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে আইনের শাসন বা আইনের চোখে সমতার নীতি শুধু শাসনের সংবিধিবদ্ধ নীতি হিসেবেই সত্য। কেননা এখানে ন্যায়বিচার বেচাকেনা হয়। নিম্ন আদালতে ঘুষ, দুর্নীতি আর শাসনবিভাগীয় হস্তক্ষেপের যে দুষ্টচক্র বিদ্যমান তাতে গরিব, অশিক্ষিত, খেটে খাওয়া মানুষ কেবল ভোগান্তিরই শিকার হয়।
আর উচ্চতর আদালতে বড় বড় আইনজীবী দিয়ে মামলা পরিচালনা করতে না পারলে মামলায় জেতা যায় না। অথচ এদের দর আকাশচুম্বী, যা এ দেশের সাধারণ জনগণ চিন্তাও করতে পারে না।
আইনের শাসন বাস্তবায়নে ত্রুটিঃ বাংলাদেশে কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও যে সংবিধান ও আইনি ব্যবস্থা রয়েছে তার বাস্তবায়ন হলেও অবস্থা বর্তমানের তুলনায় অনেক ভালো হতো। কিন্তু এ দেশে পুলিশ নামক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাটি যে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত তাতে ভালো আইনও তাদের সংস্পর্শে কলুষিত হতে বাধ্য।
এখানে কাউকে শাস্তি প্রদান বা কারো বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য সন্ত্রাসী বা গুণ্ডাবাহিনী ভাড়া করার চেয়ে পুলিশ বা নিম্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটদের ভাড়া করা অনেক সহজ। তাছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারকরা এখানে শাসনবিভাগীয় মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা বা দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির ক্রীড়নক। তাই আদালতে গিয়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা এ দেশের মানুষ প্রায় ছেড়েই দিচ্ছে।
আইনের শাসন বলতে কি বুঝায় ভিডিও দেখুন…
আইন প্রণেতাদের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিঃ বাংলাদেশে আইন প্রণেতাদের সর্বজনীনতা না থাকায় আইন প্রণয়নেও তারা সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির ঊর্ধ্বে উঠতে ব্যর্থ হন। এখানে দেশের জনগণের আশা- আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে কেবল দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নিজ নিজ দলীয় স্বার্থে আইন প্রণয়ন করতে দেখা যায়। এ প্রবণতার মারাত্মক বহিঃপ্রকাশ ঘটে গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। এ সময় একের পর এক সংসদে গণঅভীক্ষার বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করতে দেখা গেছে। ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সামরিক সরকারের আমলে ইনডেমনিটিসহ নানাবিধ অপ-আইন এভাবে পাস করতে দেখা গেছে।
বিচারকদের স্বচ্ছতার অভাব:
অধ্যাপক লাঙ্কি বলেছেন, “কিভাবে রাষ্ট্র তার বিচারকার্য নিষ্পন্ন করছে তা জানতে পারলেই রাষ্ট্রের নৈতিক চরিত্রের স্বরূপ অনেকটা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যায়।” আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার থেকে বিচারবিভাগের স্বাধীনতার পাশাপাশি এর কার্যের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অপরিহার্য। বিচারকদের বিচারকার্য নিষ্পত্তি করার সময় শ্রেণী স্বার্থের ঊর্ধ্বে অবস্থান করতে হবে সকল প্রকার ভয়-ভীতি, লোভ, মোহ মুক্ত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে বিচারের ক্ষেত্রে এ পৃথিবীতে তারাই চূড়ান্ত বিচারক। কাজেই তাদের সামান্য ভুলে একজন নিরপরাধীও শান্তি ভোগ করতে পারে এবং একজন অপরাধী আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মুক্ত হতে পারে।
নেতৃত্ব নির্বাচনঃ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা ও নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় কে কতটা মারমুখী তা দিয়ে। বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে যারা ক্ষমতায় আছে এবং ক্ষমতায় ছিল কোনো দলেই স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি নেই। এই দলগুলোর নেতা-নেত্রী এমনকি কমিটি নির্বাচনের দায়িত্ব পর্যন্ত দলের প্রধান ব্যক্তির হাতে এবং উপদলীয় কোন্দল বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্র চর্চার অনুপস্থিতির পরিবর্তন ঘটায়, যা গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।