ইতালি থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এসে বাঙালি মেয়েকে বিয়ে করা সেই ৩৯ বছর বয়সী ইতালিয়ান নাগরিক আলি সান্দ্র চিয়ারো মিনতে পালিয়ে গেছেন। বিয়ের পরপরই নববিবাহিত স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য ভিসা নিয়ে আসার কথা বলে ইতালি ফিরে যান আলী সান্দ্রো। কিন্তু সেখানে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।
ইতালি ফিরে গিয়ে বাংলাদেশি নববিবাহিত এ স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ না করায় মেয়ের পরিবারে চলছে হতাশা। জানা গেছে, ইতালিতে ওই যুবকের স্ত্রী এবং ১০ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। আলী সান্দ্র পরিবারের কাউকে না জানিয়ে তার এক বাংলাদেশি সহকর্মীর সঙ্গে এদেশে আসেন। পরিবারের লোকজনকে বলেছেন কাজের জন্য তাকে কিছুদিন অন্য এক শহরে গিয়ে থাকতে হবে।
কিছুদিন পরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, তিনি বাংলাদেশে গিয়ে ওই সহকর্মীর ভাতিজিকে বিয়ে করেছেন। আলী সান্দ্র ইতালিতে ফিরে গেলে পরিবার তার বিয়ের কথা জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে জানায় মেয়ের পরিবার ওই মেয়েটিকে বিয়ে করে ইতালিতে আনার বিনিময়ে তাকে মোটা অংকের টাকা দেবে।
এ ঘটনায় তার আগের স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে গেছেন বলে জানা যায়। জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষ সোমবার রাতে বালিডাঙ্গা উপজেলার ২ নম্বর চাড়োল ইউনিয়নের খেকোপাড়া গ্রামে দিনমজুর মারকুস দাসের মেয়ে রত্না রানী দাসকে সনাতন ধর্মের রীতি অনুসারে বিয়ে করেন ইতালির যুবক আলী সান্দ্রো।
‘পালিয়ে যাননি, মেয়েকে শিগগিরই ইতালি নিয়ে যাবেন আমাদের জামাই’: ঠাকুরগাঁওয়ের বালীয়াডাঙ্গীতে বিয়ের এক মাস পর রত্নাকে রেখে ইতালিয়ান যুবকের চলে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা উঠেছে। তবে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি রত্নার পরিবারের কেউ। ১৯ বছর বয়সী রত্না রানী দাস বালীয়াডাঙ্গীর চাড়োল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খোকোপাড়া গ্রামের দিনমজুর মারকুস দাসের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, ২৫ জুলাই রত্নার ভালোবাসার টানে নিজের জন্মভূমি ইতালি ছেড়ে ঠাকুরগাঁওয়ে আসেন ৩৯ বছরের আলী সান্দ্রে চিয়ারোমিন্তে। এরপর ধর্মীয় রীতি মেনে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। রত্নার চাচা সমবারু বলেন, আমাদের জামাই পালিয়ে যাননি। অনেকে বিষয়টি ভুল বুঝছেন। আমাদের ও
রত্নার সঙ্গে জামাইয়ের যোগাযোগ রয়েছে। এমনকি রত্নাকেও খুব শিগগিরই ইতালি নেবেন বলে জানিয়েছেন আমাদের জামাই। ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম বলেন, ইতালিয়ান যুবকের নামে আমরাও নানা ধরনের কথা শুনেছি। এরপর রত্নার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু জামাইয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
তিনি আরো বলেন, ইতালিয়ান সেই যুবকের সঙ্গে কাজ করেন মেয়েটির চাচা জোসেফ। তার চাচা নিজে দেশে এসে তাদের বিয়ে দেন। একজন চাচা তার আপন ভাতিজিকে কখনো বিপদে ফেলবেন না বলে মনে করছি। চাড়োল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার চ্যাটার্জি বলেন, সেই ইতালিয়ান যুবক চলে গেছেন বলে আমরা শুনেছি। এরপর অনেকে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন।