ইন্টারভিউ টিপস – কিভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয়? চাকরির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও উদ্বেগের সময়সীমা হচ্ছে ইন্টারভিউ বা ভাইবা। বলা যায়– এই ধাপটি পেরোতে পারলে একজন চাকরিপ্রার্থী তার ক্যারিয়ার জীবনের সুচনা করতে সক্ষম হবেন। কিন্তু ইন্টারভিউ অনেকের কাছেই ভয় ও আতঙ্কের কারণ হয়ে দেখা দেয়। বিশেষ করে যখন এটা কোন মানুষের জন্য প্রথম সাক্ষাৎকার হয়ে থাকে।
কেননা অনেকেই জানেন না, কিভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয়, অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না ইন্টারভিউ এর ক্ষেত্রে আপনাকে কি কি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তাই ইন্টারভিউ প্রস্তুতি অথবা ইন্টারভিউ টিপস সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে আমাদের আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ুন। কেননা আমাদের আজকের আলোচনার মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো- কিভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয়, চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর, চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন এবং উত্তর ইংরেজিতে, সরকারি চাকরির ইন্টারভিউ প্রশ্ন সমাধানের টিপস সহ আরো বিস্তারিত।
ইন্টারভিউ টিপস কিভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয়?
যেকোনো চাকরির ক্ষেত্রে ইন্টারভিউ এ, কিছু কমন প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। তাই আপনি কোন সরকারি অথবা বেসরকারি যেকোনো পরীক্ষার চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলে অবশ্যই আপনাকে আমাদের উল্লেখিত এই সাধারণ প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হবে। সেগুলো হচ্ছে:-
- আপনি আপনার নিজের সম্পর্কে বলুন।
- আপনি কেন আমাদের কোম্পানিতে চাকরি করতে চান?
- আপনার সবচেয়ে বড় শক্তিশালী গুণাবলী আমাদেরকে জানান।
- আপনার দক্ষতাগুলো আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
- আপনার দুর্বলতা কি কি?
- আপনাকে কেন বা কোন বিষয়ের উপর বা আপনার কোন যোগ্যতার কারণে আমরা আপনাকে নিয়োগ দেবো?
- আমাদের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আপনি কি কি অবগত?
- আপনি কেন চাকরি পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন এবং আমাদের চাকরিটা গ্রহণ করতে চাচ্ছেন?
- আপনি কেমন বেতন আশা করছেন?
- আগামী ৭-৮ বছর পর নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান?
- আমাদের জন্য আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তা জিজ্ঞাসা করুন।
- আপনি আমাদের কোম্পানির এই জব সম্পর্কে কিভাবে কোথায় থেকে জানলেন?
- আপনি কি ধরনের এবং কোন টাইপের কাজের পরিবেশ পছন্দ করেন?
- আপনি কিভাবে চারটের সময় বা চাপের পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন
- আপনি কি স্বাধীনভাবে নাকি কোন টিমে কাজ করতে আগ্রহী!
- আপনি যখন একাধিক প্রকল্পে কাজ করবেন তখন আপনি কিভাবে নিজেকে অরগানাইজ রাখেন?
- আপনি আপনার স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য কি কি করেন?
- এই মুহূর্তে আপনি কতগুলো জায়গায় আবেদন করেছেন?
- আপনি আপনার জীবন বৃত্তান্ত থেকে মনে হচ্ছে আপনি একটি দুটি বছর কোন চাকরি করেন নি। এর পেছনের কারণ!
মূলত, এই সাধারণ কিছু প্রশ্ন সচরাচর ইন্টারভিউ দিতে গেলে আপনাকে করা হতেই পারে। তাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়াটা খুব জরুরী। তাই পরবর্তীতে আমরা ইন্টারভিউ টিপস সমূহের বিস্তারিত আলোচনা আপনাদেরকে জানাবো এবং কিভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয় তার কিছু কৌশল আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর – কিভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয় – ইন্টারভিউ দেওয়ার টিপস এন্ড ট্রিকস
চাকরির ইন্টারভিউ এর কিছু কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর সম্পর্কে যদি আপনি জানতে পারেন, তাহলে বলা যায়— যে কোন চাকরির ইন্টারভিউ এ আপনি টিকে যাবেন। কেননা চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র সেই সকল মানুষকে তাদের কোম্পানির জন্য সিলেক্ট করে থাকেন যারা স্মার্ট, স্পষ্টভাষী এবং নিজ নিজ ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে উপস্থাপন ও নিজের দক্ষতা সম্পর্কে জানাতে সক্ষম। তাই এই মুহূর্তে আমরা আপনাদেরকে ইন্টারভিউতে জিজ্ঞেস করা কয়েকটি কমন প্রশ্ন সম্পর্কে অবগত করব এবং তার উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন ধারাবাহিকভাবে কিভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয় চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর জেনে নেই।
নিজেকে আমাদের সাথে পরিচয় করান
শুরুতেই আপনাকে আপনার নিজের সম্পর্কে জানানোর মতো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আর তাই– সেই মুহূর্তে আপনাকে আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলতেই হবে তাদের সামনে। আর এ পর্যায়ে মূলত আপনাকে বুদ্ধি খাটিয়ে তাদেরকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করতে হবে। প্রশ্নের উত্তরে প্রথমত আপনাকে আপনার নাম, ঠিকানা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে তাদেরকে অবগত করুন।
আর মজার ব্যাপার হচ্ছে— ইন্টারভিউ কারীরা সব সময় চাকরিপ্রার্থীদের জীবনের গল্প শুনতে পছন্দ করেন। তাই আপনি এ পর্যায়ে তাদেরকে আপনার সম্পর্কে এমন কিছু বলুন যেটা তাদের অনেক ভালো লাগবে। আপনার আত্মবিশ্বাস, উৎসাহ ও কমিউনিকেশন স্কিল সম্পর্কে মূলত আপনি আপনার নিজের সম্পর্কে বলার ক্ষেত্রেই তারা বুঝে যাবে।
কিন্তু অনেকেই রয়েছেন যারা নিজের সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ভুলভাল কথা উপস্থাপন করে ফেলেন। তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই শুধুমাত্র আপনি নিজের ইতিবাচক দিকগুলো তাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবেন। আপনার নিজের সম্পর্কে বলার সময় অবশ্যই যে সকল কথা সংযুক্ত করবেন না।
সেগুলো হলো:-
- আপনার বাবা, আপনার ভাই, আপনার চাচা বা আপনার বংশের কোন এক সদস্য এখানে জব করেন, ওখানে জব করেন, তারা বড় মাপের চাকরিজীবী এই সেই। পূর্বে আপনার যে চাকরিটা হয়েছিল তাদের কর্তৃত্ব টা অনেকটা বেশি ছিল ইত্যাদি।
- আবার আপনার নাম অমুখ তমুক।
- আপনি এই মুভি দেখতে পছন্দ করেন, আপনার অনেক বন্ধু আছে, আপনার বংশের ব্যাকগ্রাউন্ড ইত্যাদি ইত্যাদি।
এক কথায়, আলোচনার বাইরে অপ্রাসঙ্গিক কথা না বলার খুবই চেষ্টা করবেন। মূলত এই সময় আপনি নিজের সম্পর্কে ডিস্ট্রিবিউট করবেন। আর এই ডিস্ট্রিবিউশনের জন্যই মূলত তারা আপনার ফার্স্ট ইম্প্রেশন কে কেন্দ্র করে লাস্ট পর্যন্ত নিয়ে যাবেন। সুতরাং ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন সমূহের উত্তর দেওয়ার সময় আপনি তাদের মনে গভীর ছাপ ফেলুন।
আপনার নিজের সম্পর্কে বলার সময় তাদের সাথে এমন ভাবে কথা বলুন, যে তারা আপনাকে আলাদা চোখে দেখবে, আলাদাভাবে তাদের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য চাইবে। তাই অবশ্যই শুরুটা করুন পারফেক্ট ভাবে এবং স্মার্ট এর সাথে।
তাদের এই জব সম্পর্কে কিভাবে অবগত?
চাকরির ইন্টারভিউ এর সময় দ্বিতীয় প্রশ্ন হতে পারে এটি। তাদের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যে চাকরি দিচ্ছে সেই খবরটি আপনি কোথায় থেকে সংগ্রহ করেছেন, কোন মাধ্যমে থেকে কোথায়জানতে পেরেছেন, এ বিষয়ে জানার আগ্রহ ইন্টারভিউ কারীদের মধ্যে কাজ করে। তারা জানতে চায় আপনি অ্যাক্টিভলি তাদের কোম্পানিতে এরকম জবের অপেক্ষায় ছিলেন কিনা।
এমনও হতে পারে আপনি অনলাইনে বা বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে সার্কুলার দেখেছেন এবং সেখান থেকেই চাকরির জন্য আবেদন। আবার এমনও হতে পারে যে তাদের কোম্পানির কোন কর্মচারীর মাধ্যমে আপনি তাদের প্রতিষ্ঠানের সাথে চাকরি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মূলত তার কাছ থেকে সমস্তটা জেনেই আপনি সেই কোম্পানিটির হয়ে কাজ করতে চান।
এরকম যদি কেউ সুপারিশ করার মত থেকে থাকে তাহলে তার নাম এই আলোচনা সময় তাদেরকে জানাতে পারবেন। হ্যাঁ এটাও হতে পারে যে সাক্ষাতকারীরা ইতোমধ্যে আপনার সুপারিশ কারীর সম্পর্কে পূর্বেই জানবেন, তবুও এই দিকটি আপনি যদি নিজে তুলে ধরতে পারেন আপনার আলোচনার মধ্যে দিয়ে তাহলে বিষয়টা আরো অনেক বেশি ভালো হবে।
আপনার সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী গুন কি সে সম্পর্কে জানান।
যেকোনো প্রতিষ্ঠান অবশ্যই ইন্টেলিজেন্ট মানুষকে তাদের কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে চান। আর তাই স্বাভাবিকভাবে আপনার সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী গুণাবলী সম্পর্কে তারা জানার আগ্রহ প্রকাশ করবেন। এ পর্যায়ে মূলত আপনাকে খুবই ভেবেচিন্তে নিজের গুণের কথা প্রকাশ করতে হবে। অনেকের রয়েছেন যারা স্পষ্টভাষী হতে গিয়ে খুব একটা চওড়াভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ফেলেন।
যেটা একদমই ইন্টারভিউ এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এটা ঠিক আপনি ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে অবশ্যই আনস্মার্ট হয়ে ম্যান ম্যান করে কথা বলবেন না। আপনাকে স্মার্টলি কথা বলতে হবে সে সাথে নিজের শক্তিশালী গুণাবলী গুলো খুব পজেটিভ ভাবে তাদেরকে জানাতে হবে।
যেমন:–
- আপনি যেকোন কাজ নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করেন।
- আপনি পরিকল্পনা করে কাজ করতে বেশ পছন্দ করেন।
- আপনি সময় এবং কাজ দুটোকে সমানভাবে গুরুত্ব দেন।
- আপনি কাজের প্রতি খুব সেনসিটিভ ইত্যাদি ইত্যাদি।
মূলত এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আপনি যে কথাগুলো না বলার চেষ্টা করবেন সেগুলো হচ্ছে— আপনি মানুষ হিসেবে অত্যন্ত ভালো সকলের সাথে মিশতে পারেন আপনার আচার-আচরণ এক কথায় অতুলনীয় ইত্যাদি এই কথাগুলো অবশ্যই উল্লেখ করবেন না। আর যদিও বা বলে থাকেন সেটা খুবই সংক্ষেপে।
কেননা আপনি কেমন আপনার আচার ব্যবহার কেমন সেটা মূলত আপনি অল্প কথার মাধ্যমেও তাদেরকে বোঝাতে পারবেন। মনে রাখবেন অতিরিক্ত বেশি কথা ইন্টারভিউ কারীরা অপছন্দ করেন।
আপনি কি ধরনের কাজের পরিবেশ পছন্দ করেন?
সাক্ষাৎকারে মূলত এই প্রশ্নটি আপনাকে করা হবেই। আর তাই ইন্টারভিউ দেওয়ার পূর্বেই আপনার কোম্পানি বা চাকরি দাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বেশ ভালোভাবে হোমওয়ার্ক করাটা জরুরী। তাই সাক্ষাৎকারে যাবার পূর্বে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এবং তারা যে চাকরি টি দিচ্ছেন সেটা কোথায় কোন সংবাদমাধ্যম বা কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সে সম্পর্কে অবগত হন। পাশাপাশি তাদের কোম্পানির পরিবেশ তারা কি কি সুযোগ-সুবিধা দিতে চাচ্ছেন ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হোন।
কেননা আপনি যদি এগুলো বিষয়ে পূর্বে থেকে জানেন এবং কিছুটা হোমওয়ার্ক করেন তাহলে তাদের সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আপনার কাছে অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। সেই সাথে আপনার পছন্দের পরিবেশ কে কোম্পানির কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিল রাখার চেষ্টা করুন। কেননা এটা যদি না হয় তাহলে সেই চাকরি আপনার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। বিষয়টা উদাহরণের মাধ্যমে আরেকটু ক্লিয়ার ভাবে জেনে নেওয়া যাক—
মনে করুন আপনি কোন কোম্পানির ওয়েবসাইটে দেখেছেন যে তাদের একটি সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে বা তারা সহযোগিতা পূর্ব এবং স্বায়ত্তশাসনকে অগ্রাধিকার দেয়। এগুলি আপনি এই প্রশ্নের উত্তরে। সবশেষে বর্ণনা করুন এই কোম্পানি এবং আপনার সাথে যায় এবং আপনার লক্ষ্য হলো সংগঠনটির সাথে আপনার কাজের নীতি মিল রেখে কাজ করা ইত্যাদি বিষয়বস্তু সমূহ সম্পর্কে।
এক্ষেত্রে মূলত আপনার প্রশ্নের উত্তর এমনটা হতে পারে—
” যে আপনি দ্রুতগতির কাজে অধিক বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। আপনার দ্রুত গতির কাজের পরিবেশ বেশ পছন্দের। আর তাই এমন পরিবেশে কাজ করলে আপনি অনুভব করবেন যে আপনি সবসময় কোনো না কোন কিছু শিখছেন এবং ধীরে ধীরে নিজের স্কিলকে ডেভলপ করতে পারছেন।
একই সাথে আপনি দলের সদস্যদের সহযোগিতা করতেও অনেক বেশি পছন্দ করেন এবং প্রতিযোগিতার বিপরীতে লোকদেরকে একটি যৌথ লক্ষে পৌঁছতেও আগ্রহী ইত্যাদি ইত্যাদি। মূলত আপনি যে তাদের চাকরির পরিবেশটাকে উপভোগ করতে পারবেন সেটাই খুব ভালোভাবে সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে বোঝানো।
আপনার দক্ষতাগুলো কি কি এবং আপনার দুর্বলতা কি?
একটি মানুষ কখনোই সবকিছু বিষয়বস্তু নিয়ে দক্ষ হতে পারেন না। প্রত্যেকটা মানুষ স্বাভাবিকভাবে কিছু বিষয়ে অধিক বেশি দক্ষ হয়ে থাকেন। আবার কিছু মানুষ রয়েছে যাদের বেশ দুর্বলতার দিক থেকে থাকে। তাই সাক্ষাৎকারে এমন প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে করা হয়। তাই দক্ষতাগুলো খুবই সুন্দর ও ইতিবাচক ভাবে তাদের সামনে প্রথমত উপস্থাপন করুন। এক্ষেত্রে আপনার প্রশ্নের উত্তর এমনটা হতে পারে যে— আপনি খুবই মিশু প্রকৃতির এবং খোলামেলা মনের মানুষ।
আপনি নতুন কিছু জানতে পছন্দ করেন, নতুন নতুন শিখতে আপনি অনেক বেশি আগ্রহী। খুব অল্প সময়ের মধ্যে যেকোনো পরিবেশে আপনি নিজেকে খুব দ্রুত ও সহজেই মানিয়ে নিতে পারেন। সর্বদা আপনি সততার সাথে কাজ করেন এবং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে জীবনের সবকিছু করার চেষ্টা করেন। আর আপনার মাঝে থাকা দুর্বলতা গুলো অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তাদেরকে জানাতে হবে। অবশ্যই আপনি আপনার দুর্বলতা তাদেরকে জানাবেন তবে এটা এমন ভাবে উপস্থাপন করবেন যাতে তাদের কাছে তা ইতিবাচক হিসেবে নজরে আসে।
কেননা আপনি একটি চাকরির আশায় সাক্ষাৎকারে এসেছেন। তাই এক্ষেত্রে আপনি এভাবে তাদেরকে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।
যেমনঃ আপনি বেশ খুঁতখুতে স্বভাবের, সব সময় চেষ্টা করেন যে কোন কাজ নির্ভুলভাবে করার। সব সময় নিখুঁতভাবে কাজ করতে চান তবে একটু খুঁতখুতে স্বভাবের কারণে কখনো কখনো হিতে বিপরীত হয়ে যায় আবার আপনি সোজা সাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করেন, যেটা সহজেই সকলের স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেন না।
আপনার ধৈর্য একটু কম, তবে সব সময় চেষ্টা করেন দুর্বলতা কে কাটিয়ে ওঠার। এক কথায় ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে আপনি যেটাই বলেন না কেন সেটা যেন আপনার জন্য ইতিবাচক হয়ে ফিরে আসে সেভাবেই বলার চেষ্টা করুন।
ইন্টারভিউ টিপস এন্ড ট্রিকস
ইন্টারভিউ অর্থাৎ সাক্ষাৎকারে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষ নার্ভাস ফিল করেন। আর সেটা যদি হয়ে থাকে প্রথম সাক্ষাৎকার তাহলে তো কোন কথাই নেই। আর তাই এ সময় আপনাকে নিজেকে কন্ট্রোল করতে হবে। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে ইতিবাচকভাবে ভাবতে হবে। ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় বা ইন্টারভিউ দিতে যাবার সময় কখনই অধিক কিছু চিন্তা করবেন না। এ পর্যায়ে মূলত আমরা ইন্টারভিউ এটিকে যাওয়ার জন্য কিছু টিপস শেয়ার করব। যথা:
- ইন্টারভিউকে অন্যান্য সবকিছুর মতো স্বাভাবিকভাবে প্রথমত গ্রহণ করুন
- নিজেকে কোয়ালিটি সম্পন্ন হিসেবে তৈরি করুন।
- উত্তর বলতে পারার কোয়ালিটি নিজের মধ্যে আয়ত্ত করুন।
- কপি বা মুখস্ত বিদ্যাকে ঝেড়ে ফেলুন। সবসময় চেষ্টা করুন যেকোনো বিষয় অন্যের সামনে উপস্থাপন করার সঠিক পদ্ধতি আয়ত্ত করার।
- জাস্ট রিলাক্স মুডে থাকুন।
- ইন্টারভিউ বা সাক্ষাৎকারে যাওয়ার সময় তাদের কোম্পানির সম্পর্কে জেনে বা তাদের কোন ড্রেস কোড আছে কিনা সে সম্পর্কে জেনে তেমনি পোশাক পরিধান করুন।
- সঠিক সময় সাক্ষাৎকারের স্থানে উপস্থিত হন।
- আপনি যে প্রস্তুতি গুলো ইন্টারভিউ দেওয়ার পূর্বে নিয়েছেন সেটা ইন্টারভিউ এর ১৫ মিনিট আগে থেকে না পড়ার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ বারবার রিভাইস দেওয়া বন্ধ করুন।
- আপনি যেটা জানেন আপনার সম্পর্কে আপনি সত্যটা সবসময় তাদের সামনে উপস্থাপন করুন।
- নিজের মনকে ফ্রেশ রাখুন স্মার্ট ও হাসিখুশি থাকুন।
- আপনার প্রবলেম, আপনার ফিউচার আপনার রেজাল্ট আপনার একশন ইত্যাদি সবকিছু মেনটেইন করুন।
- অবশ্যই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিকঠাক রাখার চেষ্টা করুন।
- ম্যান ম্যান করে কথা বলা পরিহার করুন।
- তাদের কাছ থেকে আশা প্রত্যেকটি প্রশ্ন ভালোভাবে শুনুন এবং সংক্ষেপে স্মার্টলি তাদেরকে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন।
- আপনার ব্যবহার তাদের সামনে এমন ভাবে উপস্থাপন করুন যাতে আপনি তাদের কাছে তাদের সেই চাকরির জন্য অধিক বেশি দক্ষ বা উপযুক্ত না হলেও মানুষ হিসেবে খুবই ভালো এটা প্রমাণ করতে পারে।
- সেখানে সব সময় ঠান্ডা মাথায় থাকুন মনে প্রচন্ড জোর রাখুন।
- অনেকেই রয়েছেন যারা ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে হাই তুলে ফেলেন। হ্যাঁ এটা স্বাভাবিক বিষয় তবে সাক্ষাৎকারের সময় এটা খুবই বাজে এবং আনক্লাসিক একটি বিষয় হিসেবে ধরা হয়
- আমরা ভর্তি পরীক্ষার সময় যে সব উপদেশ শুনে এসেছি এখনো কিন্তু তার কিছু কিছু সমান প্রাসঙ্গিক। মনে রাখবেন দিনশেষে চাকরির পরীক্ষাটাও একটি পরীক্ষাই।
- চেষ্টা করুন সাক্ষাৎকারে যাওয়ার আগে ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাডি করে নেওয়ার।
- অবশ্যই নিজের মোবাইল ফোন সাইলেন্ট রাখুন।
- নাকে মুখে অযথা হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- ইন্টারভিউ কারীদের মন স্মার্টের সাথে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করুন।
পরিশেষেঃ মূল কথা হলো– ইন্টারভিউ একটা সাধারণ পরীক্ষা মাত্র। আপনি যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানেন সেটা যেমন পরীক্ষার খাতায় ইজি ভাবে উপস্থাপন করেন, ঠিক একইভাবে আপনি সাক্ষাৎকারে গিয়ে ইন্টারভিউ কারীদের সামনে বসে তাদের কিছু প্রশ্নের আনসার করবেন। আপনার ভিতরে শালীনতা নম্রতা ভদ্রতা ইত্যাদি সবকিছু বজায় রাখবেন এবং নিজেকে অত্যন্ত স্মার্ট হিসেবে তাদের কাছে উপস্থাপন করবেন।
তাদের জন্য আপনি যে কতটা উপকারী, তাদের কোম্পানি আপনাকে পেলে ভবিষ্যতে ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারবে ইত্যাদি সবকিছুই আপনার সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে প্রকাশ করুন।