কিভাবে পড়াশোনায় মনোযোগী হবেন আপনি পড়াশোনা করতে পারছেন না কারন আপনার অভ্যাস নাই পড়ালেখা করার৷ মনে করেন আপনি সকাল ১০ টায় পড়তে বসলেন। অন্যদিন আপনি এই সময় আয়েস করে নাস্তা করে ইউটিউব বা ফেইসবুক স্ক্রোল করেন৷ আপনার ব্রেন অই টাইমে পড়ালেখা করার অভ্যাস টাকে নরমাল হিসাবে নিচ্ছে না৷ তাই পড়ায় মনোযোগ ও হচ্ছে না, পড়া মাথায় ও ঢুকছে না।
সঠিক স্থান নির্বাচন করুনঃ কোন জায়গায় পড়তে বসলে মনোযোগ ধরে রাখা যাবে তা প্রত্যেকের পছন্দের ওপর নির্ভর করে। কেউ নিরিবিলি পরিবেশে পড়লে পড়া মনে রাখতে পারে, কেউ আবার কোলাহলের শব্দেও পড়তে পারে। আপনার জন্য কোনটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে তা জানতে হবে আগে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পড়ায় মনোযোগী হতে চাইলে এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে, যেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা আছে।

এতে চোখের ওপর চাপ কমে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে। এ ছাড়া, পড়ার স্থান গুছিয়ে রাখার পরামর্শও দেন অনেকে। কেননা পড়ার জায়গায় বই-খাতা এলোমেলো থাকলে মনও অস্থির হয়ে ওঠে কিছু সময় পর। তাই পড়তে বসার আগে যা যা লাগবে তা হাতের নাগালের মধ্যে পরিপাটি করে রাখতে হবে। পড়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকাটাও জরুরি। প্রতিদিন একই স্থানে পড়তে বসলে মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে পড়ার মনোভাব তৈরি করে। তাই
যে স্থানে বসে খাওয়া-দাওয়া করা হয় কিংবা বিশ্রাম, আড্ডা দেওয়া হয়, সেখানে পড়তে না বসাই ভালো।
কিভাবে পড়াশোনায় মনোযোগী হবেন
বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করুনঃ আমরা অনেক সময় অতি উৎসাহে বড় বড় পরিকল্পনা করে ফেলি, পরে তা পূরণ করতে না পারলে আফসোস করি। এতে মনোবল তো বাড়েই না, বরং আত্মবিশ্বাস আগের চেয়ে কমে যায়। তাই শুরুতেই কঠিন পদক্ষেপ না নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয়, আপনার লক্ষ্যকে যদি কয়েকটি খণ্ডে ভাগ করে ফেলতে পারেন। এতে ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমে বড় লক্ষ্য পূরণ করা সহজ হবে। যেমন, পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষায় ৮০ নম্বর পাওয়া আপনার প্রধান লক্ষ্য।
এজন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্ধেক পাঠ্যপুস্তক পড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিন। সে অনুযায়ী পড়ার রুটিন আরও কয়েকটি ভাগে ভাগ করুন। সেটি হতে পারে প্রতিদিন তিনটি বিষয় পড়া কিংবা এক সপ্তাহে বিগত বছরের দুটি প্রশ্নের সমাধান করা। এভাবে আপনার বড় লক্ষ্যগুলো অর্জন করা আরও সহজ ও বাস্তবসম্মত হয়ে উঠবে।
বিরতি নিয়ে পড়ুনঃ একটানা পড়লে মনোযোগ ধরে রাখতে কষ্ট হয়। কিছুক্ষণ পরপর বিরতি নিলে মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা বাড়ে এবং পড়া মনে থাকে। তাই ২৫ মিনিট পরপর ৫-১০ মিনিটের জন্য ছোট বিরতি নিন। এভাবে চারবার পুনরাবৃত্তি করুন। তারপর একটি দীর্ঘ বিরতি নিন।
বিরতিতে কিছুক্ষণ ব্যায়াম, মেডিটেশন, হালকা ঘুম কিংবা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এরকম অনেক কৌশল রয়েছে। আপনার জন্য কোনটি উপকারী তা জানুন এবং মেনে চলুন।
বিষয়ভিত্তিক অগ্রাধিকার দিনঃ পড়তে বসার আগে বিষয়ের অগ্রাধিকার অনুযায়ী তালিকা তৈরি করুন। এতে কোনটি আগে, কোনটি পরে পড়তে হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ পড়ার বিষয়গুলো আগে চিহ্নিত করুন, এতে আরও কার্যকরভাবে সময় কাজে লাগাতে পারবেন।
প্রথমে কী করা উচিত সে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হলে, আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী কোনটির ডেডলাইন আগে সেটি দেখুন। এভাবে ক্লাস টাস্ক থেকে কোর্সওয়ার্ক সম্পন্ন করতে গুগল ক্যালেন্ডার, ক্লিকআপের মতো অ্যাপ সাহায্য করতে পারে।
কিছু কৌশল মেনে চলুনঃ পড়ায় মনোযোগ ধরে রাখতে কিছু স্মার্ট অভ্যাস এবং কৌশল মেনে চললে দ্রুত পড়া মনে থাকে। যেমন, আলাদা অধ্যায় বা বিষয়ের জন্য আলাদা রঙের ফ্ল্যাশকার্ড তৈরি করে নিজের ভাষায় সংক্ষেপে তথ্য লিখে রাখা।
পড়া অন্য কাউকে বুঝিয়ে দেওয়া। বড় তথ্য ছোট ছোট অংশে ভাগ করা। নির্দিষ্ট সময় পরপর পুনরায় পড়া। একই বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কী কী প্রশ্ন আসতে পারে তা চিন্তা করা এবং তার উত্তর জানা।
ফোন থেকে দূরে থাকুনঃ পড়ার সময় মনোযোগ ধরে রাখার প্রধান শত্রু হয়ে উঠেছে হাতে থাকা ফোন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নোটিফিকেশন বা বন্ধুদের বার্তা পেলে মনোযোগ নষ্ট হতে আর কিছু লাগে না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একজন সাধারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী গড়ে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা ৫০ মিনিট অ্যাপ স্ক্রল করেই ব্যয় করে।
অথচ এই সময়টুকু পড়ায় ব্যয় করতে চায় না কেউ। তাই পড়ার সময় এমন অ্যাপ ব্যবহার করুন যাতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ফোন নিজে থেকেই বন্ধ থাকে।
নিজেকে পুরস্কার দিনঃ প্রতিটি লক্ষ্য অর্জনের পর কোনো কিছু পেলে আগ্রহ অনেকগুণ বাড়ে। তাই কিছু আনন্দ পাওয়ার আশায় পড়ায় মনোযোগ ধরে রাখতে পারলে মন্দ কী! পুরস্কার যে সবসময় বড় হতে হবে এমন তো কথা নেই। ছোটোখাটো উদযাপন দিয়েও আনন্দ উপভোগ করা যায়।
সেটি হতে পারে আপনার প্রিয় অনুষ্ঠানের একটি সিজন দেখা, টেক-আউট খাবারের অর্ডার দেওয়া বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া। তবে আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী কতটুকু এগিয়েছেন সেটি মাথায় রাখতে ভুলবেন না।
কিভাবে পড়াশোনায় মনোযোগী হবেন ভিডিও দেখুন…
পড়াশোনায় মনোযোগী হবেন
এইটার জন্যে আপনাকে অভ্যাস বানাতে হবে। ২১ দিন রুলস টা ফলো করতে পারেন। মূলত বলা হয় ৬৬ দিন লাগে একটা জিনিসকে অভ্যাস বানাতে। আজকে থেকে টানা ২১ দিন একই জায়গায় একই সময় বইখাতা নিয়ে পড়তে বসবেন। যে জিনিস গুলা খেয়াল রাখবেন।
১। পড়ার একটা পরিবেশ করে নিবেন।
২। বাসা বা হোস্টেল যেখানেই থাকেন, বলবেন এই টাইম থেকে এইটাইম পড়বেন, কেউ যাতে ডিস্টার্ব না করে।
৩। যতই মন না বসুক ভালো না লাগুক বই খাতা নিয়ে বসে থাকবেন। Fake it till you make it.
৪। বই রিডিং পড়বেন, দেখে দেখে খাতায় লিখবেন।
৫।study with me ইউটিউবে সার্চ দিলে পাবেন৷ এই টাইপ ভিডিও মোবাইল বা পিসিতে চালিয়ে দিয়ে ওদের সাথে পড়বেন।
৬। প্রথমদিনেই ১০ ঘন্টা পড়তে যাবেন না। ৩/৪ ঘন্টা পড়ার ট্রাই করবেন প্রথম ১০ দিন এর পর থেকে আস্তে আস্তে বাড়াবে সময়।