“শান্তি শৃঙ্খলা নিরাপত্তা প্রগতি” বাংলাদেশ পুলিশের মূলনীতি। একটি দেশের সকল শ্রেণীর মানুষকে সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে অবস্থান করেন পুলিশবাহিনী। আমাদের মাঝে কিছু সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রয়েছেন যারা পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পর্কে অধিক বেশি জানতে আগ্রহী। আজকাল বেশিরভাগ তরুণ তরুণীরা অনলাইনে বিভিন্ন সেক্টরে নিজেদেরকে ক্যারিয়ার গড়তে ব্যস্ত।
আবার এরই মাঝে কিছু তরুণ তরুণী রয়েছে যারা একজন পুলিশ কনস্টেবল হয়েও দেশের হয়ে দশের হয়ে কাজ করতে আগ্রহী। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পর্কে সমস্ত বৃত্তান্ত আলোচনা করব। তো পাঠক বন্ধুরা আপনি কে নিজেকে একজন পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার কথা ভাবছেন? যদি আপনার উত্তর হয়ে থাকে “হ্যাঁ”তাহলে বলব আমাদের আজকের এই আর্টিকেল স্কিপ না করে সম্পন্ন করুন।
তাহলে আসুন জেনে নেই পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পর্কে সবকিছু।
প্রথমত: আবেদন লিংকে ক্লিক করতে হবে। যা আমরা উপরে উল্লেখ করেছি।
দ্বিতীয়তঃ আবেদন লিংকে ক্লিক করার পর প্রথম অপশনে ক্লিক করতে হবে।
তৃতীয়তঃ ক্লিক করতে হবে অ্যাপ্লিকেশন ফরম এ।
চতুর্থতঃ Trainee Recruit Constable” রেডিও বাটন সিলেক্ট করে “Next” বাটনে ট্র্যাপ করতে হবে।
পঞ্চমতঃ আপনি আপনার আবেদন ফরম স্ক্রিনে দেখতে পাবেন। এরপর পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করে আপনাকে সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদন ফরম জমা দিতে হবে।
আর এটা নিশ্চয়ই জানবেন অনলাইনে আবেদনের জন্য আবেদন ফ্রি জমা করতে হয়। আর এসব জমা দেওয়ার সমস্ত ইন্সট্রাকশন উপরে উল্লেখিত পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা রয়েছে।
তাই বিস্তারিত জানতে আবারো পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অফিশিয়াল নোটিশ মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং সময় থাকতে আবেদনকার্য সম্পন্ন করুন।
পুলিশ কনস্টেবল এর কাজ কি?
“চাকরি নয়, সেবা”এই স্লোগানেই টিআরসি পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। নিয়োগযোগ্য শুন্য পদের পরিসংখ্যান মতে সারাদেশে প্রায় সময় তিন হাজারের কম অথবা বেশি নারী-পুরুষ উভয় মিলে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। যাদের উদ্দেশ্য থাকে জনগণকে সঠিক সেবা পাইয়ে দেওয়া। পুলিশ কনস্টেবল এর কাজ কি?
এ বিষয়ে যারা জানতে আগ্রহী তারা আমাদের এই পয়েন্ট অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আমরা সবাই কম বেশি জানি বাংলাদেশ পুলিশ আমাদের এই ছোট্ট সোনার বাংলাদেশের একমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। এই সংস্থাটির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে নিজেদের স্লোগানের সামনে এগিয়ে চলা। সাধারণত একজন পুলিশ কনস্টেবলের প্রধান কাজ হচ্ছে–
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পর্কে সবকিছু
” জনগণের সেবা করা এবং দেশের দশের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করা”। মূলত একজন পুলিশ কনস্টেবলের ধর্ম হল সেবা করা এবং এটাই তাদের মুখ্য বিষয় ও মূল উদ্দেশ্য। সাধারণত এই চাকরিতে নিয়োজিত ব্যক্তিকে একটি জায়গায় পোস্টিং দেওয়া হয় আর সেখানে জেলের ভেতর যেসব লোক বন্দী থাকে তাদের দেখাশোনা করতে হয়। কেননা জেলে বন্দি থাকা অবস্থাতেও এমন অনেক সন্ত্রাসী রয়েছে যারা অনৈতিক কাজকর্ম করে বেড়ায়। তাই তাদের দেখাশোনা করা একজন পুলিশ কনস্টেবলের দায়িত্ব।
পাশাপাশি চুরি ডাকাতি রোধ, দাঙ্গা ইত্যাদি সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন জনসভা নির্বাচনী দায়িত্বে পুলিশ কনস্টেবল অংশগ্রহণ করে থাকেন। আর বর্তমানে বাংলাদেশ এমন একটি জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে এই পোস্টে নারী পুরুষ উভয়ে কাজ করতে সক্ষম। মূলত একজন পুলিশ কনস্টেবল এর প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য দেশের মানুষের সেবা করা দেশ ও জাতীয় কল্যাণে নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রাখা।
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে যোগ্যতা
একজন পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে নিয়োগ দিতে চাইলে অবশ্যই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। সচরাচর একজন পুলিশ কনস্টেবল এর যোগ্যতা হিসেবে বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হয় এবং সেগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে নিয়োগ দেওয়া হয় বাংলাদেশ পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে। তাই এ পর্যায়ে আমরা পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের যোগ্যতা হিসেবে সাতটি বিষয়ে তুলে ধরব।
মূলত আপনি যদি এই সাতটি ধাপ পেরিয়ে যেতে পারেন তাহলে এটা সুনিশ্চিত যে আপনি একজন পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন ও দেশের ও দেশের হয়ে কাজ করতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে টিকে যাওয়ার সাতটি ধাপ।
- ১। প্রিলিমিনারী স্ক্রিনিং,
- ২। শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল এন্ডুরেন্স টেস্ট,
- ৩। লিখিত পরীক্ষা,
- ৪। মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা,
- ৫। প্রাথমিক নির্বাচন,
- ৬। পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা
- ৭। চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্তকরণ।
সচরাচর পুলিশ কনস্টেবলে নিয়োগের জন্য আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে আবেদনকারী প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হয় এসএসসি বা এইচএসসি পাস। পাশাপাশি শারীরিকভাবে অবশ্যই ফিট থাকতে হয়। উচ্চতা হতে হয় কমপক্ষে 5 ফুট 6 ইঞ্চি। তবে হ্যাঁ যদি ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠী বা মুক্তিযোদ্ধা কোটা থেকে থাকে তাহলে উচ্চতার পরিসীমা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হলেও আবেদনের জন্য তাকে গ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করা থাকে।
এটা মূলত পুরুষের ক্ষেত্রে। অপরদিকে একজন নারী হিসেবে যদি কনস্টেবল পদে অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে উচ্চতা ন্যূনতম ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হতেই হবে। ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠী অথবা মুক্তিযোদ্ধার কোটা থেকে থাকলে এক্ষেত্রে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হলে চলবে। বুকের মাপ সাধারণত ও অন্যান্য কোঠার পুরুষ প্রার্থীর স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি হতে হবে এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি হতে হবে। এটা পুরুষদের ক্ষেত্রে।
অপরদিকে নারীদের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় বুকের মাপ হতে হবে ৩০ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় হতে হবে ৩১ ইঞ্চি। বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২০ বছর। বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে অবশ্যই ফিটনেসের মিল থাকতে হবে এবং ওজন ঠিকঠাক থাকাটাও জরুরী।
পাশাপাশি হতে হবে অবিবাহিত এবং বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক। মূলত আপনি যদি পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে চান তাহলে এই সমস্ত বিষয় আপনি নিয়োগ সার্কুলার এই দেখতে পাবেন এবং সেসময় মিলিয়ে নিয়ে নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে আবেদন করতে পারবেন উক্ত সার্কুলারে।
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ বয়স কত
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোঠা বা ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠীর সেই বয়সের পরিসীমাটা ১৮ হতে ৩২ পর্যন্ত হলেও তা গ্রহণযোগ্য।
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা মূলত আবেদন করার পরবর্তীতে নোটিশ প্রকাশিত হয়। আর আপনি সেই পরীক্ষা পর্যন্ত যেতে পারবেন উপরে উল্লেখিত সেই সাতটি ধাপ পেরোতে পারলে। সুতরাং আপনি যদি প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং , শারীরিক মাপ এবং ধৈর্য পরীক্ষাতে টিকে যেতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে।
এরপর প্রাথমিক নির্বাচনের পরবর্তীতে আপনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। পরবর্তীতে ঠিকঠাক থাকলে আপনি নিয়োগের সুযোগ পাবেন এবং একজন পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে দেশের হয়ে দশের হয়ে কাজ করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ আমাদের মাঝে কিছু মানুষ নিজের প্রতি বিশ্বাসই নন।
আর তাই অনেকেই আকাশ পাতাল চিন্তা করে অনেক কিছু আজগুবি ভেবে ফেলেন। তাদেরকে বলব আপনি পুলিশ কনস্টেবল কেন যেকোনো চাকরির জন্য নিজেকে যোগ্য করে তুলতে পারবেন যদি আপনি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। তাই সর্বদা নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন এবং সঠিক উদ্যোগে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে থাকুন।
পুলিশ কনস্টেবলের বেতন
২০১৫ অনুযায়ী ১৭ তম গ্রেডে ৯ থেকে ২১ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকে একজন পুলিশ কনস্টেবল। পাশাপাশি চাকরির কিছু সুবিধাধি ভোগ করতে পারেন। যেমন:
- ঝুঁকি ভাতা
- ঈদ বোনাস
- বিনা খরচায় পোশাক সামগ্রী
- চিকিৎসা সুবিধা
- নিজের ও পরিবারের নির্ধারিত সংখ্যক সদস্যের জন্য প্রাপ্যতা অনুযায়ী পারিবারিক রেশম সামগ্রী
- জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার সুযোগ।
পুলিশ কনস্টেবল হতে কত টাকা লাগে?
বর্তমানে সরকারি চাকরি মানেই ঘুষের কারবার। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই মানুষ এটা জিজ্ঞেস করে বসেন পুলিশ কনস্টেবল হতে কত টাকা লাগে, কেমন টাকা খরচ পড়ে? তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছি। আপনারা যারা জানতে আগ্রহী পুলিশ কনস্টেবল হতে কত টাকা লাগে তাদের প্রশ্নের সমাধান জেনে নিন।
কোন দালাল অথবা প্রতারক চক্র যাতে চাকরিপ্রার্থীদের নিকট হতে প্রতারণা করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা পয়সা হাতে নিতে না পারে সেজন্য ইতোমধ্যে জেলা পুলিশ কঠোর মনিটরিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। গোয়েন্দা ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে এর জন্য।
আর তাই আপনার যদি যোগ্যতা থাকে তাহলে আপনি স্বাভাবিকভাবেই একজন পুলিশ কনস্টেবল হয়ে যোগদান করতে পারবেন। এজন্য দালাল অথবা প্রতারকের হাত থেকে দূরে থাকুন, অসৎ উপায় অবলম্বন না করে নিজের যোগ্যতার উপর জোর দিয়ে চাকরির জন্য আবেদন করুন এবং সকল প্রকার ইনস্ট্রাকশন ফলো করুন। আশা করা যায় আপনি কোন প্রকার টাকা ছাড়াই একজন পুলিশ কনস্টেবল হয়ে দেশের সেবায় নিয়োজিত হতে পারবেন।