পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের প্রথম দিনে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়। এতে সোমবার ভোর থেকে সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে অনেকে পিকআপ ভ্যানে মোটরসাইকেল তুলে পদ্মা সেতু পার হয়েছেন। অনেকে আবার ফেরিতে করে পার হয়েছেন পদ্মা। তবে বিকেলের পর সেটিতেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
নিষেধাজ্ঞায় কঠোরতার কারণে সেতুর উপর দিয়ে আজও মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ রয়েছে। মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য বিকল্প পথ হিসেবে পাটুরিয়া এবং শরিয়তপুর ঘাট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। গতকালের মতো আজও সেতুতে পিকআপে করে মোটরসাইকেল পারাপারের চেষ্টা করলে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এমতাবস্থায় সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপারে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, পদ্মা সেতু দিয়ে পণ্য হিসেবে পিকআপ কিংবা ট্রাকে করে মোটরসাইকেল পরিবহন করা যাবে। কিন্তু মোটরসাইকেলের মালিক সাথে যেতে পারবেন না। মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, পিকআপে পণ্য হিসেবে মোটরসাইকেল বহন করা গেলেও সাথে যাত্রী থাকতে পারবে না। তবে মোটরসাইকেল চালকদের অভিযোগ, পিকআপ ভ্যানে মোটরসাইকেল সংশ্লিষ্ট কাউকে সঙ্গে যেতে না দেওয়ায় চুরির ভয় রয়েছে।
সেতুর দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার সাথে সাথে সেতুতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। এছাড়া বিধিনিষেধ মাইকের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে টোলপ্রান্তে।
পদ্মা সেতুতে স্পিড গান-সিসিটিভি লাগিয়ে বাইক চালুর সিদ্ধান্ত পদ্মা সেতুতে স্পিড গান, সিসিটিভি স্থাপনের পর মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার (২৮ জুন) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন সব দপ্তর/সংস্থার ২০২২-২৩ সালের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই ও ২০২১-২২ সালের শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা যে অনির্দিষ্টকালীন সিদ্ধান্ত তা নয়। এটা এখন বন্ধ আছে, মোটরবাইক সম্পর্কে যেটা বলা হয়েছে সেখানে এখন স্পিড গান, সিসিটিভি মিটার বসানো হবে। সেগুলো স্থাপনের পর হয়তো নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যাত্রী কম থাকায় লঞ্চ মালিকদের হতাশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনদিনেই হতাশা এলে হবে না। আমরা তো আশাবাদী। ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ কেন তৈরি করছি? এটার চাহিদা আছে বলেই করছি। সেজন্য আমাদের শত শত কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে, আমরা তো লক্ষ্য নিয়েই আছি। আমরা তো অপরিকল্পিত দেশ পরিচালনা করছি না। অপ্রয়োজনীয় কিছু প্রধানমন্ত্রী করছেন না। আমি মনেকরি, লঞ্চ যাত্রা সামনে আরও উপভোগ করবেন।
পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলার সঙ্গে রাজনীতি দেখছেন কিনা সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে একজন নেত্রী যিনি এতিমের টাকা আত্মসাতের জন্য কারাবরণ করে আছেন, তিনি নিজেই বলেছেন পদ্মা সেতুতে কেউ যাবেন না ভেঙে পড়বে, এটার নাট বল্টু জোড়াতালির। জোড়াতালির রাজনীতি তো সেরকমই। তাকে যারা ফলো করেন তারা তো এটাকে সত্যই মনে করবেন। গলা থেকে একজন নারীর অলংকার ছিনতাই যেমন এটিও তেমন।