১২ বছরের স্বামীর সংসার ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিকের বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে ৩ দিন ধরে অবস্থান করছে এক গৃহবধু। স্ত্রী হিসাবে মেনে না নিলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে ওই গৃহবধু। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামে।
জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম ছাটগোপাল গ্রামের জনৈক আবু ইব্রাহীম লিটন প্রায় ১২ বছর পুর্বে একই গ্রামের মোজাম্মেল হকের কন্যা মৌসুমী আক্তার (৩০) কে বিয়ে করে। তাদের সংসারে দুটি সন্তানও রয়েছে। মৌসুমী পাগলারহাট বাজার এলাকায় একটি বেসরকারী কেজি স্কুলে শিক্ষকতা করার সময় একই ইউনিয়নের দক্ষিন ছাটগোপালপুর গ্রামের জহির উদ্দিন বানিয়ার পুত্র আতিকুল ইসলাম(১৮) স্কুলে তার ভাতিজাকে স্কুলে আনা নেয়ার সুবাদে মৌসুমী ও আতিকুল মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এদিকে গত ১৮ জুন আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে মৌসুমী ও তার প্রেমিক আতিকুল ইসলাম ঢাকার সাভারে গিয়ে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বাসার মালিকের সহায়তায় কাজীকে দিয়ে মৌসুমীর পুর্ব স্বামীকে তালাক দিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করে। এদিকে বিষয়টি জানাজানির পর মামলার হাত থেকে রেহাই পেতে তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম কামরুজ্জামানের মধ্যস্থতায় ২১ জুন প্রেমিক আতিকুল ও প্রেমিকা মৌসুমীকে বাড়িতে আনার সময় আন্ধারীঝাড় নামক স্থানে আসার পর প্রেমিক আতিকুলের আত্মীয় স্বজন পুর্ব পরিকল্পনামত আন্ধারীঝাড়ে মৌসুমী ও আতিকুলকে বাস থেকে নামিয়ে কৌশলে আতিকুলকে আবারও একটি নৈশকোচে ঢাকা পাঠায় এবং মৌসুমীর নিকট থেকে বিভিন্ন কাগজপত্র ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে তার বাড়িতে রেখে পরে মিমাংসা করে নিবে মর্মে চলে যায়।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান প্রেমিক আতিকুল ইসলামের অভিভাবককে দ্রুত ছেলে হাজির করে সমাধান করার কথা বললেও তারা চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করে ছেলেকে হাজির না করায় তিনি মৌসুমীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিলে নিরুপায় হয়ে গত ২৫ জুন প্রেমিক আতিকুলের বাড়িতে স্ত্রী হিসাবে মেনে নেয়ার দাবীতে অবস্থান নেয়। সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৌসুমী ওই বাড়িতেই অবস্থান করছে।
ভূক্তভোগী মৌসুমী বলেন, যেহেতু সে তার স্বামী আবু ইব্রাহীম লিটনকে তালাক দিয়ে আতিকুলকে বিয়ে করেছে সে আতিকুলের সংসারই করবে। না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই। এ বিষয়ে আতিকুল ইসলামের পিতা জহির উদ্দিন বানিয়া জানায় তার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। ওই মেয়ে জোর করে বিয়ে করার জন্য বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জানান, আমি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলার হয়রানী থেকে বাচার জন্য উভয় পরিবারের মধ্যে মিমাংসার প্রস্তাব দেই। কিন্তু ছেলে পক্ষের কোন সাড়া না পাওয়ায় ওই নারী কে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এ বিষয়ে ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।