ফ্রিল্যান্সিং কী ? ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি, কিভাবে শিখব ফ্রিল্যান্সিং, আর কিভাবেই বা সফলতা আসবে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্যারিয়ার জীবনে! এ বিষয়ে জানার আগ্রহ প্রায় সকলেরই। কেননা আজকাল সকলেই চায় স্মার্ট মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে। আর ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে অর্থ উপার্জনের অন্যতম একটা অনলাইন মাধ্যম। কিন্তু অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির সাথে পরিচিত হলেও জানেন না– ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করতে হয় এবং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি?
তাই সেই সকল ইউজারদের কথা চিন্তা করে আমরা সাজিয়েছি আজকের এই নিবন্ধন টি। আপনি মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর A টু Z জানতে পারবেন আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে। তাহলে আসুন ধারাবাহিকভাবে জেনে নেওয়া যাক– ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত এবং উপার্জন করা যাক স্মার্ট মাধ্যমে হিউজ পরিমাণ অর্থ। সো ফ্রেন্ডস লেটস স্টার্টেড।
ফ্রীল্যান্সিং কী ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে
ফ্রীল্যান্সিং কী ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে: ফ্রিল্যান্সিং শব্দের অর্থ হচ্ছে মুক্ত পেশা। আর এই অর্থের উপর ভিত্তি করে যদি ফ্রিল্যান্সিংকে সংজ্ঞায়িত করা হয় তাহলে এমনটা বলা যায় যে– কোন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান অথবা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির আদেশ অনুযায়ী কারো কাজ না করাই ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং মূলত অনলাইন ভিত্তিক একটি পেশা। যে পেশায় নিযুক্ত হলে কোন বসের হুকুম পালন করতে হয় না বা অন্যের মর্জিমাফিক কাজ করার প্রয়োজন পড়ে না। মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে ভালো এমাউন্টের অর্থ উপার্জন করা যায়।
আর এই কাজ করতে কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে পার্মানেন্ট ভাবে চুক্তিবদ্ধ হতে হয় না বরং প্রজেক্ট বেসিসে কাজ করার সুযোগ ভোগ করা যায়, যে কারণে অনেক বেশি ফ্রিডম অর্থাৎ স্বাধীনতা রয়েছে এই পেশায়। আর তাই ফ্রিল্যান্সিং মুক্ত পেশা নামে পরিচিত। অতএব বলা যায় – অনলাইন মাধ্যমকে কেন্দ্র করে যারা বর্তমানে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করছে এবং ইনকাম করছে প্রচুর পরিমাণে অর্থ তাদের সেই কাজটাই হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। যেটাকে চাকরিও বলা চলে।
তবে আমরা অফলাইনে যে চাকরিগুলো করে থাকি সেক্ষেত্রে সাধারণত সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় এবং অন্যের প্ল্যানিং ও পরামর্শ মাফিক কাজ করতে হয় সর্বদা। যেখানে নিজের স্বাধীনতা বা নিজের ইচ্ছা বা নিজের ভালো-মন্দের কোন গুরুত্ব থাকেনা। কিন্তু অনলাইন মাধ্যমে নিজ ইচ্ছায় নিজের মর্জি মাফিক কাজ করে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমটাই বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং নামে সুপরিচিত।
যেটা মানুষকে দেয় সম্পূর্ণভাবে ফ্রিডম এবং স্মার্ট উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। আর মজার ব্যাপার হলো– একজন মানুষ ফ্রিল্যান্সিংকে পার্টটাইম চাকরি হিসেবে নিতে পারে আবার ফুলটাইম চাকরি হিসেবেও গ্রহণ করতে পারে। তাই ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে যে কোন পেশার মানুষ চাকরি করার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করার সুযোগ পায়। আর যে বা যারা এই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিযুক্ত হোন তাদেরকে সম্বোধন করা হয় ফ্রিল্যান্সারহিসেবে। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক— ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত সেই সাথে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গাইডলাইন এর এ টু জেড।
ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি
ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি? কি কাজ শিখলে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যাবে? এই সম্পর্কিত প্রশ্ন সব থেকে বেশি করে থাকেন অডিয়েন্সরা। সত্যি বলতে এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে চাইলে একটা কথাই বলতে হবে সেটা হলো — ফ্রিল্যান্সিংয়ের অন্তর্ভুক্ত কাজগুলোর মধ্যে থেকে যে কাজটিই আপনি প্রফেশনালি করতে পারবেন সেই কাজেরই চাহিদা সবথেকে বেশি। কেননা যারা প্রফেশনাল লেভেলে কাজ করে তাদের কাজের অভাব হয় না এবং তারাই সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।
কারণ মার্কেটপ্লেসের তাদের রয়েছে অধিক ডিমান্ড। কিন্তু কথা হচ্ছে– ফ্রিল্যান্সিং কাজের অন্তর্ভুক্ত বিষয় বা কার্যাবলী গুলো কি কি! মানে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে কোন কাজগুলো শিখবেন।
এর জন্য নিচের টেবিলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের নাম | ফ্রিল্যান্সিং কাজের বর্ণনা |
১. আর্টিকেল রাইটার/ফ্রিল্যান্স রাইটার | যদি বলেন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার অন্যতম সেরা এবং কিছুটা সহজ মাধ্যম কোনটি তাহলে সবার প্রথমে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজকেই সাজেস্ট করব আমরা। কেননা আপনি যদি নিজেকে একজন প্রফেশনাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে গড়তে পারেন তাহলে জোর উদ্যোগে এগিয়ে চলতে পারবেন। কারণ কনটেন্ট রাইটিং এর সাথে ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কয়েকটি কাজ জড়িয়ে আছে। যেমন– ব্লগিং, আফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রোডাক্ট মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, ইউটিউবিং, প্রোডাক্ট প্রমোট, ই বুক রাইটার, সেকশন রাইটার, কপিরাইটার, ট্রান্সলেটর, এ আই রাইটার সহ প্রভৃতি। কেননা মানসম্মত আর্টিকেল এর মাধ্যমেই অডিয়েন্সদের কাছে কোন বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়। আর তাই আপনি যদি নিজেকে একজন প্রফেশনাল রাইটার হিসেবে তৈরি করেন তাহলে রাইটিং সার্ভিস দেয়ার মাধ্যমে যেমন ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন— পাশাপাশি নিজের একটা ওয়ার্ডপ্রেস সাইট খুলেও ব্লগিং শুরু করতে পারবেন। শুধু তাই নয়– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে শুরু করে ইউটিউবে ভিডিও স্ক্রিপ্ট এবং ফেসবুকের বিভিন্ন ধরনের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন আপনি। তবে সব সময় চেষ্টা করবেন নিজের সুন্দর একটা পোর্টফলিও তৈরি করবার। কেননা ফ্রিল্যান্সিংয়ে যদি সফল হতে চান এবং অধিক বেশি কাজ পেতে চান তাহলে নিজের দারুন একটা পোর্টফোলিও থাকা অতীব জরুরী। |
২. ওয়েব ডিজাইনার/ওয়েব ডেভলপার | অনলাইন প্লাটফর্মে বর্তমানে ওয়েব ডেভলপারদের কদর অনেক। আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপিং করেন তাহলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন, ওয়েবসাইটে নতুন নতুন ডিজাইন করতে পারবেন এবং নিজ দেশ সহ বাইরের দেশের সাথে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ পাবেন। শুধু তাই নয়– আপনি যদি প্রফেশনাল পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেন তাহলে সরকারিভাবে ও কাজের অফার পাবেন। কেননা দেশে-বিদেশে সকল জায়গায় এখন ওয়েব ডেভলপারদের কদর অনেক। সেই সাথে ইনকামও মাথা নষ্ট করার মত। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ে যদি আসতে চান এবং শক্তপোক্তভাবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে ওয়েব ডেভলপার অর্থাৎ ওয়েব ডিজাইনার হিসেবেও মাঠে নামতে পারেন। |
৩. কার্টুন আর্টিস্ট ও ডিজাইনার | কার্টুন আর্টিস্ট হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। তাই কার্টুনের প্রতি যদি ভালোলাগা থেকে থাকে এবং আপনি কার্টুন আকানো থেকে শুরু করে কার্টুন ভিডিও তৈরি করতে পারেন তাহলে এই মাধ্যমেও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। এছাড়াও টি-শার্ট ডিজাইনার, ব্যানার অ্যাড ডিজাইনার, বিভিন্ন ওয়ার্ডপ্রেস সাইট ডিজাইনার বা ফটো এডিটিং থেকে শুরু করে যে কোন কাজ এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হতে পারবেন। |
৪. অ্যাপ ডেভেলপার/সফটওয়্যার ডেভলপার | সফটওয়্যার এবং অ্যাপ ডেভলপার হিসেবেও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার করা সম্ভব। এগুলোর ডিমান্ড যেমন সময়ের সাথে সাথে বেড়ে চলেছে ঠিক একইভাবে বাড়ছে প্রাইস রেট। অনেকেই বলে থাকেন ধীরে ধীরে প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে একসময় সবকিছুই আমাদের হাতের নাগালে চলে যাবে। মানুষ হারিয়ে ফেলবে সকল ধরনের পেশা। কিন্তু আপনি যদি নিজেকে একজন প্রফেশনাল অ্যাপ ডেভলপার অথবা সফটওয়্যার ডেভলপার হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে আজ থেকে ৫০ বছর পরেও আপনার অনলাইনে ইনকামের জন্য মাথা চাপরাতে হবে না। বরং আপনি বেশি মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে সক্ষম হবে এবং নিজেকে একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার অথবা প্রফেশনাল অ্যাপ ডেভলপার বা সফটওয়্যার ডেভলপার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন। |
৫. ভয়েস আর্টিস্ট | কার্টুন ভিডিও থেকে শুরু করে ইউটিউব ফেসবুকের যে কোন ভিডিওতে ভয়েজ ওভারের প্রয়োজন পড়ে। আর এই কাজগুলো ভয়েজ আর্টিস্ট দের দিয়েই করানো হয়। আপনি চাইলে সুন্দরভাবে কথা বলার মাধ্যমেও ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিযুক্ত হতে পারেন। যদি প্রফেশনাল ভয়েজঅভার বা ভয়েজ আর্টিস্ট হিসেবে নিজের একটি পোর্টফলিও তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনার চাকরির পেছনে দৌড়াতে হবে না এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হতে পারেনা। কেননা আজ থেকে ১৫,২০ বা ৫০ বছর পরেও প্রযুক্তির উন্নয়নে অন্য পেশার ওপর প্রভাব পড়লেও ভয়েজ ওভার হিসেবে আপনি কাজ করতে পারবেন সর্বদা। |
৬. ভিডিও এডিটর | ইউটিউব, ফেসবুক, instagram, twitter, এমনকি মুভি ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরীকৃত মুভিগুলো সাজানো গোছানোর জন্য প্রফেশনাল ভিডিও এডিটরের প্রয়োজন পড়ে। আর এদের কদর অনেক বেশি। তাই আপনি চাইলে নিজেকে একজন ভিডিও এডিটর হিসেবেও গড়তে পারেন এবং ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। পরবর্তীতে শুধুমাত্র ভিডিও এডিটিং এর সার্ভিস দেওয়ার পাশাপাশি নিজের একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলেও কাজ করতে পারেন আপনি। আর তাই ফ্রিল্যান্সিং কাজের সেরা মাধ্যমগুলোর মধ্যে ভিডিও এডিটিং অন্যতম একটি মাধ্যম। |
৭. গ্রাফিক্স ডিজাইনার | ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমেও আত্মপ্রকাশ এর দারুন সুযোগ রয়েছে। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার Marketing, advertising, reports, catalogs, brochures, newsletters, business cards, websites, product packaging, outdoor signage সম্পর্কিত নানা কাজ করার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে এই কাজটি করে হিউজ পরিমাণ অর্থ উপার্জন করাও সম্ভব। |
৮. ডিজিটাল মার্কেটিং | ফ্রিল্যান্সিং জগতে ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে অন্যতম একটি জনপ্রিয় কাজের মাধ্যম। ডিজিটাল মার্কেটিং অর্থাৎ Search Engine Optimization (SEO), Social Media Marketing (SMM), Content Marketing, Email Marketing, PPC (Pay Per Click), Mobile Marketing, Influencer Marketing, Affiliate Marketing, Video Marketing সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কাজ করে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা সম্ভব। |
৯. ডাটা এন্ট্রি | ডাটা এন্ট্রির কাজ বলতে আমরা অফিসে গিয়ে হিসাব নিকাশের কাজকেই বুঝে থাকি। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনি অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির কাজ করেও নিজেকে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করাতে পারেন এবং ইনকাম করতে পারেন হিউজ পরিমাণ টাকা যদি আপনি এ ব্যাপারে প্রফেশনালি সকল কাজ শিখে থাকেন। অন্য কাজ শেখার ক্ষেত্রে হয়তো আপনার youtube এবং google এর সাহায্য ছাড়াও গাইডলাইন পেতে বিভিন্ন কোর্স কেনারও প্রয়োজন পড়তে পারে। কিন্তু যদি আপনি ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে চান তাহলে youtube এ ভিডিও দেখে প্রায় সকল কাজ শিখে ফেলতে পারবেন এবং নিজেকে এক্সপার্ট হিসেবে তুলে ধরে নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ডাটা এন্ট্রির কাজেও নিযুক্ত করতে সক্ষম হবেন। |
১০. প্রোগ্রামিং এন্ড টেক প্লাস ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট | ফ্রিল্যান্সিং জগতে একটি বড় অংশ দখল করে রয়েছে প্রোগ্রামিং এর কাজগুলো। আর তাই আপনি চাইলে Web Programing, Mobile Apps Development, Game Development, Desktop Application Development, Ecommerce Development, Support and IT Cyber Security and Data Protection Data Science, Data Processing, Data Engineering NFT Development Blockchain and Cryptocurrency এই রিলেটেড কাজগুলো করার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। পাশাপাশি ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ঘরে বসেই যে কোন বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের হয়ে মোটা অ্যামাউন্টের টাকা ধার্য করার বিনিময়ে কাজ করতে পারবেন। মূলত ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজের অন্তর্ভুক্ত ক্যাটাগরি হলো – ইমেইল ম্যানেজমেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, রিসার্চ, writing, কাস্টমার সার্ভিস, মেকিং ফোন কলস, মিটিং সিডিউললিং সহ-প্রভৃতি। |
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন
ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ে মূলত কি কি কাজ করা যায় এ ব্যাপারে না হয় জানলাম। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন? আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কোনটি প্রয়োজন এ সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এই পয়েন্টটি আপনার জন্য। ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য সবার প্রথমে প্রয়োজন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা।
কেননা আপনি যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে পারবেন। অনেকেই রয়েছেন জানাব ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে পদার্পণ করেন ঠিকই কিন্তু কিছুদিন যেতেই আবার টাটা বাই বাই হয়ে যান। এর কারণ হচ্ছে ধৈর্যশক্তি না থাকা এবং ফ্রিল্যান্সিং কাজকে সম্পূর্ণভাবে না জেনে মার্কেটপ্লেসে পদার্পণ করা। আপনি যদি এই স্মার্ট মার্কেটপ্লেসে টিকে থাকতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকেও স্মার্ট হতে হবে এবং যারা এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করছেন তাদের সমান সমান হতে হবে বা তাদের থেকে বেশি জানতে হবে আপনাকে।
এর জন্য সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে নতুনত্ব জানতে হবে এবং কোন কাজ প্রফেশনাল ভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন কৌশল বা রাস্তা বেছে নিতে হবে। তবেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারবেন।
এর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য প্রয়োজন পরবে —
- ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ
- একটি মোবাইল ফোন
- একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার
- জ্ঞান ও দক্ষতা
- ধৈর্যধারণের সক্ষমতা
- সাফল্য অর্জনের প্রচেষ্টা এবং
- ইংরেজিতে ভালো জানাশোনা।
তবে হ্যাঁ, এমনটা নয় যে আপনি বাংলা জানলে ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাংলা জানার মধ্য দিয়ে আপনি দেশের ভেতরে মোটামুটি ভালই কাজ করতে পারবেন। তবে যদি আপনি দেশের বাইরে কাজ করতে চান বাইরের দেশের ক্লায়েন্টদের সাথে কথা বলতে চান এবং
কোন প্রজেক্ট ডিল করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি জানতে হবে। তাছাড়াও লেখালেখির ক্ষেত্রে অর্থাৎ কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রেও ইংরেজির প্রয়োজন পড়ে। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার জন্য ইংরেজি স্কিল এর কদর অনেকটাই বেশি।
সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ
ফ্রিল্যান্সিং জগতে বর্তমানের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে–
- গ্রাফিক্স ডিজাইনিং
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- ওয়েব ডিজাইন
- ডাটা এনালাইসিস
- কাস্টমার সাপোর্ট
- Sanscription translation সহ প্রভৃতি।
তবে আপনি আমাদের উল্লেখিত কাজগুলোর মধ্যে থেকে আপনার পছন্দের কাজটি নির্বাচন করবেন। কেননা এতে করে আপনি খুব দ্রুত ওই কাজটি শিখে ফেলতে পারবেন এবং যদি প্রফেশনালি কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার বাছাইকৃত কাজের মাধ্যমেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবেন।
ফ্রিল্যান্সিং জব ক্যাটাগরি
অনেকেই জানতে চান ফ্রিল্যান্সিং জব ক্যাটাগরি গুলো। আমরা মূলত ইতিমধ্যে যে কাজগুলো উল্লেখ করেছি এগুলোই ফ্রিল্যান্সিং জব ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত।
তবে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় জব ক্যাটাগরি হিসেবে মানুষদের কাছে সুপরিচিত–
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ডাটা এন্ট্রি এবং এক্সেল
- কনটেন্ট রাইটিং
- মার্কেটিং
- ওয়েব, অ্যাপ, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট।
এবার আসুন জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কয়েকটি বিষয় জানা দরকার।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কয়টি বিষয় দরকার
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি কি প্রয়োজন সেটা আমরা ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি। কিন্তু আলোচনার এ পর্যায়ে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কয়েকটি বিষয় দরকার সেটা জানাবো। যথা:-
- জ্ঞান ও দক্ষতা
- চালাক চতুর
- ধৈর্য ও ইচ্ছা শক্তি
জ্ঞান এবং দক্ষতা সেই সাথে ধৈর্য ও ইচ্ছা শক্তির প্রয়োজন রয়েছে এটা আপনিও বুঝতে পারছেন। কিন্তু চালাক চতুর এই পয়েন্টটি দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন যে কেন এই কথাটা বলা হচ্ছে? আসলে এই মার্কেটপ্লেসে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা ভন্ড। আর আপনার সরলতার সুযোগ নিয়ে খুব সহজেই আপনাকে ঠকাতে পারেন। তাই সবসময় চালাক চতুর অর্থাৎ চোখ কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে এবং নিজেকে স্মার্ট ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
কোন বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো
যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত তারা মূলত সচরাচর এ প্রশ্নটি গুগলে সার্চ করে থাকেন যে–কোন বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখব? এ ব্যাপারে আমরা বলব যে বিষয়টি আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে অর্থাৎ আপনার পছন্দের, আপনি খুব ভালোভাবে শিখতে পারবেন যে কাজটি শিখতে আপনার আনন্দবোধ হবে মূলত ওই বিষয়েই ফ্রিল্যান্সিং শিখুন। কেননা এতে করে আপনি দ্রুত ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিজের দারুন একটি ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজ নতুনদের জন্য সহজ
শুরুর দিকে সকল কাজেই কঠিন মনে হয়। তাই কোন কাজই সহজ নয় আবার কোন কাজই কঠিন নয়। তাই ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কাজটি নতুনদের জন্য সহজ এ প্রশ্নের একটি সুনির্দিষ্ট উত্তর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর জন্য আপনাকে প্রথমত এনালাইসিস করতে হবে, জানতে হবে, পড়তে হবে, শিখতে হবে। অতঃপর ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কাজটি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো সেটা আপনি নিজেই নির্বাচন করতে পারবেন।
সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায়
খুবই কমন একটা প্রশ্ন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায় কি? এ নিয়ে আলোচনা করলে অনেক পৃষ্ঠাই লেখা যাবে। তবে এক কথায় সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতাকে ইমপ্রুভ করা এবং সময়ের সাথে সাথে নিজেকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলা। কেননা আপনি যদি নিজের দক্ষতা অর্থাৎ স্কিল ডেভেলপ করেন, আপনার যদি যোগ্যতা থেকে থাকে এবং আপনি প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে নিজের জ্ঞান কলাকৌশল এবং কাজের ধরনের উন্নতি ঘটান তাহলে খুব দ্রুত এবং অনেক সহজেই সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে সহজ কাজ: ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে সহজ কাজ বলতে আমরা আমাদের সাজেস্টকৃত সকল কাজকেই উল্লেখ করবো। কেননা আপনি অল্প অল্প করে শেখার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ের অন্তর্ভুক্ত কাজগুলোকে নিজের আয়ত্ত নিতে পারবেন এবং ওই কাজগুলো করার মাধ্যমে ইনকাম করতে সক্ষম হবেন হিউজ পরিমাণ টাকা।
সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ: ইতোমধ্যে যারা সফল ফ্রিল্যান্সার হয়েছেন তাদের দিকে নজর রাখলে মূলত সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ হিসেবে যেগুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেগুলো হলো–
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- কনটেন্ট রাইটিং
- অ্যাপ ওয়েব সফটওয়্যার ডেভোলপ।
ফ্রিল্যান্সিং এর উপকারিতা
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা হলো। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর উপকারিতা কি? এই প্রশ্ন ও নিশ্চয়ই কখনো না কখনো আপনার মনেও জেগেছে এবং আপনি এর সমাধানও জানতে চান! সত্যি বলতে ফ্রিল্যান্সিং এর উপকারিতা অনেক যেটা বলে বোঝানোর মত নয়। কারণ ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে মানুষ সাবলম্বী হতে পারে এবং একটা সরকারি চাকরি করে যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব তার থেকে অধিক বেশি টাকা উপার্জন করা সম্ভব হয় এই ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে।
পাশাপাশি নিজের ইচ্ছামতো কাজ করা যায়। হ্যাঁ প্রজেক্ট বেসিসে কাজ করার জন্য একটা সুনির্দিষ্ট সময় থাকে এবং ওই সময়ের মধ্যে কাজ ডেলিভারি করতে হয় ঠিকই, কিন্তু সরকারি চাকরিজীবীদের মতো আপনার হুকুম মানতে হয় না সব সময় এবং নির্দিষ্ট সময়সীমা ফলো করেও কাজ করতে হয় না। আপনি মূলত একটা প্রজেক্ট সম্পন্ন করার জন্য যদি একমাস সময় নিয়ে থাকেন তাহলে রাত দিন মিলে যে কোন সময় কাজ করার সুযোগটি ভোগ করতে পারেন এবং বাড়িতে বসে নিজের ইচ্ছে মত নিজের পছন্দের জায়গায় থেকে কাজ করতে পারেন।
এক কথায় ফ্রিল্যান্সিং এর উপকারিতা অনেক এটা যেমন স্বাধীনতা দেয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয় ঠিক একইভাবে প্রচুর অর্থ উপার্জনের সুযোগও প্রদান করে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং পেশা চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ যেহেতু যেকোনো সময় করা যায় তাই ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে চাকরির পাশাপাশিও আপনি নিতে পারেন। যেমন ধরুন ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করবেন।
তাই অফিস শেষে যখন বাড়িতে বসে থাকবেন সে সময় অবসর সময়টাকে কাজে লাগানোর জন্য আপনি চাইলেই চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করতেই পারেন। এবার আসুন জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং এর এ টু জেড শিখতে মোট কত টাকা খরচ করতে পারে। মানে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কত টাকার প্রয়োজন!
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে: ফ্রিল্যান্সিংয়ের উল্লেখিত কাজগুলো যদি আপনি এনালাইসিস করার মাধ্যমে গুগল এবং ইউটিউব এর সাহায্য নিয়ে শিখে ফেলতে পারেন তাহলে আপনার এমবি খরচ ছাড়া আর এক টাকাও খরচ করতে হবে না। তবে যদি আপনি বিভিন্ন কোর্সের সহযোগিতা নেন সে ক্ষেত্রে কিছু টাকা খরচ করতে হবে। এটা মূলত সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। কেননা কিছু কোর্স দেড়শ টাকাতেও পাওয়া যায় আবার কিছু কোর্স কিনতে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকাও খরচ করার প্রয়োজন পড়ে। এটা মূলত ওই কোর্সের ওপর নির্ভর করছে।