বরিশালে মাদক মামলার এক আসামিকে ভিন্ন রকমের শর্তে মুক্তি দিয়েছে আদালত। ৬ বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামি মেহেদি হাসানকে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান মুক্তি দিয়েছেb। এসময় তাকে অসুস্থ মায়ের সেবা করা, ১০০টি গাছ রোপণ এবং পুনরায় একই অপরাধ না করার শর্তে মুক্তি দেয়। সাজাপ্রাপ্ত মেহেদি বরিশাল নগরের ২১নং ওয়ার্ড এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর গ্রামের আলাউদ্দিন খানের ছেলে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু মামলার বরাত দিয়ে জানান, বিচারক প্রবেশন আইনের ৫ ধারায় তিন শর্তে দণ্ডিত আসামিকে মুক্তি দিয়েছেন। শর্ত তিনটি হলো- অসুস্থ মায়ের সেবা করবেন, ১০০টি ঔষধি, ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করবেন এবং দ্বিতীয়বার একই অপরাধে জড়াবেন না।
আগামী দুই বছর তার সব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করবেন বরিশাল সমাজসেবা অধিদফতরের জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ । শর্তের কোনও ব্যত্যয় ঘটলে আবার ঘোষিত দণ্ড কার্যকর করা হবে।
জানা গেছে, ২০২১ সালে ২৩ অক্টোবর বরিশাল নগরের ২২নং ওয়ার্ডের ঈদগাহ লেনের মেহেদি হাসানের ভাড়া বাসার কক্ষ থেকে ১৫ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই সুজিত গোমস্তা বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার অপর আসামি হলেন নগরের করিম কুটির এলাকার নেহার মঞ্জিলের ভাড়াটিয়া আবুল খায়েরের ছেলে রুবেল হাওলাদার।
আইনজীবী ওবায়দুল্লাহ সাজু জানান, আদালত চার্জ গঠনের সময় রুবেলকে বাদ দিয়ে একমাত্র বাবুর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন। কোনও ধরনের সাক্ষ্যগ্রহণ ছাড়া আসামি দোষ স্বীকার করায় এই রায় দেন।
জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, মেহেদি হাসান বাবুর ওপর তার পরিবার নির্ভরশীল। প্রথমবারের মতো এ ধরনের অপরাধে জড়িয়েছেন। তাই তাকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছ। সে অনুযায়ী আগামী ২ বছর বিচার আদালতের ভৌগলিক এলাকাত্যাগ করতে পারবেন না। এ সময়ের মধ্যে একই অপরাধে লিপ্ত হবেন না। সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন। ঔষধি, ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ ও পরিচর্যা করবেন। নিয়মিত মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। আইন মান্যকারী পরিশ্রমী ও সু-নাগরিক হিসেবে বসবাস করবে।
আসামি মেহেদী হাসান বলেন, গ্রেপ্তারের পর থেকেই আমি আমার দোষ স্বীকার করেছি। বিজ্ঞ আদালতেও আমি আমার দায় স্বীকার করেছি। এজন্য এই মামলার কোন সাক্ষীর দরকার হয়নি। ওই ঘটনাটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় একটি ভুল ছিল। তবে আদালত আমার ওপরে সদয় হয়েছেন। আদালত যে সুযোগ আমাকে দিয়েছেন, সেই শর্তগুলো আমি পুঙ্খানুপুঙ্খ পালন করব। আমি একজন ভালো মানুষ হয়ে বাঁচব।