মৌসুমী-সানী-জায়েদ বিতর্কের মাঝেই অমিত হাসানের ‘রহস্যময়’ স্ট্যাটাস

অভিনেতা ডিপজলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান চিত্রনায়ক ওমর সানী ও জায়েদ খান। অভিনেত্রী ও স্ত্রী মৌসুমীকে বিরক্ত করায় জায়েদকে চড় মারেন ওমর সানী। ঘটনার এক পর্যায়ে কোমরে থাকা পিস্তল বের করে ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি দেয় জায়েদ। গত শনিবার রাতে এ খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনার একদিন পর জায়েদের বিরুদ্ধে ওমর সানী সংসার ভাঙার চেষ্টার অভিযোগ তুলে শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন। ওই লিখিত অভিযোগে জায়েদ চার মাস ধরে তাদের সংসার ভাঙার চেষ্টা করছেন সে কথা উল্লেখ করেছেন ওমর সানী। এসব নিয়েই দুই দিন ধরে দেশের শোবিজপাড়া উত্তপ্ত। চড় মারার যুক্তি দেখিয়ে ওমর সানী বলেছিলেন, জায়েদ অনেক দিন ধরেই বেয়াদবি করে আসছিল। ওকে আমি সরাসরি পাচ্ছিলাম না। জানতাম বিয়েতে আসবে। ওকে কথায় কথায় চড় দিই। তখন জায়েদ পিস্তল উঠিয়ে গুলি করতে চায়।

সানী আরও বলেন, জায়েদ খান তো সব সময় পিস্তল নিয়ে ঘোরে। ক্ষমতা দেখায়। ইন্ডাস্ট্রিতে ওর অত্যাচার সহ্য করতে করতে অনেকেই বিরক্ত। কেউ হয়তো মুখ ফুটে বলে না মান-সম্মান হারানোর ভয়ে। আমি ভাবলাম, আর দেরি নয়, এখনই শুরু করতে হবে। তাই চড়টা দিয়েই শুরু করলাম। আমি চড় মেরেই বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে যাই।

তবে ওমর সানীর এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন স্ত্রী মৌসুমী। মৌসুমী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন জায়েদ খান তাকে ডিস্টার্ব তো নয়ই, উল্টো সম্মান করেন। আর তিনিও জায়েদকে স্নেহ করেন। কিন্তু মৌসুমীর এই বক্তব্যকে কার্যত নাকচ করে দিয়ে ওমর সানী ফেসবুক লাইভে এসে তার বক্তব্যে অটল থাকার কথা জানান। অর্থাৎ জায়েদ যে মৌসুমীকে ডিস্টার্ব করেন সে কথাতেই অটল থাকেন। একই সঙ্গে এ-ও বলেন যে তার ছেলের কাছে ব্যাপক প্রমাণ রয়েছে জায়েদের ডিস্টার্ব করার বিষয়ে।

এরপর মৌসুমী ও ওমর সানীর ছেলে ফারদীন গণমাধ্যমকে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্য খুবই কৌশলী হলেও সানীর অভিযোগকেই মান্যতা দেয়। অর্থাৎ মা মৌসুমীর বিপরীতে চলে যায়। ঠিক এসব নিয়েই যখন শোরগোল শোবিজপাড়া তখন ওমর সানীকে মাথা ঠাণ্ডা রাখার পরামর্শ দিলেন ঢাকাই ছবির আলোচিত-সমালোচিত প্রযোজক জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ।

জায়েদ খানকে ঘিরে একই ছাদের তলার দুই বাসিন্দা ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে চলচ্চিত্রের মানুষেরা যখন বিরক্ত ও বিব্রত, তখন ফেসবুকে রহস্যময় এক স্ট্যাটাস দিলেন আরেক জনপ্রিয় তারকা অমিত হাসান। ওমর সানী ও মৌসুমীর সময়ে যিনি রূপালি পর্দায় নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন।

যদিও স্ট্যাটাসে সানী, মৌসুমী বা অন্যকারো নাম উল্লেখ করেননি অমিত। তবে তার স্ট্যাটাসের বক্তব্য যেন চলমান সেই ঘটনার দুই চরিত্রকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত ১৪ জুন অমিত হাসান নিজের ফেসবুক পেজে সেই স্ট্যাটাসটি দেন। পরে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টের পোস্টটি শেয়ারও করেন।

অমিত লিখেছেন, ‘তাকিয়ে রইলাম একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের বিরতিহীন অধঃপতন দেখে। অস্পষ্ট কুয়াশায় ঢেকে গেল। কষ্টে গড়া সম্মান দুমড়েমুচড়ে পড়লো পদতলে।’ প্রশ্ন উঠেছে কার অধঃপতনের কথা বলেছেন ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় অভিনেতা? অমিত মুখ না খুললেও কমেন্টে অনেকেই নিজে থেকে ওমর সানী ও মৌসুমী প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। অনেকে আবার মধ্যস্ততা করে ঝগড়া মিটিয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন অমিতকে।

সানি-মৌসুমী দম্পতির সঙ্গে অমিত হাসানের পারিবারিক বন্ধুত্বের সঙ্গে। দীর্ঘদিন তারা একসঙ্গে সিনেমায় কাজও করেছেন। অনেক সিনেমায় মৌসুমীর নায়ক হয়েছেন অমিত হাসান। শিল্পী সমিতির রাজনীতিতেও তারা ছিলেন একই মতাদর্শের। তবে সর্বশেষ নির্বাচনে মৌসুমী ও অমিত ভিন্ন দুটি প্যানেলে নির্বাচন করেন। দুজনেই জয়ী হন।

About admin

Check Also

ভারত থেকে খুনি এনে হত্যা করা হয়েছে সালমান শাহকে: মা নীলা চৌধুরী

ঢাকাই চলচ্চিত্রের ক্ষণজন্মা এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম সালমান শাহ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর না ফেরার …