চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হ’ত্যা মা’মলার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সা’ক্ষী জ’বানব’ন্দিতে বলেছে, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাইয়ের একটি ঘ’টনা থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই, আজিজের আত্মীয় বান্টি ইসলাম, বান্টির বন্ধু আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে সোহেলের বি’রোধের শুরু। এর জেরেই ট্রাম্প ক্লাবের সামনে ভাড়াটে লোক দিয়ে হ’ত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। জ’বানবন্দিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যার বিবরণ দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।সাক্ষীরা বলেছেন, ওই দিন রাতে বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে গান বন্ধ করতে বলেছিলেন সোহেল ও তাঁর বন্ধুরা। গান বন্ধ করা নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেলের কথা-কা’টাকা’টি হয়। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী আজিজের ওপর ক্ষে’পে যান। তখন সোহেলের বন্ধু কালা
নাসির আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গু’লি করতে যান। এ সময় ক্লাবের বাথরুমে ঢুকে আ’ত্মর’ক্ষা করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। এই ট্রাম্প ক্লাবের মালিকানা ছিল বান্টি ও আশীষের। বি’রোধের শুরু এখান থেকেই।ট্রাম্প ক্লাবের কার্যক্রম চলত বনানীর আবেদিন টাওয়ারের সপ্তম তলায়। ক্লাবের পশ্চিম পাশে ছিল একটি জামে মসজিদ। জ’বানব’ন্দিতে একাধিক সাক্ষী বলেছেন, ওই ক্লাবে নাচ-গানসহ অ’সামাজিক কার্যক্রম চলত। ক্লাবের অ’সামাজিক কা’র্যক’লাপ ব’ন্ধে স্থানীয় মুসল্লিদের
পক্ষে অবস্থান নেন সোহেল চৌধুরী। অ’ভিযো’গপত্রে বলা হয়, সোহেল চৌধুরী মসজিদ কমিটির লোকজন নিয়ে ক্লাব বন্ধ করার চেষ্টা করে ব্য’র্থ হন। এ নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝামেলা হয়। ট্রাম্প ক্লাবের কাজ ব্যা’হত হলে সোহেল চৌধুরীকে দেখে নেওয়ার হু’মকি দেন আসামিরা।২৪ জুলাইয়ের পার্টিতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝা’মেলার পর থেকে তাঁর ওপর ট্রাম্প ক্লাবে ঢোকায় অ’লিখিত নি’ষেধা’জ্ঞা আসে। সেটি ক্লাবের
কর্মচারীরাও পু’লিশকে তখন জানিয়েছিলেন। সোহেল চৌধুরীর মা নূরজাহান বে’গম আদালতকে বলেছিলেন, বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে অ’সামাজিক কার্যকলাপ হতো। ক্লাবের পাশের মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিরা এর প্র’তিবা’দ করেছিলেন।আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও সোহেল চৌধুরীর মধ্যে যে গন্ডগোল হয়েছিল, সেই ঘ’টনার প্রত্যক্ষদর্শী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মির্জা মাহাফুজ আদালত ও পুলিশের কাছে জ’বানব’ন্দি দিয়েছিলেন। ১৬১ ধারার জ’বানব’ন্দিতে তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালের
২৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবে যান তিনি। তখন ক্লাবে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ তাঁর স্ত্রীকে গান গাইতে বলেন। অন্যদিকে সোহেল চৌধুরী ও তাঁর কয়েক বন্ধু গান থা’মাতে বলেন। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী ও তাঁর দলের লোকজন মাহাফুজের টেবিলের সামনে আসেন। তখন তাঁরা আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পাশে বসা এক নারীকে উঠে আসতে বলেন। ওই নারী না উঠলে সোহেল চৌধুরী আরও ক্ষি’প্ত হয়ে মা’রতে যান।মা’মলার
আরেক সা’ক্ষী গোলাম মোহাম্মদ। তিনি সোহেলের বন্ধু। সা’ক্ষী হিসেবে তিনি তখন ১৬৪ ধারায় জ’বানব’ন্দিতে বি’চারককে বলেছিলেন, খু’ন হওয়ার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝগড়া হয়। বিষয়টি তাঁর সামনে ঘ’টেছে। এ ছাড়া ট্রাম্প ক্লাবের বান্টি ইসলামের সঙ্গে সোহেলের দুই থেকে তিনবার ঝ’গড়া হয়। পরে তা মি’টেও যায়। তবে আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতলের সঙ্গে কথা-কা’টাকা’টি ও হা’তাহা’তি হয়। আশীষ চৌধুরীই সোহেল চৌধুরীকে ক্লাব থেকে বের
করে দেন। ভবিষ্যতে সোহেলকে ক্লাবে না আসার জন্য হু’মকিও দেন। খুনের ১৫ দিন আগে টেলিফোনে হু’মকি সোহেল চৌধুরী হত্যা নিয়ে তাঁর মা নূর জাহান বেগম আ’দালতকে বলেন, তাঁদের বাসার উল্টো দিকে ট্রাম্প ক্লাব। হ’ত্যাকা’ণ্ডের দিন রাত দুইটায় সোহেল বাসায় ফেরেন। ক্লাবের সামনে জামে মসজিদ। পরে সোহেল আবার ক্লাবে গেলে সন্ত্রাসীরা তাঁকে দুটি গুলি করলে তিনি মাটিতে লু’টিয়ে পড়েন। সোহেল চৌধুরীর মা আ’দালতকে আরও বলেছিলেন, সোহেল খু’ন হওয়ার ১৫
থেকে ২০ দিন আগে টেলিফোনে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও বান্টি ইসলামের লোকজন হ’ত্যার হু’মকি দিয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, সোহেলের মৃ’ত্যুর দিন ঘ’নিয়ে আসছে।যেভাবে হ’ত্যা সোহেল চৌধুরীকে কীভাবে গু’লি করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে অ’ভিযো’গপত্রে বলা হয়, সেদিন সোহেল চৌধুরী ক্লাবে ঢুকতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁকে ক্লাবে ঢোকার অনুমতি না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে রাত তিনটার দিকে সোহেল চৌধুরী আবার ক্লাবের সামনে আসেন। তখন পেশাদার খু’নিদের
দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হ’ত্যা করা হয়। মা’মলার সাক্ষী আবুল কালাম পু’লিশের কাছে দেওয়া জ’বানব’ন্দিতে বলেন, সেদিন সোহেলসহ সাত থেকে আটজন লোক ক্লাবের সামনে গেলে হ’ঠাৎ গু’লি করা হয়। তাঁর পেটে গু’লি লাগে। তিনি অ’জ্ঞান হয়ে পড়ে যান। স’ন্ত্রাসীদের গু’লিতে আরও গু’লিবিদ্ধ হন নীরব ও দাইয়ান। আর সোহেল গু’লিবি’দ্ধ হয়ে মা’রা যান। গুলি করার পর ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক গাড়িতে করে পা’লিয়ে যান। সোহেলের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ
ভাই, বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর আগের ঝ’গড়ার জে’রে তাঁকে ঠান্ডা মাথায় ভা’ড়াটে খু’নি দিয়ে এ হ’ত্যাকা’ণ্ড ঘ’টানো হয়।