ইডেন কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন বৈশাখী

রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি ও ছাত্রীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যর ব্যাখ্যা দিয়েছেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) সামিয়া আক্তার বৈশাখী। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের এ নেত্রী।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্য সংশোধন করার অনুরোধ জানিয়ে সামিয়া লেখেন, ‘আমি সামিয়া আক্তার বৈশাখী, ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ইডেন কলেজের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে গণমাধ্যমে আমার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের থেকে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগ আমি উল্লেখ করি, কিন্তু সেগুলো আমার বক্তব্য হিসেবে গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এসব বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত কোনো বক্তব্য নয়। সেকারণে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্য সংশোধন করার অনুরোধ করছি।’

এ নেত্রী নিজ বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, ‘একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি ও ক্ষমাপ্রার্থনা করছি৷’

এছাড়া রোববার সন্ধ্যায় কলেজ প্রশাসনের গঠিত চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির কাছে দুই পৃষ্ঠার লিখিত ব্যাখ্যা দেন তিনি। লিখিত বৈশাখী বলেন, ‘গত ২৪ তারিখ কলেজে উদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে আমার একটি বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। মূলত সেখানে উল্লেখিত বিষয় আমার নিজের বক্তব্য নয়। সন্ধ্যার পর বহু ছাত্রী ঘটনাস্থলে যায় ও হট্টগোল সৃষ্টি করে। সেখানে একাধিক ছাত্রী চিৎকার করে এইসব বিষয়ে কথা বলে- যা আমার দৃষ্টিগোচর হয়। পরে রাগান্বিত অবস্থায় যখন মিডিয়া আমার কাছে এসব নিয়ে বক্তব্য জানতে চায়, তখন আমি এসব বিষয়ে ছাত্রীরা অভিযোগ করছে বলে উল্লেখ করি। কিন্তু মিডিয়াতে আমার আংশিক বক্তব্য প্রচার করা হয়।’

উল্লেখ্য, এরআগে সামিয়া তার এক বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘বৈধ রুমের মেয়েরা উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর করার সময় সভাপতির অনুসারীরা তাদের ছবি তুলে রাখেন। সেখান থেকে কোন মেয়েটা সুন্দর তা নির্বাচন করে রাখা হয়। তারপর সেই মেয়েদেরকে রুমে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়। খারাপ উদ্দেশ্যে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দেয়া হয়। কিছুদিন আগে একজন মেয়ে কান্না করতে করতে এ বিষয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।’

ঢাবির হলে এসি-ফ্রিজ নিয়ে থাকেন চাকরিজীবী ছাত্রলীগ নেতা!: এস এম রিয়াদ হাসান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে তবুও তিনি থাকছেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ৩১৩ নম্বর কক্ষে। তবে সেখানেও রয়েছে বিলাসী জীবন। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই আরাম-আয়েশে থাকতে তার কক্ষটিতে তিনি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগিয়ে নিয়েছেন; আছে রেফ্রিজারেটরও। যদিও আবাসিক হলে এমন বিলাসী সেবা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেব কর্মরত আছেন। তিনি ত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাধে সরকারি চাকরিজীবী হয়েও পদন্নোতি পেয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপসাহিত্য সম্পাদক এস এম রিয়াদ হাসান।

জহুরুল হক হলের একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, হলে প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় রিয়াদ নির্বিঘ্নেই আছেন। ছাত্রলীগ সভাপতির ঘনিষ্ঠ এই নেতার আড়ম্বরভাবে হলে থাকার বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’।নাহিয়ান খানের ঘনিষ্ঠ নেতারা বলছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও রিয়াদ দু’জনের বাড়িই বরিশালে। সেই সূত্রে তাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।

২০১৯ সালে আল নাহিয়ান জয় কেন্দ্রীয় সভাপতি হওয়ার পর সক্রিয় হয়ে ওঠেন রিয়াদ। এরপরই সহসভাপতির পদ পেয়েছেন। করোনাকালে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর হলে থাকার সুযোগ ছিল না, তখনো রিয়াদ অবৈধভাবে হলে থেকেছেন। সেসময় কঠোর বিধিনিষেধ ভেঙে ক্যাম্পাসে তার জন্মদিনও পালন করা হয়েছে।

হলের প্রাধ্যক্ষ আবদুর রহিম বলেন, ‘হলের কক্ষে রেফ্রিজারেটরসহ কোনো অছাত্রের থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। হলের কক্ষে রেফ্রিজারেটর ব্যবহারের সুযোগ নেই। অছাত্র হয়ে কেউ হলে থেকে থাকলে বিষয়টি খুবই খারাপ। এ ব্যাপারে আমি খোঁজ নিচ্ছি।’

অবৈধভাবে হলে থাকা, সরকারি চাকরিজীবী হয়েও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার বিষয়ে জানতে গতকাল একাধিকবার রিয়াদের মুঠোফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। শুক্রবার কল করা হলে রিং হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।

ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিয়ান খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যখন তাকে পদ দেয়া হয়, তখন তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেননি। ৩১ জুলাই তাকে পদ দেয়া হয়েছে। আর সে (রিয়াদ) চাকরি পেয়েছে ১ আগস্ট। যেহেতু এখন তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাই তার পদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে শূন্য হয়ে গেছে।’

About admin

Check Also

মেয়ের সঙ্গে ঈদ করা হলো না বাবার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আবু জাহের। দীর্ঘ চার বছর পর বিদেশ থেকে দেশের মাটিতে ফিরেছেন। দেশে …