দলটাকে বাঁচান, টাকা পয়সার লেনদেন বন্ধ করেন: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনারা দলটাকে বাঁচান। টাকাপয়সার লেনদেন- এগুলো বন্ধ করুন। কমিটি করতে টাকা লাগবে, এটা বিএনপির হতে পারে, আওয়ামী লীগ এ চর্চা করতে পারে না। টাকাপয়সা নিয়ে মনোনয়ন- এ চর্চা চিরতরে বন্ধ করতে হবে। এটা শেখ হাসিনার নির্দেশ।’ আজ বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের খিলগাঁও থানা এবং ১, ২, ৩ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এছাড়া এ সময় আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে গিবত বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।ওবায়দুল কাদের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা জানি, আপনারা কিছু কষ্টে আছেন। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, জ্বালানির দাম বেড়েছে, মানুষের কষ্টও বেড়েছে। গরিব মানুষের কষ্ট, নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট, আমরা বুঝি, শেখ হাসিনা বোঝেন। তার (প্রধানমন্ত্রীর) রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায় আপনাদের কষ্টের কথা ভেবে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তিনি দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, টাকাপয়সার লোভ দলীয় সভাপতির নেই। বঙ্গবন্ধু পরিবারের নেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সততা-সাহস থেকে শিক্ষা নিতে হবে।তিনি আরও বলেন, ‘জনগণকে বলি, একটু ধৈর্য ধরুন। আপনারা কষ্টে থাকলে শেখ হাসিনার ঘুম হয় না। আপনারা দোয়া করবেন, তিনি যেন সুস্থ থাকেন।’সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

ব্যবসার পরিবেশ দিয়েছি, আপনারা দেশের কথা ভাবুন: প্রধানমন্ত্রী

ব্যবসায়ীদের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাদের দেশ ও মানুষের কথা ভাবতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৬ অক্টোবর) গণভবনে ভোগ্যপণ্য আমদানি ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমাদের ব্যবসায়ীরা যে দলেরই হোক আমরা কিন্তু ওখানে দল দেখতে যাইনি। যে দলেরই হোক যাতে তারা ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যবসা করতে পারেন, সেই পরিবেশটা কিন্তু আমি সৃষ্টি করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, এখানে কোনো হাওয়া ভবনও নেই, আর পিএমও’তে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) কোনো উন্নয়ন উইংও নেই যে হাওয়া ভবনে এক ভাগ দিতে হবে, উন্নয়ন ভবনে এক ভাগ দিতে হবে বা অমুক জায়গায় দিতে হবে। এই যন্ত্রণায় তো আপনাদের ভুগতে হয় না এখন। এটা তো আপনারা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন। সেই যন্ত্রণা থেকে তো সবাই মুক্ত।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন প্রফিটের (লাভ) ব্যাপারে চিন্তা করেন। আগে তো একটা বড় অংশ হাওয়া হয়ে যেতো। এখন আর সেই হাওয়া হওয়ার ব্যবস্থা নেই। সেখান থেকে সবাইকে মুক্ত রেখেছি।

তিনি বলেন, এতদিন, এই ১৪ বছর একটানা ধারাবাহিকভাবে আপনারা লাভজনক ব্যবসা করে গেছেন, আমরা কিন্তু করোনার সময়ও সেটা মোকাবিলা করলাম। প্রণোদনা দিলাম, বিশেষ প্রণোদনা, আমার কাছে কেউ এসে দাবি করেননি। কেউ বলেওনি। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার একটা টিম খুব ভালো কাজ করছিল যে, কোথায় কী করা যেতে পারে। আমার অর্থনীতির চাকাটা চলমান রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো- তাদের ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ, তাদের সব কর্মকাণ্ড বন্ধ, সবকিছু। আমরা বলেছি আমরা এখানে বন্ধ হতে দেবো না। আমার এখানে চালু করে রাখতে হবে। শ্রমিকদের বেতন, এই যে গার্মেন্টস, তার বেতন তো আমি দিয়ে দিলাম সব। প্রণোদনা প্যাকেজ করলাম, বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।