নোয়াখালীর নারায়ণপুর এলাকায় তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) নামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গৃহশিক্ষকের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণের পর তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে। আজ শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম এ সব তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, এই ঘটনার পর পরই পুলিশের একাধিক সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এছাড়া রাতেই সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে আব্দুর রহিম রনি (২৫) নামে ওই ছাত্রীর সাবেক এক গৃহশিক্ষকের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। পূর্ব আক্রোশের জেরেই রনি ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই ঘরের আলমারির জিনিসপত্র তছনছ করা হয় এবং তাকে হত্যা করে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, যে কক্ষে অদিতাকে হত্যা করা হয়, সে কক্ষের টয়লেটের পানির টেপ ছেড়ে দেওয়া হয়, টেলিভিশনের সাউন্ড হাই করে দেওয়া হয়। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি অদিতাদের রান্না ঘর থেকে নেওয়া।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ওই গৃহশিক্ষক তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার পর এক বছর আগেই তাকে প্রাইভেট শিক্ষক থেকে বাদ দেওয়া হয়। এর পর থেকে রনির ক্রোধ আরো বেড়ে যায়। ফলে তার উপর প্রতিশোধ নিতেই সে নিজে আরো কয়েকজনকে নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়। পরবর্তীতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে করা হয়। নিহত তাসনিয়া হোসেন অদিতা ওই এলাকার মৃত রিয়াজ হোসেন সরকারের মেয়ে। সে নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের মা রাজিয়া সুলতানা রাতেই অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই ছাত্রীর সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনিসহ চারজনকে আটক করে।
নিহত অদিতার মা রাজিয়া সুলতানা জানান, তিনি একটি বেসরকারী স্কুলে শিক্ষকতা করেন। গত ১০ বছর আগে তার স্বামী দক্ষিণ আফ্রিকায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। দু সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান প্রতিবন্ধি সে ঢাকায় পড়ালেখা করে। পিতৃহীন দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি স্কুলে চাকুরি করে তার সংসার চালান। প্রতিদিনের মতো সকাল ৮টায় বের হয়ে স্কুলে পাঠদানের পাশাপাশি প্রাইভেট পড়ান তিনি। ফলে সন্ধ্যা হয়ে যায় বাসায় ফিরতে।
বৃহস্পতিবারও সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন তিনি। ফিরে এসে ঘরের মূল দরজায় তালা দেখতে পান। তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে সামনের কক্ষের আলমারিতে থাকা জিনিস-পত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পেলেও অদিতাকে দেখেন নি। কিছুক্ষণ পর ঘরের ভেতরের একটি কক্ষ লাগানো দেখতে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় অদিতার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online