কনটেইনার ডিপোর মালিক বললেন ‘আমার সব শেষ’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন অন্তত চার শতাধিক মানুষ। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২১ ঘণ্টা পার হলেও এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। এখনো ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। এ অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিকপক্ষ।

আজ রবিবার (৫ জুন) বিকালে বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক মজিবুর রহমান বলেন, ‘ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে আমার ক্ষতি হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আমার সব শেষ। তবে আমি আহত ও নিহতদের পরিবারের পাশে আছি।’ বিএম কনটেইনার ডিপো চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন। স্মার্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএম এবং কনটেইনার ডিপোর পরিচালক মজিবুর রহমান। অবশ্য কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে রবিবার বিকাল পর্যন্ত ডিপোর মালিক বা কোনও কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যাননি। মালিকপক্ষের কেউ না থাকায় কনটেইনার ডিপোতে কী ধরনের কেমিক্যাল ছিল, তা জানতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

এসময় অগ্নিকান্ডের সুত্রপাতের বিষয়ে মজিবুর রহমান বলেন, ‘কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে কনটেইনার থেকেই আগুন ধরেছে বলে ধারণা করছি। নৈতিকতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হতাহতদের পাশে থাকবো। আহতরা যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার আমরা বহন করবো। দুর্ঘটনায় যারাই হতাহত হয়েছে তাদের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি হতাহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া হবে। প্রশাসন যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে সেভাবে সহায়তা করা হবে।’ ‘ডিপোতে শতাধিক শ্রমিক ও কর্মকর্তা ছিলেন’ উল্লেখ করে মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনও তথ্য গোপন করিনি। ডিপোতে শতাধিক শ্রমিক ও কর্মকর্তা ছিলেন। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল ডিপোতে। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড অতিরিক্ত হিটে আগুন ধরে বিস্ফোরিত হয়েছে। রাসায়নিক পদার্থ ও গার্মেন্টস পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এজন্য হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’

এর আগে গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কন্টেইনার থেকে অন্য কন্টেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কন্টেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন। পরবর্তী সময়ে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

About admin

আমার পোস্ট নিয়ে কোন প্রকার প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন অথরা মেইল করতে পারেন admin@sottotv.com এই ঠিকানায়।