জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি স্বল্প ও নির্ধারিত আয়ের মানুষের দুর্দশা বাড়িয়ে দিয়েছে। সংসার চালাতে লড়াই করতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষদের। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ধাক্কা লেগেছে সংসারে। আয় বাড়েনি। বেড়েছে ব্যয়। আর এতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। কাটছাঁট করতে হচ্ছে বিভিন্ন খাতে। তার পরও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না মানুষ।
সরজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে প্রতিবেদন করেছেন বিডি২৪লাইভ’র জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আরেফিন সোহাগ।
চাল, ডাল, আটা, ডিম, সবজি ও মাংসসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দামই চড়া। তাই বাজার করতে এসে আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় ক্রেতাদের। তারা জানান, বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন নজরদারি নেই। বাজারে যখন চরম অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়, তখন কিছু অভিযান চলে। দু-চারজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মচারী বিডি২৪লাইভকে বলেন, আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। দিন দিন যে ভাবে খাদ্যের দাম বাড়ছে তাতে আর কিছু দিন পর আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। আমার স্ত্রীসহ তিন বাচ্চা। প্রতি মাসে ঘর ভাড়াসহ খরচ হয় ২৫ হাজার টাকার মত। অথচ আমাদের বেতন ২২ হাজার টাকা। বাকি টাকা পরিচিতদের থেকে ধার হিসেবে নিয়ে চলতে হয়। এর মাঝে আবার জিনিষপত্রের দাম বৃদ্ধি। বাচ্চাদের লেখাপড়া খরচ। জানিনা আগামী দিন আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।
রাজধানীর কৃষিমার্কেটে আসা এক ক্রেতা বিডি২৪লাইভকে বলেন, আমাদের বেতন বাড়ে না। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কেউ ঠেকাতে পারছে না। এখন আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমাদের মতো মানুষরা যদি গরুর মাংস কিনে খেতে না পারে নিম্ন আয়ের মানুষ কীভাবে পারবে। প্রতিটা জিনিসের দামের একটা সীমা থাকা উচিত। দাম ১৯-২০ হতে পারে কিন্তু ১০-২০ হতে পারে না। এটা মোটেই মেনে নেয়ার মতো না। সবাই শুধু তেলের দাম, তেলের দাম করে। বাজারে সব কিছুর দামই বেশি। চিনির কেজি ১০০ টাকা যা আগে ৪০ টাকায় কিনতাম।
কারওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা শরিফুল বিডি২৪লাইভকে বলেন, ৪০ থেকে ৫০ টাকার নিচে এখন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। গত সপ্তাহে চিচিঙ্গার কেজি ছিল ৩০ টাকা, এখন ৫০ টাকা। সবকিছুর দাম এভাবে বেড়েছে। তিনি বলেন, চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটাসহ সবকিছুর দাম হু হু করে বাড়ছে। এতে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে খরচের লাগাম টানা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে বাজারের অস্থিতিশীল অবস্থার কারণ হিসেবে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বিশ্বে গম, উদ্ভিজ্জ তেল, ভুট্টাসহ বেশ কয়েকটি শস্যের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন। যুদ্ধের কারণে এসব শস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দেশের বাজারেও দাম বেড়ে যাচ্ছে। এফএও জানিয়েছে, প্রধান শস্য ও উদ্ভিজ্জ তেলের বাজারে ধাক্কা লাগায় মার্চে খাদ্যের দাম প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। এফএও’র মতে সবজির দাম ২৩ শতাংশ বাড়তে দেখা গেছে। এছাড়া চিনি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের দামও বিশ্ব বাজারে বেড়ে যাওয়ায় দেশে এর প্রভাব পড়েছে।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online