দানের ১১৫ কোটি টাকা দিয়ে কী হবে, জানালো পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খোলে এবার সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (২ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মসজিদ কমিটির কর্মকর্তাদের সামনে মসজিদের আটটি দান সিন্দুক খোলে তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা পাওয়া গেছে। সকাল থেকে এসব টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা গণনা শুরু হয়।

পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, এবার তিন মাস ২০ দিন পর মসজিদের সিন্দুক খোলা হয়েছে। আমরা দেড় বছর ধরে মসজিদের দানের মূল টাকা খরচ করছি না। এগুলো ব্যাংকে জমা রাখা হচ্ছে। যা দিয়ে এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের বহুতল আধুনিক সুযোগ-সুবিধাযুক্ত দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।

ওই কমপ্লেক্সে ৬০ হাজার মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে। থাকবে সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ আরো নানা আয়োজন। এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছি। এতে প্রকৃতপক্ষে কত খরচ হবে তারা তা চূড়ান্ত করে আমাদের জানাবে। এরপর কাজ শুরু হবে কমপ্লেক্সের। জেলা প্রশাসক এ সময় জানান, ইসলামিক কমপ্লেক্সের পুরো ব্যয় দানের টাকা থেকে করা হবে।

সকালে সিন্দুক খোলার পর টাকাগুলো বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় নিয়ে গণনার কাজ শুরু করা হয়। দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২০০ মানুষ দানের টাকাগুলো গুনছিল। টাকার বস্তাগুলো একে একে ঢেলে দেওয়া হয় তাদের সামনে। এভাবে বস্তার পর বস্তা টাকা গণনার কাজ এগিয়ে চলে। একই সঙ্গে ব্যাংকের লোকজন মেশিন দিয়ে টাকাগুলো আবার গণনা করেন।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. গোলাম মোস্তাফার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নির্বাহী মাজিস্ট্রেট টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন। আরেক দল পুলিশ ও আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। তিনি বলেন, এটি আসলে দেখার মতো ঘটনা। মানুষ তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য এখানে কোটি কোটি টাকা দান করেন। থাকে স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রাও।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, মসজিদের দানের টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত থাকে। আর ওই টাকার লভ্যাংশ থেকে মসজিদের উন্নয়নকাজ করা হয়। তা ছাড়া গরিব অসহায় লোকদের আর্থিক সহায়তাসহ ক্যান্সারসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের আর্থিকভাবে অনুদান দিয়ে মসজিদটি আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রেখে চলেছে। এর আগে গত ১২ মার্চ দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন সিন্দুকগুলোতে সব মিলিয়ে তিন কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তারও আগে গত বছরের ৬ নভেম্বর সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় তিন কোটি সাত লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা।

About admin

Check Also

মেয়ের সঙ্গে ঈদ করা হলো না বাবার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আবু জাহের। দীর্ঘ চার বছর পর বিদেশ থেকে দেশের মাটিতে ফিরেছেন। দেশে …