হাসপাতালের টয়লেটে সন্তান প্রসব, পাইপ কেটে বের করলেন বাবা

সিজারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন প্রসূতি। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে টয়লেটের কমোডেই সন্তান প্রসব হয় তার। বিষয়টি তিনি প্রথমে বুঝতে পারেননি। তবে তার সঙ্গে থাকা আত্মীয় কমোডে কিছু একটা পড়ে যেতে দেখেন। তিনি বলার আগেই ফ্লাশ করায় কমোডের ভেতর থেকে পাইপে ঢুকে যায় নবজাতক।
প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর পাইপ কেটে সেই নবজাতককে উদ্ধার করেন তার বাবা। শনিবার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের তৃতীয় তলায় প্রসূতি ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে।

নবজাতক ও তার মা সুস্থ রয়েছেন জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার করা নবজাতক বিশেষ সেবা ইউনিটে (স্ক্যানু) ও তার মা প্রসূতি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নবজাতকের বাবার নাম নেয়ামত উল্লাহ এবং মা শিল্পী বেগম। তাদের বাড়ি পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার গণমান শেখপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায়। সে পেশায় জেলে। এ দম্পতির ৪ বছর বয়সী আরো একটি সন্তান রয়েছে।

নেয়ামত উল্লাহ বলেন, গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় প্রথমে আমার স্ত্রীকে স্বরূপকাঠি হাসপাতালে ভর্তি করাই। কিন্তু অবস্থা ভালো না দেখে তারা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। এখানেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। শেষে চিকিৎসক সিজারের সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে অপারেশনের ওষুধ কিনতে বললে আমি সেগুলো আনতে যাই। ওষুধ নিয়ে ফিরে এসে দেখি, টয়লেটে অনেক লোকজন ভিড় করে আছেন। আমার আত্মীয়-স্বজনরা কান্নাকাটি করছেন।

তিনি আরো বলেন, লোকজন বলাবলি করছিল আমার স্ত্রী টয়লেটেই সন্তান প্রসব করেছে। হাসপাতালের একজন আমাকে টয়লেটের মধ্যে হাত দিতে বলেন। আমি পুরো হাত ঢুকিয়ে দিয়েও কিছু পাইনি। কান দিয়ে শুনি টয়লেটের পাইপের মধ্য থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে। হাসপাতালের লোকজন বলেছে- ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়েছে। আমি অপেক্ষা করিনি। কারণ মেয়ে পড়ে গেছে আমার। আমাকেই তাকে বাঁচাতে হবে। কারো অপেক্ষা না করে দ্রুত দোতলায় গিয়ে টয়লেটের পাইপ ভেঙে আমার সন্তানকে বের করে আনি।

নেয়ামত উল্লাহ বলেন, প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা আমার মেয়েটি টয়লেটের পাইপের মধ্যে ছিল। কীভাবে বেঁচে ছিল? কীভাবে অত খানি গেল বুঝতে পারছি না। আমার স্ত্রী বলেছে সে প্রসব বেদনায় বিষয়টি টেরই পায়নি। কখন টয়লেটের কমোডে সন্তান প্রসব হয়ে গেছে। তার সঙ্গে আমার এক আত্মীয় ছিল। তিনি না দেখলে হয়তো আমার মেয়েকে আর পেতাম না।

তার স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, আল্লাহ আমার সন্তানকে বাঁচিয়েছেন। সবার কাছে দোয়া চাই যেন আমার মেয়ে ভালো থাকে, সুস্থ থাকে।

About admin

আমার পোস্ট নিয়ে কোন প্রকার প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন অথরা মেইল করতে পারেন admin@sottotv.com এই ঠিকানায়।