বাংলাদেশিদের জন্য রুশ সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ !

রুশ সেনাবাহিনীতে চাকরি- ২০১৫ সালে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগের অনুমতি দিয়ে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সুতরাং, আপনার যদি রাশিয়ান সামরিক পোষাক পরে হাতে নতুন একে-১২ অথবা র‍্যাটনিক-২ ব্যাটেল গিয়ারের ট্রিগারে চাপ দিতে হাত নিশপিশ করে তাহলে জেনে নিন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য হতে গেলে আপনাকে যা করতে হবে-

পাসপোর্ট–

রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পেতে আপনার রুশ পাসপোর্টের দরকার নেই। যে কোন দেশের নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট থাকলেই আপনি রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারেন।

বয়স–

রাশিয়ান সেনাসদস্য হতে গেলে আপনাকে কমপক্ষে ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩০ বছর বয়সী হতে হবে।

জেন্ডার–

নারী-পুরুষ উভয়কেই স্বাগত জানায় রুশ সেনাবাহিনী। যদিও নারী সদস্যদের একে-১২ হাতে নিয়ে যু”দ্ধ ক্ষেত্রে দৌঁড়াতে হয় না। সৈনিক হতে ইচ্ছুক যে কোন নারীকে রুশ সেনাবাহিনীতে স্বাগত জানানো হয়। তবে নারী সৈনিদের কাজ কেবল সামরিক দপ্তরে বা নার্স হিসেবে।

তবে মজার বিষয় হচ্ছে নারী সৈনিকরা যে কাজেই নিয়োজিত থাকুক না কেন তাদের অবশ্যই অ”স্ত্র চালনা থেকে শুরু করে যু”দ্ধ ক্ষেত্রের সম্স্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

ভাষা–

আপনার যদি একে -১২ হাতে নিয়ে রুশ সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য হতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। প্রশিক্ষকদের প্রতিটি আদেশ অনুসরণ করতে হবে। এটি করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই রাশিয়ান ভাষায় কথা বলতে হবে। আপনার পক্ষে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব কিনা তা মূল্যায়নের জন্য আপনাকে রাশিয়ান ভাষার একটি পরীক্ষা দিতে হবে। এই বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। তাই রুশ সেনাবাহিনীর সদস্য হতে চাইলে আপনাকে রুশ ভাষা পরীক্ষার জন্য কঠোরভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।

আইনি সমস্যা–

যারা রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চায় তাদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আইনি ঝামেলা মুক্ত থাকা। রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে অন্যকোন দেশের সেনাবাহিনী থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে চাকরিচূত্য সদস্য, ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে এমন ব্যক্তি অথবা যাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলমান তেমন কোন ব্যক্তিকে রুশ সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয় না।

রাশিয়ার নাগরিকত্ব–

আপনার যদি রাশিয়ার নাগরিক হওয়ার ইচ্ছে থাকে তবে রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া হতে পারে আপনার জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্লাটফর্ম। কারণ রুশ সেনাবাহিনীতে ৫ বছর চাকরি করার পর আপনি চাইলেই রুশ পাসপোর্ট পেতে পারেন।

চুক্তি–

রাশিয়ান স’শ’স্ত্র বাহিনীর সাথে আপনার প্রথম চুক্তিটি পাঁচ বছরের জন্য স্বাক্ষরিত হবে। সুতরাং, এই সময়ের জন্য, আপনাকে কোনও চাকরী, অর্থ বা চিকিত্সা সেবা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে হবে না। রাশিয়ার প্রতিটি সৈনিক, এইচআইএস ও তাদের পরিবারের জন্য স্বাস্থ্য বীমা রয়েছে, এবং সেখানে সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

আমি কোন পদে পৌঁছুতে পরি?

বিদেশীরা রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে বেসরকারী, কর্পোরাল, সার্জেন্ট এবং সার্জেন্ট-মেজর পদে কাজ করার সুযোগ পাবেন। তবে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করলেও আপনি কখনও রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে জেনারেল বা অ্যাডমিরাল হতে পারবেন না।

অর্থ–

রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে ন্যূনতম বেতন ৩০ হাজার রুবল (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৯ হাজার টাকা)। বেতন সাধারণত নির্ভর করে আপনি কোন রুশ মিলিটারি ইউনিটে নিয়োজিত আছেন তার উপর। উদাহরণ স্বরুপ- আপনি যদি রুশ সেনাবাহিনীর উত্তরাঞ্চল ডিভিশনে কর্মরত থাকেন তবে আপনার বেতন মস্কো ডিভিশনের চেয়ে বেশি হবে।

বাসস্থান–

যতক্ষণ আপনি রাশিয়ান স’শ’স্ত্র বাহিনীতে দায়িত্ব পালন করবেন ততক্ষণ আপনি এবং আপনার পরিবার আপনি যে ঘাঁটিতে কর্মরত তার নিকটবর্তী একটি সামরিক শহরে বাস করবেন। আপনি যদি বিবাহিত হন তবে পরিবারের থাকার জন্য একটি অ্যাপর্টমেন্ট পাবেন। আর যদি সিঙ্গেল থাকেন তাহলে বসবাসের জন্য একটি রুম পাবেন।

বসবাসের জন্য নিজের মালিকানায় জায়গা পাবেন–

সেনাবাহিনীতে তিন বছর কাজ করার পর আপনাকে রুশ মিলিটারির পক্ষ থেকে আপনাকে বসবাসের জন্য ২০ বছরের জন্য একটি জায়গার মালিকানা দেওয়া হবে। সোজা কথায় – যতক্ষণ আপনি রাশিয়ান স’শ’স্ত্র বাহিনীতে দায়িত্ব পালন করবেন ততক্ষণ সরকার আপনাকে এই জায়গাটি প্রদান করবে এবং সময়মতো আপনি রাশিয়ায় নিজের অ্যাপার্টমেন্ট পাবেন।

আমি কি এফএসবিতে যোগ দিতে পারি?

না। বিদেশিরা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, গোয়েন্দা বিভাগ ও গোপনীয় পরিষেবা সম্পর্কিত জায়গায় পরিষেবা দিতে যোগদান করতে পারবে না।

আমি কি রাশিয়ার পক্ষে যু”দ্ধ করতে পারবো?

হ্যাঁ, অবশ্যই আপনি সেটা পরবেন। যু”দ্ধে”র ক্ষেত্রে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে বিদেশীদের জন্য কোন ছাড় নেই। মূলত বিদেশিরা এই পদের জন্যই নিয়োগপ্রাপ্ত হয়।

আমি কিভাবে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে যুক্ত হবো?

রাশিয়ান স’শ’স্ত্র বাহিনীতে ঢুকতে চাইলে প্রথমে আপনাকে যে কোনও রাশিয়ান শহরের সেনা তালিকাভুক্তি অফিসে যেতে হবে। যদি আপনার সব ডকুমেন্টস এবং কাগজপত্র ভাল থাকে এবং আপনার বিরুদ্ধে কোনও আইনি সমস্যা না থেকে থাকে তবে আপনি একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। এরপর একটি মেডিকেল পরীক্ষা হবে। সেখানে পাস করলে আপনাকে মানসিক দক্ষতা পরীক্ষায় বসতে হবে। পাস করলে আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে আপনার জন্য উপযুক্ত একটি সামরিক ইউনিটে আপনাকে প্রেরণ করা হবে।

About admin

আমার পোস্ট নিয়ে কোন প্রকার প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন অথরা মেইল করতে পারেন admin@sottotv.com এই ঠিকানায়।