রংপুরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের পীরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি এজেডএম সেকেন্দার আলী মন্ডল। এরপর থেকেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে একের পর এক নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন তিনি। পরাজিত এই প্রার্থীর দাবি- ইভিএমে যাকে ইচ্ছা তাকেই জিতানো সম্ভব। আজ সোমবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত আইডিতে এক স্ট্যাটাসে এজেডএম সেকেন্দার আলী মন্ডল লিখেছেন- ‘ইভিএম মানেই ১০০℅ ভুয়া, যাকে মন চায় তাকেই জিতানো সম্ভব।’
এর কিছুক্ষণ আগেই এর আগে আরেকটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন- ‘পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় চোরটার নাম ইভিএম।’এভাবে নিজের ফেসবুক আইডিতে একে একে ছয়টি স্ট্যাটাস দিয়েছেন এজেডএম সেকেন্দার আলী মন্ডল। সেখানে নিজের পরাজয়ের জন্য ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণসহ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন তিনি।
এজেডএম সেকেন্দার আলী মন্ডল রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ড (পীরগঞ্জ) থেকে সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে ৫ ভোট পান। তার সঙ্গে আরও ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। অপরদিকে ওই পদে তালা-চাবি প্রতীকে ৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিঠিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলী সরকার হাতি প্রতীকে ৭৩ ভোট পেয়েছেন।
এর আগে আজ সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় পীরগঞ্জ উপজেলা অডিটোরিয়াম হলে রংপুর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিরতিহীনভাবে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। এতে ২১১ জন ভোটারের মধ্যে ২০৮ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই পরাজিত সেকেন্দার আলী মন্ডল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইভিএম এবং ফলাফল প্রকাশে সময়ক্ষেপণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেখানে ভোটগণনার সময় তাকে কক্ষে থাকতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা লিখেছেন তিনি।
তিনি লিখেছেন- ‘পীরগঞ্জে ইভিএমে ভোট শেষে যে প্রিন্ট আউট করা হয়, এজেন্টদের আড়াল করে সেটা করা হয়েছে। প্রিন্ট আউটের কাগজ এজেন্টদের দেখানো হয়নি। হাতে লেখা কাগজ দেখানো হয়েছে।’ সেকেন্দার আলী মন্ডল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ করা এখন কঠিন। মনে হয় আমি আর আওয়ামী লীগ করব না। কারণ জীবন বাজি রেখে দল করছি। আর আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আগামীতে চিন্তাভাবনা করে রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএমে ভোট গ্রহণের পর ফলাফল প্রকাশেও দেরি করা হয়। এ সময় আমার এজেন্ট প্রতিবাদও করেছে। পাশাপাশি ভোটের রেজাল্ট শিট প্রিন্টের না দিয়ে হাতে লেখা রেজাল্ট শিট দিয়েছে। আমরা প্রার্থীরা ভোট গণনার সময় থাকতে চাইলেও প্রিসাইডিং অফিসার থাকতে দেননি।’এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই।
পরাজিত হয়ে এলোমেলো কথা ফেসবুকে লিখে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করা ঠিক না। যিনি বিতর্কিত কথা লিখছেন, তিনি একজন দায়িত্বশীল মানুষ। আমরা তার কাছ থেকে এমন লেখা প্রত্যাশা করি না।’ নির্বাচনের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম। তিনি ওই পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদি কারও আপত্তি থাকে, তবে তিনি বিধি অনুযায়ী আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।’
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online