জায়েদ খান আর রাস্তার ব্যাঙ একই কথা: মৌসুমীর ছেলে

জায়েদ খান আর রাস্তার ব্যাঙ একই কথা: মৌসুমীর ছেলে : ওমর সানী-মৌসুমীর সংসার ভাঙার চক্রান্ত করছেন জায়েদ খান- এমন অভিযোগ তুলেছেন ওমর সানী। এ দিকে নীরবতা ভেঙে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন মৌসুমী। অডিও বার্তায় এ অভিনেত্রী দাবি করেছেন—‘জায়েদ খান তাকে অসম্মান করেনি, সে ভালো ছেলে বরং ওমর সানী মিথ্যাচার করছে।’ মৌসুমীর কণ্ঠের সেই অডিও শুনে ওমর সানীও বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছেন, তিনি যা বলেছেন, সব সত্য। ডিস্টার্ব করার যথেষ্ট প্রমাণ তাদের কাছে আছে।আমার ছেলে-মেয়ে বাকি কথাগুলো বলবে, এটার সত্যতা কতটুকু।

এ বিষয়ে মৌসুমী-সানীর বড় ছেলে ফারদিন কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তিনি জটিলতাকে খুব বড় আকারে দেখতে না চাইলেও স্বীকার করে বলেন, সানীর ওপর অভিমান বা রাগ করেছেন মৌসুমী। ফারদিন বলেন, ‘

যতটা বড় করে জিনিসটা দেখা হচ্ছে, ততটা বড় এটা না। তাদের মধ্যে কোনো ইস্যুজ থাকলে সেটা তাদের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে। সেখানে বাবাকে কেন্দ্র করে যদি বলে থাকে, তাহলে সেটা রাগ থেকেই হয়তো বলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ঘরের বিষয় এখনও এত বাজে আকারে পরিণত হয়নি বা হবেও না যেটা নিয়ে এত সংবাদ প্রচার করতে হবে।’ ফারদিন জানান, সোমবার সকালে মৌসুমী যে অডিও বার্তা দিয়েছেন, তা মূলত পুরো বিষয়টাকে শীতল করার জন্য।‘আমি মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ব্যাপারটা নিয়ে। মা বললেন, ঘরের মধ্যে অনেক কিছু নিয়েই মনোমালিন্য থাকে। ছোট বিষয়, বড় বিষয় নিয়ে ইস্যু তৈরি হয়।’

‘আম্মু আমাকে আরও বলেছে, এটা যেন আরও বড় করে না হয় সে জন্যই এটা করেছি। যা সমস্যা হবে ঘরে, যা সমাধান হবে তাও ঘরে।’ সানীকে নিয়ে অডিও রেকর্ডে মৌসুমী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়ে মায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ফারদিন।

ফারদিনকে উত্তরে মৌসুমী জানান, বিভিন্ন কথার মাঝখানে তার রাগ হয়তো চলে আসতে পারে, অভিমান চলে আসতে পারে। ওমর সানীর তোলা অভিযোগ জায়েদ খানের দ্বারা ঘটানো সম্ভব বলেও মনে করেন ফারদিন।

ফারদিন বলেন, সত্যি কথা হলো উনি (জায়েদ খান) ডিস্টার্ব করেন। আমি চাইলেও এখন প্রমাণ সবার সামনে হাজির করবো না। ‘জায়েদ খান কখনই তাদের (সানী-মৌসুমী) ভালো চায়নি। নির্বাচনের সময় থেকে শুরু হয়েছে। আমাকে হেনস্তা করেছে।

শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, আব্বু-আম্মুকে পাচ্ছে না, আমাকে ধরছে। আমার রেস্ট্রুরেন্টকে আঘাত করে আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। যখন আমাকে দিয়ে ফুলফিল হয় নাই, তখন আম্মুকে দিয়ে চেষ্টা করতে চাইছে, আব্বুকে দিয়ে চেষ্টা করতে চাইছে।

‘খারাপ মানুষ যে কোনোভাবে খারাপ কাজটায় সাফল্য পেতে চাইবে।’ এসময় ‘জায়েদ খান আর রাস্তার ব্যাঙ এক কথা’ বলেও মন্তব্য করেন তারকা দম্পতির এই সন্তান

সব প্রমাণ আছে, সময় হলে আমার ছেলেই সব দেখাবে: ওমর সানী: জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ওমর সানীর আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চিত্রনায়কা মৌসুমী। সোমবার এক অডিও বার্তায় সব জানান তিনি। সেখানে স্বামী ওমর সানীকে ‘ভাই’ বলেও সম্বোধন করেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির নায়িকা মৌসুমী। অডিও বার্তায় তিনি বলেন, ওমর সানী মিথ্যা বলছেন, জায়েদ খান তাকে অসম্মান করেননি।

বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করা হয় ওমর সানীর সঙ্গে। সমকালকে ওমর সানী বলেন, ‘আমি অডিও বার্তা শুনেছি, সে কেন বা কী কারণে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, সে-ই ভালো বলতে পারবে। সে আমার সন্তানের মা, তার প্রতি আমার সম্মান আছে। কিন্তু আমার কাছে সব তথ্য-প্রমাণ আছে, আমার ছেলে তা দেখাবে আপনাদের।’

ওমর সানী বলেন, ‘মৌসুমী এখনও আমার স্ত্রী। আমার সন্তানের মা সে। আমি তাকে অসম্মান করে কিছু বলতে চাই না। তার প্রতি সম্মান ছিলো, আছে।’

কথায় কথায় ওমর সানী জানান, তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক এখন ভালো নেই। মনোমালিন্য চলছে, যা সব পরিবারে থাকে…।

আপনারা এখন একসঙ্গে থাকছেন কিনা, এমন প্রশ্নে ওমর সানি বলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, একসঙ্গে থাকব না কেন! একই ছাদের নিচে আছি। আমার বাসায় ১১টি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে… ফুটেজ চাইলে সব দেখাব।’

এরআগে, রোববার সন্ধ্যায় অভিনেতা জায়েদ খানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি বরাবর অভিযোগ জানান ওমর সানী। সেখানে তিনি বলেন, জায়েদ খান তার সুখের সংসার ভাঙার চেষ্টা করছেন, তার স্ত্রী মৌসুমীকে ডিস্টার্ব করছেন।

অভিনেতা ও প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চিত্রনায়ক ওমর সানীকে পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে। গত ১০ জুন রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ওই ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েক জনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। মৌসুমীকে ‘ডিস্টার্ব’ করার অভিযোগে ওই অনুষ্ঠানে ঢুকেই জায়েদ খানকে চড় মারেন বলে জানিয়েছেন ওমর সানী নিজেই।

‘মৌসুমীকে নিয়ে কি বলব; ওমর সানীর বিচার হওয়া উচিত’: বরেণ্য নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু জায়েদ খান-মৌসুমী-ওমর সানীর ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে মুখ খুললেন। তিনি বলেছেন, ‘মৌসুমীকে নিয়ে কি বলব, নিজেই আসলে বুঝে উঠতে পারছি না। জায়েদ খানের মতো ছেলের সাথে ওর কিসের বন্ধুত্ব? দেশে বন্ধুত্ব করার মতো নায়কের অভাব পড়েছে? সারাদেশের মানুষ মৌসুমীকে এক নামে চেনে, জানে ও সম্মান করে। তার তো সেদিকে ভাবা উচিত। আমি আসলে হতাশ। ’

দেলোয়ার জাহান ঝন্টু আরও বলেছেন, ‘ওমর সানীর বিচার আগে হওয়া উচিত। কারণ সে স্বামী। তাদের (সানী-মৌসুমী) ছেলে বিয়ে করেছে, নাতি আসবে। এখন এসব কি! কেন স্ত্রীকে শাসনে রাখতে পারবে না? কেন ওমর সানীর অভিযোগের পর স্ত্রী তারই বিরুদ্ধে কথা বলবে? ওর মতো নায়ক এদেশে কয়টা আছে? হিট সুপারহিট সব সিনেমা দিয়েছে ওমর সানী। প্রেম করে মৌসুমীকে বিয়ে করেছে।’

প্রসঙ্গত, ওমর সানী অভিযোগ করেছেন, জায়েদ তার ২৭ বছরের সংসার ভাঙার চেষ্টা করেছেন। তার স্ত্রী মৌসুমীকে ‘বিরক্ত ও হয়রানি’ করেছেন। এ জন্য বিয়ের অনুষ্ঠানে জায়েদকে চড় মেরেছেন তিনি। তার জবাবে জায়েদ তাকে অস্ত্র বের করে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন। এদিকে, জায়েদ বলছেন, ওমর সানী তাকে চড় মারেননি। শুধু তাই নয়, জায়েদের কাছে পিস্তল ছিল না। এদিকে, ওমর সানী জায়েদের বিরুদ্ধে সংসার ভাঙার অভিযোগ এনে শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে মৌসুমী বলেছেন, ‘জায়েদ ভালো ছেলে। জায়েদ তাকে কখনই বিরক্ত বা হয়রানি করেনি। বরাবরই সম্মান করেছে।’

জায়েদ খানের পক্ষ নিয়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন মৌসুমী: জায়েদ -ওমর সানী দ্বন্দে মৌসুমী তার প্রথম মন্তব্যে জায়েদ খানের পক্ষে সাফাই গাইলেও, পরদিন নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার স্বামী ওমর সানীর দলে ভীড়লেন মৌসুমি ।

মা (মৌসুমী) বাবার (ওমর সানী) বিপরীতে কথা বলেছেন জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে ফারদিন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে মায়ের সাথে কথা বলেছি; মা বলেছে, দেখ বাবা আমি তো তখন রাগের মাথায় বলেছি। তোমার বাবার সঙ্গে একটু রাগারাগি হয়েছে। সেভাবেই বলেছি। আমি কিন্তু মিথ্যাচার করছে সানী এটা ডিরেক্ট বলি নাই। যতটুকু বলেছি, আমি রাগের মাথায় বলেছি।’

ফারদিন বলেন, ‘আমার আম্মাকে (মৌসুমী) জিজ্ঞেস করেছিলাম। বলেছিলাম মা, তুমি যে অডিও বাইটের প্রথমে ও শেষে কী বললে? জানতে চেয়েছিলাম, বিশ্রী একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। (কারণ, সিচুয়েশনটা আগলি না।) এটা সমাধান করতে হবে ঘরোয়াভাবে। এটা গণমাধ্যম পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না। চলচ্চিত্রে সিনিয়ররা আছেন তারাই বিষয়টি সমাধান করতে পারেন।’

বাবা-মার মধ্যে সম্পর্ক এখন কেমন, জানতে চাইলে ফারদিন বলেন, সব ঠিক আছে। আমি তো আমার আব্বুকে পাচ্ছি, আম্মুকে পাচ্ছি। হ্যাঁ, অনেক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য থাকে। আমিও বিয়ে করেছি। আমাদেরও তো হয়। এটা স্বাভাবিক।

Check Also

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

In today’s fast-paced world, maintaining good health can seem overwhelming. But the truth is, a …