আমার বিরুদ্ধে জঘন্য অপপ্রচার করছে: আর্জেন্টিনার জার্সি পরা সেই ছাত্রলীগ নেতা

নাম আল-আমিন রহমান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ছাত্রলীগ নেতা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ বৃহস্পতিবার তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল- ‘১০ তারিখ রাজধানী শহর ঢাকায় বিএনপি-জামাত দেশবিরোধী চক্রের নাশকতা প্রতিরোধে গোয়েন্দা পুলিশের সাদা পোশাকে অস্ত্র হাতে এবং হেলমেট পরা এক সদস্যের ছবিকে দেশে-বিদেশে আমার ছবি বলে বিরোধী দলের গুজববাহিনীর লোকজন ফেসবুকে ভাইরাল করে প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও আমার বিরুদ্ধে জঘন্য অপপ্রচার করছে।

এ তালিকায় লন্ডনে পালিয়ে থাকা তারেক গংয়ের প্রোপাগান্ডা সেলের লোকজনেরও পরিচয় পাওয়া গেছে। হাস্যকর ব্যাপার হলো আমি ছোটবেলা থেকে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সমর্থক। আমার শত্রুও তা জানে। সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য পরে আছেন আর্জেন্টিনার জার্সি। উপরন্তু, আমার উচ্চতা ছয় ফুট। ছবিটা ভালো করে দেখলেই স্পষ্ট বুঝা যায়। পেছনে পুলিশের গাড়িও আছে। এ ছবি বিশ্লেষণ করে প্রকৃত ব্যক্তিকে আইডেন্টিফাই করতে বায়োলজি বা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই। একটু পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট।

দুঃখজনক বিষয় হলো আমার উপজেলায় শ্রেষ্ঠ জননী পুরস্কার পাওয়া ফেসবুক প্রোফাইলে থাকা আমার রত্নগর্ভা মায়ের সঙ্গে ছবিটাও অপব্যবহার করছে গুজবসন্ত্রাসীরা। ভয়াবহ গুজবসন্ত্রাসীদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি। বকশী বাজারে ছাত্রদলের নাশকতা, নানা সময় ক্যাম্পাসে সরকার বিরোধী অপতৎপরতা ও অস্থিতিশীলতা প্রতিরোধ, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে অনড় অবস্থান, সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে কটূক্তির সমুচিত জবাব দেওয়ার পর থেকে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা আমাকে আতংক ভাবে।

উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া ও তারেক গং ছাত্রদলের হাতে তুলে দিয়েছিল অস্ত্র। তাদের সহযোগী শিবির জন্মলগ্ন থেকেই করে রগকাটা রাজনীতি। দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে অস্ত্রের সেই ঝনঝনানি আর রগকাটা-সংস্কৃতি এখন আর নেই। জন্মলগ্ন থেকেই ছাত্রলীগ মেধার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের হাতে অস্ত্র নয়; কলম ও বই তুলে দিয়েছেন। সবসময় ছাত্রলীগকে দেশমাতৃকার সেবায় যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশনা দেন।

অস্ত্র হাতে নয় বিএনপি-জামাতের যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নাশকতা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিপুল কর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে খালি হাতেই মোকাবিলা করার সামর্থ্য রাখে। গ্রেনেড, বোমা, জঙ্গিহামলা ও অগ্নিসন্ত্রাসীদের দিন বহু আগেই শেষ হয়েছে।

সংকটে আবর্তিত বিশ্বে অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই রচিত হচ্ছে উন্নত, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অতন্দ্র প্রহরী দেশরত্নের ভ্যানগার্ড হিসেবে এবং দেশবিরোধী চক্রকে রুখতে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সবসময় সোচ্চার থাকবো। অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করে থামানো যাবে না। গণমানুষের কল্যাণের রাজনীতি করার শপথে আমি বলীয়ান। বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেমের দীক্ষা আমার রক্তে। সর্বোপরি, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপসহীন থাকাই আমার রাজনীতির অভিষ্ট্য লক্ষ্য।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।’

আর্জেন্টিনার জার্সি পরা সেই যুবক আনসার সদস্য: ডিবি প্রধান

গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় অস্ত্র হাতে আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে গুলি করা ব্যক্তি ছাত্রলীগের কেউ নন বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ। আজ বৃহস্পতিবার ৮ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নয়াপল্টনে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে অস্ত্রহাতে থাকা ব্যক্তি ছাত্রলীগের কেউ নন, তিনি একজন আনসার সদস্য। তার নাম মাহিদুর রহমান। তিনি পল্টন থানায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন।’

এর আগে গতকাল বুধবার ৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের সময় পুলিশের মাঝে থেকে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে গুলি ছোড়া ওই ব্যক্তি কে- সেটি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদিও এদিন তার পরিচয় কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি ছাত্রলীগ নেতা বলে কেউ কেউ দাবি করছেন। ভাইরাল ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনের একটি বাড়ির গেটের সামনে পুলিশের একটি ভ্যানের আড়াল থেকে শর্টগান থেকে গুলি ছুড়ছেন একজন যুবক। তার মাথায় নীল হেলমেট, গায়ে আর্জেন্টিনার জার্সি।

এ সময় তার পাশ থেকে পুলিশের পোশাক পরা দুজনকে একসঙ্গে গুলি করতে দেখা গেছে। এসময় আশপাশের মানুষ ‘ওনি তো পুলিশ না’ বলাবলি করছিল। জার্সি পরা ব্যক্তি যে স্থানে দাঁড়িয়ে গুলি করছিলেন সেটি পল্টন মডেল থানার গেট।

গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক সাংবাদিকদের জানান, নয়াপল্টনের সংঘর্ষে মকবুল হোসেন (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়ে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ২১ জন। একজন পুলিশ সদস্যসহ তিনজন ভর্তি আছেন। তবে তারা শঙ্কামুক্ত।

About admin

Check Also

ঢাকা কলেজের সামনে পড়ে ছিল রক্তাক্ত মরদেহ

ঢাকা কলেজের সামনে পড়ে ছিল রক্তাক্ত মরদেহ

ঢাকা কলেজের সামনে থেকে একজনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।আজ মঙ্গলবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। …