কলা-চিড়া নিয়ে সাইকেলে চেপে রংপুরের পথে বিএনপির সমর্থকরা

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে রংপুরে বাস ধর্মঘট চলছে। তাই সাইকেল চেপে ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুরের পথে রওনা দিয়েছেন দলটির কয়েকজন সমর্থক। এ সময় সঙ্গে করে শুকনো খাবার চিড়া ও কলা নিয়ে গেছেন তারা। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে জেলার সদর উপজেলার বেগুনবারি ইউনয়ন থেকে তারা রওনা হন। দেখা গেছে, নিজেদের বাইসাইকেলে শুকনো খাবার (চিড়া) ও কলা এবং দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তারা। বাইসাইকেলে রংপুরে রওনা দেওয়ার সময় ইউনিয়নের ঝাপত্তলি (৮ নং ওয়ার্ড) এর শরিফুল ইসলাম বলেন, পথে কেউ যোগ দিলে তাদেরকেও স্বাগত জানাবেন।

প্রসঙ্গত, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে রংপুরে দুদিনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত চলবে ধর্মঘট। এর আগে গত ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে চলে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট। এরপর খুলনায় গত ২২ অক্টোবর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে ঘোষণা দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়।

যদিও পরিবহন মালিকরা বলছেন, মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধ করার দাবিতে তাদের ধর্মঘট। তবে বিএনপি বলছে, তাদের সমাবেশ বানচাল করার চেষ্টায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের মঞ্চ প্রস্তুত হচ্ছে।

উল্লেখ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার রংপুরে বিভাগীয় গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে দলটি। জেলার কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

সমাবেশস্থলে এসেই শুয়ে পড়লেন নেতাকর্মীরা

রাত পোহালেই বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই সমাবেশকে ঘিরে এক দিন আগেই বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা। শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে গণসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সমাবেশে আসতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীরা। যে যেভাবে পেরেছেন সমাবেশস্থলে এসেছেন। সমাবেশের আগের রাতে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে এসেই নিচে খড় বিছিয়ে গায়ে পাতলা কম্বল জড়িয়ে শুয়ে পড়েছেন ক্লান্ত অনেকেই।

সমাবেশ মাঠে শুয়ে থাকা পঞ্চগড় থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ওয়াদুদ বলেন, বাড়ি থেকে অনেক ভেঙে ভেঙে এসেছি। সৈয়দপুর পর্যন্ত আর কোনো গাড়ি নিয়ে আসেনি। একটা সিএনজি পেলেও সেটি বেশি দূর আসেনি। ২০ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে এসেছি। এসে এখানে শুয়ে পড়ছি। তিনি বলেন, আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও এ সরকারের পতন চাই। আমার দেশনেত্রীর মুক্তি চাই।

কুড়িগ্রাম থেকে আসা যুবদলের ওয়ার্ড সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে বলে আসছি বের হলাম ফিরব কিনা জানি না। কালকের সমাবেশ থেকে সরকার পতনের যাত্রা শুরু হবে। এখানে তেমন কোনো আত্মীয় নেই থাকার মতো। তাই আসার সময় খড় আর একটা করে কম্বল নিয়ে আসছি। রাতটা এখানেই কাটিয়ে দিব।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী এ জেড এম জাহেদ হোসেন বলেন, অবৈধ সরকারের টনক নড়ে গেছে। সারাদেশে গণজাগরণ দেখে ভয় পেয়েছে। সেজন্য সমাবেশের আগে বাস বন্ধ করে দিয়েছে। তবে আমাদের এ সমাবেশকে প্রতিহত করতে পারবে না তারা৷ আগামীকাল জনসমুদ্রে পরিণত হবে কালেক্টরেট মাঠ। দুদিন আগে থেকে নেতা-কর্মীরা আসছেন। এসে সমাবেশ মাঠেই রাত কাটাচ্ছেন তারা।

৭০০ রিকশা-ভ্যানে রংপুরে যাচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা

দুই দিনের ধর্মঘটের কারণে বাস-ট্রাক বন্ধ থাকায় প্রায় ৭০০ রিকশা-ভ্যানে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিচ্ছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা। এই বহরটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতা আব্দুল খালেক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লোকমান হাকিম। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সৈয়দপুর কামারপুকুর, চিকলী ও খিয়ার জুম্মা নামক স্থান থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যানগুলো।

আব্দুল খালেক জানান, ৭০০ রিকশা-ভ্যানের বহরে সৈয়দপুরে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড এবং পৌর বিএনপির শত শত নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। ৫০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগবে।

এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সমাবেশে আসতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীরা। যে যেভাবে পেরেছেন সমাবেশস্থলে এসেছেন। সমাবেশের আগের রাতে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে এসেই নিচে খড় বিছিয়ে গায়ে পাতলা কম্বল জড়িয়ে শুয়ে পড়েছেন ক্লান্ত অনেকেই।

সমাবেশ মাঠে শুয়ে থাকা পঞ্চগড় থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ওয়াদুদ বলেন, বাড়ি থেকে অনেক ভেঙে ভেঙে এসেছি। সৈয়দপুর পর্যন্ত আর কোনো গাড়ি নিয়ে আসেনি। একটা সিএনজি পেলেও সেটি বেশি দূর আসেনি। ২০ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে এসেছি। এসে এখানে শুয়ে পড়ছি। তিনি বলেন, আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও এ সরকারের পতন চাই। আমার দেশনেত্রীর মুক্তি চাই।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মহাসড়কে নসিমন, করিমন ও থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে ‘প্রশাসনিক হয়রানি’ বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পরিবহন সংগঠন। ধর্মঘট চলবে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে রংপুর বিভাগের আট জেলার যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

About admin

Check Also

ছাত্রলীগের পদ পেতে দিতে হলো পরীক্ষা!

এবার রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটির নেতৃত্বে আসার জন্য পদ প্রত্যাশীদের দিতে …