পরিচয় দেওয়ার পরও স্ত্রীসহ এএসআইকে পেটালেন আনসার সদস্যরা

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে সন্তানের চিকিৎসা করাতে এসে আনসার সদস্যদের হাতে এক পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রী মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে মারধরের অভিযোগটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা হলেন সিরাজগঞ্জের চৌহালি থানার সহকরী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রুমা খাতুন। হামলার শিকার এএসআই সাহিদুল ইসলামের ভাষ্যমতে, তার দেড়মাস বয়সী ছেলে সিয়াম মাহমুদ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। চারদিন আগে তাকে শজিমেক হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তখন থেকে তিনি এবং তার স্ত্রী হাসপাতালেই অবস্থান করছেন। আজ সকালে তিনি ওয়ার্ডের বাইরে যান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে স্ত্রী রুমা খাতুন জানান, ছেলে সিয়াম মাহমুদকে ইনজেকশন দেওয়ার জন্য ওয়ার্ডের বাইরে নিয়ে যেতে হবে। ফিরে না আসা পর্যন্ত যেন তিনি ওয়ার্ডের ভেতর এসে নির্ধারিত বেডে বসে সেখানে থাকা পার্সসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো দেখে রাখেন।

তিনি আরো জানান, ‘স্ত্রীর ফোন পেয়ে বেলা পৌনে ১১টার দিকে আমি পাঁচতলায় শিশু ওয়ার্ডের সামনে যাই। ততক্ষণে চিকিৎসকদের রাউন্ড দেওয়াও শেষ হয়ে গেছে। আমি নিজের পরিচয় দিয়ে ভেতরে যেতে চাইলে গেটে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় এক আনসার সদস্য আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। তখন আমার স্ত্রী সেখানে এসে আমাকে বাধা দেওয়ার কারণ চাইতে চাইলে আনসার সদস্যরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে রুবেল নামের এক আনসার সদস্য আমার স্ত্রীর গালে থাপ্পড় দেন। রাগ সামলাতে না পেরে আমার স্ত্রীও তাকে আঘাত করের। এর পরপরই সেখানে থাকা আনসার সদস্য শফিকুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন ও মোমিন আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে আমার তলপেটেও লাথি দেন।’

তিনি এই ঘটনার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো অভিযোগ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে দুপুর ১টার দিকে তিনি বলেন, ‘না, এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দিইনি। তবে হাসপাতালের পরিচালক স্যার আমার কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনতে চেয়েছেন। আমি বর্তমানে তার অফিসের সামনে অপেক্ষা করছি।’এ বিষয়ে চৌহালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুণ অর রশিদ জানান, সন্তানের চিকিৎসার জন্য এএসআই সাহিদুল ইসলাম ছুটি নিয়েছেন। তাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে।সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল জানান, বিষয়টি বগুড়ার পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। তবে শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ হাত তোলার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তিনি জানান,‘কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তবে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা পরিচালক স্যারের অফিসে বসেছি। দুই পক্ষের কথা আমরা শুনছি।

About admin

Check Also

মেয়ের সঙ্গে ঈদ করা হলো না বাবার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আবু জাহের। দীর্ঘ চার বছর পর বিদেশ থেকে দেশের মাটিতে ফিরেছেন। দেশে …