পূজামণ্ডপে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পাঁচজনের মৃত্যু

সম্প্রতি ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের ভদোহিতে এক দুর্গাপূজা মণ্ডপে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ৬০ জনের ও বেশি। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার (২ অক্টোবর) এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম জানায়, ভদোহি-আওরি রোডে অবস্থিত একতা ক্লাবের আয়োজিত পূজা মণ্ডপে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৯টার সময় যখন আরতি হচ্ছিল, তখন এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া ভদোহির জেলা প্রশাসক গৌরাঙ্গ রাঠি বলেন, আওরাই থানার অন্তর্গত একটি দুর্গাপুজো মণ্ডপে আগুন লেগে মোট ৪২ জন আহত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এছাড়া দমকল বিভাগ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় মণ্ডপে প্রায় ১৫০ জন উপস্থিত ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন লাগে। আগুন লাগার পর মুহূর্তে মণ্ডপের কাপড়ে লেগে তা ছড়িয়ে পড়ে। পরে মণ্ডপের বাঁশে সেই আগুন লেগে যায়। সূত্রঃ এনডিটিভি

একই স্থানে মসজিদ-মন্দির নির্বিঘ্নে চলছে নামাজ ও পুজা: ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন রয়েছে চিত্রার নদীর পাড়ে নড়াইল পৌরসভার মহিষখোলা এলাকায়। প্রায় চার দশক ধরে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ পরষ্পরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদের ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করছে। ঐহিত্য মেনে সেই উৎসবে সামিলও হচ্ছেন সবাই। ছোট্ট একটি মাঠের একপাশে মসজিদ আর অন্যপাশে মন্দির। সময় হলে কেউ যাচ্ছেন নামাজে, আর কেউ যাচ্ছেন দেবী দর্শনে। স্বাধীনভাবে যার যার ধর্ম পালন করছেন সবাই চলছেন সম্প্রতি রক্ষা করে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এক সময় নড়াইলের পুরান সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়টি মহিষখোলায় ছিল। সেই কার্যালয়ের পাশেই ১৯৭৪ সালে মহিষখোলা পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি অফিস জামে মসজিদ নামের এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৯২ সালে নতুন করে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় মহিষখোলা সার্বজনীয় পূজা মন্দির। নিজস্ব জায়গায় মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিত্র নদীর পাড়ে একটি ছোট্ট মাঠে মধ্যে তিনটি স্থাপনা রয়েছে। মাঠের পশ্চিম পাশে মসজিদ, আর উত্তর পাশে রয়েছে মন্দিরটি। মন্দিরটি উত্তর-দক্ষিণমুখী। মন্দির থেকে একটু সামনে এগোলেই রয়েছে শরীফ আব্দুল হাকিম ও নড়াইল এক্সপ্রেস হাসপাতাল। আর মাঠের দক্ষিণ পাশে রয়েছে একটি রাস্তা।

মন্দিরে পূজা দেখতে আসা লোহাগড়ার হৃদয় দাস বলেন, আমি আগেই এখানকার কথা শুনেছিলাম। একই জায়াগায় পাশাপাশি মন্দির ও মসজিদে যে যার ধর্ম পালন করে। এটা দেখে বেশ ভালো লাগলো। সবাই এ রকম মিলেমিশে থাকলে তো ধর্ম নিয়ে কোনো ঝগড়াঝাটি আর থাকত না।

ওই এলাকার কয়েকজন স্থায়ী বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন শান্তিপূর্ণভাবে আমরা হিন্দু-মুসলিম একই পরিবারের সদস্য হিসেবে এলাকায় বসবাস করে আসছি। আমাদের এলাকায় কখনও ধর্ম নিয়ে কোনো বিরোধে আমরা লিপ্ত হইনি। এই এলাকার মানুষ মনেপ্রাণে অসাম্প্রদায়িক। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল।

মহিষখোলা সার্বজনীন পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি সুমন দাস বলেন, এই এলাকায় মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি হলেও কখনোই আমাদের পূজা-অর্চনা করতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হই না। আমরা সবাই মিলেমিশে এখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি। তিনি আরও বলেন, পূজা উদযাপনের সময় সরকারিভাবে ৫০০ কেজি চাউল পাই। নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সহযোগিতা করেন। তবে বেশিরভাগ খরচের ব্যবস্থা আমরা নিজেরাই করে থাকি।

মহিষখোলা পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয় জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান বলেন,আমরা মন্দির কমিটিকে আমাদের নামাজের সময়সূচি দিয়েছি। নামাজের সময় মন্দির কমিটি তাদের কাজক্রম সীমিত রাখেন। নামাজ শেষ হলে স্বাভাবিক নিয়মেই পূজা-অর্চনার কাজ চলে। এ নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত হয়নি। আমরা সবাই মিলেমিলে একসঙ্গেই বসবাস করছি।

নড়াইল জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অশোক কুমার কুণ্ডু বলেন, এ বছর জেলার তিনটি উপজেলার ৫৮২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি, প্রতি বছরের মতো এ বছরও নড়াইলে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হবে।

About admin

Check Also

বিবাহিত বেশি রাজশাহীতে, অবিবাহিত সিলেটে

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারাদেশে বিবাহিত মানুষের সংখ্যার হার …