মির্জা ফখরুল তার নেত্রীর কথা অমান্য করে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় ফিরলেন।

ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতারা। শনিবার বিকেলে ফরিদপুরের কোমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষ করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয় বিএনপি মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতার গাড়ি। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং আমীর খসরুসহ দলের শীর্ষ নেতারা বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে শুক্রবার বিকেলে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরে যান। এরপর শনিবার সমাবেশ শেষ করে আবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকায় ফেরেন।

আ.লীগ বলে আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বলেছেন, জোর করে কোনো দিন মানুষের সংগ্রামকে বন্ধ করা যাবে না। ফেরাউন পারেনি, নমরুদ পারেনি, মুসোলিনি পারেনি, আইয়ুব খান পারেনি, আপনারাও পারবেন না। শনিবার (১২ নভেম্বর) ফরিদপুরের কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আর কোনো অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করা হবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা রুখে দাঁড়াব। তরুণদের জেগে উঠতে হবে। সমস্ত মানুষকে জেগে উঠতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে ৩৫ লাখ মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। অবিলম্বে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নইলে আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়াও হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সারাজীবন লড়াই করে গেছেন ভোট দেয়ার অধিকারের জন্য। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার নিজেরাই নির্বাচন করতে চায়। তারা এককভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু আমার কথা হলো, বাংলাদেশের জনগণের কথা হলো, আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সেটা মানবে না। আওয়ামী লীগ সরকার বলে আমার ভোটও আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আওয়ামী লীগ রিজার্ভের টাকা গিলে খেয়েছে। তারা এমন কোনো খাত বাকি রাখেনি যেখান থেকে লুটপাট না করেছে। আমরা এমন বাংলাদেশ দেখতে চাইনি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে। তার কথা শুনে ঘোড়াও হাসে। আওয়ামী লীগ দেশের আলেম ওলামাদের হয়রানি করছে। তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢোকাচ্ছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে চার বছর ধরে জেলে রেখেছে। জোর করে খুন করে-গুম করে ক্ষমতায় থাকা যাবেনা।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দেশটাকে আপনার বাপের মনে করেন। দেশটা আপনার বাপের না। এ দেশকে সাধারণ মানুষের।’ ফরিদপুরে বিএনপির এ গণসমাবেশে আবারও সরকার পতনের ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশে আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়বেন না এ কথা জানিয়ে নেতাদের দাবি, সরকার পতন আন্দোলনে সম্পৃক্ততা বেড়েছে জনগণের। বিএনপির এ বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচি শেষ হবে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে বলেও জানান তারা।

বিরোধীদের সঙ্গে বসুন, না হলে পালাতে হবে: প্রধানমন্ত্রীকে ডা. জাফরুল্লাহ

রাজনীতিতে সংঘাতের পথ পরিহার করে বিরোধী আলোচনার মাধ্যমে দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথে আসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আপনি ক্রমান্বয়ে ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছেন। সেই ভুল পথ থেকে বেরিয়ে আসেন। বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বসুন, তাহলেই আপনার মুক্তি হবে। তা না হলে আপনাকে পালিয়ে যেতে হবে। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে একথা বলেন ডা. জাফরুল্লাহ। ১৭ নভেম্বর জাতীয় মজলুম নেতা মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সংলাপ ছাড়া শেখ হাসিনার মুক্তি নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনি যেটা বলেন, সেটা করেন না। আপনি বলেছিলেন, বিরোধী দলের সমাবেশে বাধা দেবেন না। কিন্তু তাদের সমাবেশে বাস বন্ধ করে দিচ্ছেন। সংঘাতের দিকে না গিয়ে সংলাপের দিকে যান। সংলাপই দেশকে সুশাসনের দিকে নিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। তাই প্রধানমন্ত্রীকে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বসার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, দেশের সুশাসনের জন্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন। তা না হলে আপনি আরও বড় সমস্যায় পড়বেন। আপনিতো সমস্যায় পড়বেনই দেশকেও সমস্যায় ফেলবেন। আপনি নিজের ভালো বুঝতে পারছেন না।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সীমান্তে ভারত প্রতি সপ্তাহে একজন বাংলাদেশিকে হত্যা করছে। আপনি ভারতের এই অত্যাচার দেখতে পান না? আপনার পররাষ্ট্রনীতি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তিস্তার পানি তো আনতেই পারেন না, সেটা আরও বরং দিল্লিতে চলে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের আয়ের ৩২ ভাগই চাউল কিনতে লাগে। তাহলে বুঝতেই পারেন আমাদের অবস্থাটা কি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আপনি দিনকে দিন দেখতে পান না। এ সময় তিনি মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীকে জাতীয় দিবস ঘোষ ঘোষণার দাবি জানান।

About admin

আমার পোস্ট নিয়ে কোন প্রকার প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন অথরা মেইল করতে পারেন admin@sottotv.com এই ঠিকানায়।