খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে আত্মগোপনে যাওয়ার পর উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম আবার বাড়ি ছেড়েছেন বলে জানা গেছে। যদিও পরিবারের কেউই বিষয়টি স্পষ্ট করে স্বীকার করেননি। তবে বিষয়টি মিথ্যা বলেও কেউ দাবি করেননি। বরং মেয়ে মরিয়ম মান্নান জানিয়েছেন, এবার বাড়ি ছেড়ে গেলে তিনি আর মাকে খুঁজবেন না।
এদিকে রহিমা বেগম অপহরণের ঘটনা নিজেই সাজিয়েছিলেন বলে জবানবন্দি দিয়েছেন তার ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ আল শাদী। খুলনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে মায়ের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেয়ার আগ্রহ জানান মিরাজ। পরে পুলিশ তাকে আদালতে নিয়ে যায়।
মিরাজ বলেছেন, রহিমা বেগম বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে থেকে মিথ্যা কথা বলেছিলেন। এটা তার ইগোতে লেগেছে। এ জন্য তিনি স্বেচ্ছায় মায়ের বিচার চেয়ে আদালতে জবানবন্দি দিতে চেয়েছেন।
এদিকে রহিমা বেগম দুদিন আগে মেয়েদের বাড়ি ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে গেছেন। তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান সোমবার বিকেলে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন।
মরিয়ম সোমবার বলেন, ‘আমার ভাই সাদী আমাকে জানিয়েছিল যে মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আদুরীর কাছে ফোন করে জানতে পারি মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় গেছে, কেউ জানি না। এবার আর মাকে খুঁজবো না।’ তিনি জানান, ফরিদপুর থেকে উদ্ধার হওয়ার পর আদালত থেকে রহিমাকে আদুরীর জিম্মায় দেয়া হয়। তবে সব ভাই-বোনদের সিদ্ধান্তে রহিমা ও আদুরীকে তিনি ঢাকায় নিয়ে আসেন।
ঢাকায় রহিমার চিকিৎসা চলছিল জানিয়ে মরিয়ম বলেন, ‘মা আদালতে দাবি করেছিল, তাকে অপহরণের সময়ে মারধর করা হয়েছিল। তাই ঢাকাতে নিয়ে তাকে আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই। তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন তার গায়ে কোনো স্পট নেই। পরে মানসিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। তারা জানিয়েছেন কোনো সমস্যা নাই। তিনি কান্নাকাটি করতেন, বিশৃঙ্খলা করতেন, আমাদের সঙ্গে থাকতে চাইতেন না। পরে ১ অক্টোবর ছোট বোন আদুরী ও মাকে খুলনায় পাঠানো হয়। আজ আদুরী জানিয়েছে মা দুই বা এক দিন আগে নিখোঁজ হয়েছে। কখন নিখোঁজ হয়েছে, সঠিক টাইম বলতে পারব না।’
রহিমা বদলে গেছেন বলে দাবি করেছেন মরিয়ম। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা ১৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। মা আমাদের মানুষ করেছেন। আমরা একটি সুন্দর মাকে চিনতাম। কিন্তু এখন চিনছি না। মায়ের বদনাম করতে পারছি না, তাই আর কিছু মিডিয়াকে বলব না।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আদালত রহিমাকে আমাদের জিম্মায় দেয়নি। তাই তিনি কোথায় আছেন, সেটি আমাদের দেখার বিষয় না। আদালত তাকে তার মেয়ে আদুরীর জিম্মায় দিয়েছিল। তাই তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’