এতিমকে যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য আছে জান্নাতের সুসংবাদ

যাদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ – এতিম শব্দের অর্থ নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ। বাংলা অভিধান অনুযায়ী, মাতা-পিতাহীন বালক-বালিকাকে এতিম বলা হয়। ইসলামী পরিভাষায়, যে শিশুর পিতা ইন্তেকাল করেছেন, শুধু তাকে এতিম বলা হয়।

প্রিয়নবী (সা.) এতিম অবস্থায় পৃথিবীতে আগমন করেছেন। পিতৃছায়াহীন বিষাদময় জীবনের কী যে যন্ত্রণা, তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছেন। তাই তিনি সর্বদা এতিমদের ভালোবাসতেন, তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করতেন, তাদের মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিতেন এবং এতিমের সম্পদ গ্রাস করাকে ধ্বং’সাত্মক কাজ বলে ঘোষণা করেছেন।

এতিমকে ভালোবাসতে হবে হৃদয়ের গভীর থেকে। আল্লাহ তায়ালা এতিমের সম্পদ বুঝিয়ে দেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

যারা এতিমের সম্পদ লুণ্ঠন করে, তাদের প্রাপ্য অধিকার আদায় করে না, এমন পাপিষ্ঠদের ব্যাপারে কঠোর পরিণতির কথা বর্ণনা করেছেন। এ সম্পর্কে কোরআন মজিদে এরশাদ হয়েছে ‘তোমরা এতিমের সম্পদ বুঝিয়ে দাও এবং অপবিত্র সম্পদকে পবিত্র সম্পদ দ্বারা বদল করো না।

আর তাদের সম্পদকে তোমাদের সম্পদের সঙ্গে মিশিয়ে গ্রাস করো না। নিশ্চয়ই এটা মহাপাপ।’ (সূরা নিসা : ২)।

মহান রাব্বুল আলামিন কোরআনের অন্যত্র এরশাদ করেন ‘যারা এতিমের ধনসম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, তারা মূলত তাদের পেট আগুন দ্বারা পূর্ণ করছে, আর অচিরেই তারা জাহান্নামের প্রজ্বলিত আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে।’ (সূরা নিসা : ১০)।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন ‘এতিমের প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করো না। ভিক্ষুককে ধমক দিয়ো না। অধিকন্তু তোমার রবের অনুগ্রহ বর্ণনা করো।’ (সূরা দোহা : ৯-১১)।

ইসলাম সমাজের ধনবান, সামর্থ্যবান ও বিত্তশালীদের সম্পদে নিঃস্ব, এতিম, বিধবা ও দুর্দশাগ্রস্তদের অধিকার নিশ্চিত করেছে।

যারা এতিমকে ভালোবাসে, তাদের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করে, তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং তাদের লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করে। প্রিয়নবী (সা.) তাদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন ‘মুসলমানদের ওই বাড়ি সর্বোত্তম, যে বাড়িতে এতিম আছে এবং তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়। আর ওই বাড়ি সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যে বাড়িতে এতিম আছে অথচ তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়।

অতঃপর তিনি তার দুই আঙুলের দিকে ইশারা করে বলেন, আমি এবং এতিম প্রতিপালনকারী জান্নাতে এরূপ কাছাকাছি অবস্থান করব।’ (ইবনে মাজাহ)।

আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন ‘যে ব্যক্তি কোনো এতিম ছেলে বা মেয়ের মাথায় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে স্নেহের হাত বুলিয়ে দেয়,

মাথার যতগুলো চুলের ওপর দিয়ে তার হাতটি অতিক্রম করবে, সে পরিমাণ সওয়াব তার আমলনামায় জমা হবে। আর সে যদি এতিমের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করে, তাহলে এই দুই আঙুলের মতো আমি এবং সে জান্নাতে অবস্থান করব। অতঃপর তিনি তাঁর দুই আঙুল মোবারক মিলিয়ে দেখালেন।’ (মুসনাদে আহমদ)।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন ‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাক। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সেগুলো কী? তিনি বললেন ১. আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা; ২. জাদু করা; ৩. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা; ৪. সুদ খাওয়া; ৫. এতিমের মাল গ্রাস করা; ৬. যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা; ৭. সরল প্রকৃতির মোমিনা নারীদের প্রতি অপবাদ দেয়া।’ (বোখারি)।-তথ্যসূত্র: অনলাইন থেকে সংগৃহীত।

Check Also

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

In today’s fast-paced world, maintaining good health can seem overwhelming. But the truth is, a …