বর্তমান সময়ে চাকরি বা কাজ পাওয়া খুবই কঠিন। মান-সম্মত ভালো চাকরি বা কাজ পাওয়াতো আরো বেশি কঠিন। তা পেতে প্রায় সবাইকে অনেক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। আর বর্তমান সময়ে চাকরি তো এক দুঃস্বপ্নের নাম।
কেননা কর্মক্ষেত্রের তুলনায় চাকরি প্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি। তা দিন দিন বেড়েই চলছে।
তাই ভালো চাকরি বা কাজ পেতে যোগ্যতা অর্জনের পাশাপাশি কুরআনি আমলও করা যেতে পারে। এর জন্য রয়েছে একটি দোয়া ও তাসবিহ। আর তাহলো-
দোয়া رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
উচ্চারণ : ‘রাব্বি ইন্নি লিমা আংযালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিং ফাক্বির।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার প্রতি যে কল্যাণ নাজিল করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)
তাসবিহ
ভালো চাকরির নিয়তে দিনে যতবার খুশি মহান আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নামের আমল করা এবং বেশি বেশি পাঠ করা। يَا وَهَّابُ
উচ্চারণ : ‘ইয়া ওয়াহহাবু’
অর্থ : ‘কোনোরূপ প্রতিদান ব্যতীত অধিক দানকারী।’
হজরত শাহ আবদুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি রিজিকের প্রশস্ততার জন্য (ভালো কাজ বা চাকরির প্রত্যাশায়) চাশতের নামাজের সময় ১২ রাকাআত নামাজ পড়ে সিজদায় গিয়ে (يَا وَهَّابُ) ইয়া ওয়াহ্হাবু পবিত্র গুণবাচক নামের জিকির ১০০ বার অথবা ৫০ বার পাঠ করে। তবে অবশ্যই তার রিজিকের অভাব থাকবে না।
দোয়ার উৎস
কুরআনুল কারিমে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের একটি আকুতি ও আল্লাহর কাছে আশ্রয় লাভ ও কাজ অনুসন্ধানের আহ্বান উঠে এসেছে। কুরআনে সে ঘটনাটি এভাবে এসেছে-
মুসা আলাইহিস সালাম ফেরাউনের ঘরে থেকে বেরিয়ে আসার পর তার কোথাও যাওয়ার, আশ্রয়ের কিংবা জীবিকার কোনো সংস্থান ছিল না। সে সময় তিনি ফেরাউনের ঘর থেকে বেরিয়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলেন। আল্লাহ বলেন-
‘যখন সে মাদইয়ানের কূপের কাছে পৌঁছল। সেখানে দেখলো একদল লোক তাদের পশুগুলোকে পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের পিছনে দু’জন নারী তাদের পশুগুলোকে আগলে আছে। মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, তোমাদের কি হলো?
(দাঁড়িয়ে আছ কেন?) ওরা (নারী) বলল, রাখালরা ওদের পশুগুলোকে নিয়ে সরে না গেলে আমরা আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করাতে পারি না। আর আমাদের পিতা অতি বৃদ্ধ মানুষ।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৩)
এর পরের আয়াতেই মুসা আলাইহিস সালামের কাজ চেয়ে আল্লাহর মুখাপেক্ষী হওয়ার আবেদন এসেছে। আল্লাহ তাআলা মুসা আলাইহিস সালামে সে আহ্বান এভাবে তুলে ধরেন-
‘মুসা (আলাইহিস সালাম) তখন ওদের (দুই নারীর) পশুগুলোকে পানি পান করালো। তারপর সে ছায়ার নিচে আশ্রয় গ্রহণ করে বলল-
‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার জন্য যে কল্যাণ অবতীর্ণ করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী।’ অর্থাৎ আমার কাজ বা চাকরি দরকার, তুমি আমার জন্য যে কাজ বা জীবিকার ব্যবস্থা করবে। আমি তোমার ব্যবস্থা করা সে কাজের বা জীবিকার মুখাপেক্ষী।
ভালো চাকরি পেতে যে এ দোয়া কার্যকরী তা পরের ঘটনাতেই প্রমাণিত। আল্লাহ বলেন-
‘তখন (ওই) দুই নারীর একজন লজ্জাজড়িত পদে তার কাছে এসে বললো,
আপনি যে আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করিয়েছেন, তার পারিশ্রমিক দেয়ার জন্য আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন। অতঃপর মুসা আলাইহিস সালাম তার কাছে এসে সব ঘটনা বর্ণনা করলে সে বলল, ‘ভয় করো না।
তুমি জালিম সম্প্রদায়ের কবল থেকে বেঁচে গেছ। ওদের (দুই নারীর) একজন বলল, হে আব্বা! আপনি একে মজুর হিসেবে নিযুক্ত করুন। কারণ আপনার মজুর হিসেবে নিশ্চয় সে (মুসা) উত্তম হবে, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৫-২৬)
এভাবে হজরত মুসা আলাইহিস সালাম এ আহ্বানের ফলে আল্লাহর পক্ষ থেকে উত্তম কর্মক্ষেত্র ও জীবিকা লাভ করেছিলেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উত্তম কাজ বা চকরির জন্য উল্লেখিত দোয়া ও তাসবিহ এর নিয়মিত আমল করার তাওফিক দান করুন। ভালো চাকরি বা কাজ পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
৭টি গাভী দিয়ে শুরু, এখন মাসে আয় ৬ লাখ টাকা !
স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সাতটি গাভী দিয়ে খামার গড়ে তোলেন রিপন খান। বর্তমানে তার খামারে গাভীর সংখ্যা ৬০টি। এসব গাভী থেকে প্রতিদিন ৩০০ লিটার দুধ পান তিনি। দুধ বিক্রি করে মাসে তার আয় প্রায় ছয় লাখ টাকা। খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি তার খামারে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সফল খামারি রিপন খান পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ১নং ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়ন উত্তর শিয়ালকাঠি গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ফ্রিজিয়ান, জার্সি, শাহিওয়াল, সিন্ধি ও মুন্ডুুসহ বিভিন্ন জাতের সাতটি বিদেশি গাভী কিনে আনোয়ারা ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলেন তিনি।
স্নাতক পাস করে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে আনোয়ারা ডেইরি ফার্ম গড়েন রিপন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তার খামারে বিভিন্ন জাতের ৬০টি গাভী রয়েছে। তার খামারে শ্রমিকের সংখ্যা সাতজন। শ্রমিকদের বেতন আর গাভীগুলোর নিয়মিত খাদ্যদ্রব্যের খরচ বাদ দিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো আয় হয় রিপনের।
শিয়ালকাঠি গ্রামের বৃদ্ধ আ. বারেক বলেন, কৃষিকাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে দেশি গরু দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশি গরুর দুধ, চাষাবাদ এবং অন্যান্য উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা।
এ অবস্থায় কয়েকটি বিদেশি গাভী দিয়ে ফার্ম গড়ে রিপন। এখন তার খামারে অনেক গরু। প্রচুর দুধ পায় রিপন। তার গরুর দুধে আমাদের এলাকার চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকায়ও যায়।
এ বিষয়ে খামারি রিপন খান বলেন, সাতটি গাভী দিয়ে খামারটি গড়ে তুলি। বর্তমানে খামারে ৬০টি গাভী রয়েছে। প্রতিদিন ৩০০ লিটার দুধ পাই। প্রতি লিটার দুধ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। সে হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার টাকার দুধ বিক্রি হয়। বলতে পারেন মাসে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকার দুধ বিক্রি হয়। গাভীর খাবার, বিভিন্ন জিনিসপত্র, ওষুধ এবং শ্রমিকদের বেতন দিয়ে মাসে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো লাভ থাকে।
তিনি আরও বলেন, ছোট পরিসরে শুরু করলেও এখন খামারটি বড় করা জরুরি। কারণ ৬০টি গাভী এখানে রাখা কষ্টকর। তাই খামারটি বড় করার চেষ্টা চলছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খামারটি আরও সমৃদ্ধ করতে পারতাম।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিয়ালকাঠি গ্রামে বড় একটি গাভীর খামার আছে বলে আমরা জেনেছি। আশপাশের এলাকায় ওই খামার থেকে দুধ সরবরাহ করা হয়। খামারটি গড়ে মালিক স্বাবলম্বী হয়েছেন। এটি যুবসমাজের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য এটি অনুকরণীয়।
খামারে নিত্যনতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে ব্যবসার উন্নতি করা যায়। শিক্ষিত যুবকরা এসব কাজে এগিয়ে এলে দেশের কৃষি ব্যবস্থাপনা আরও সমৃদ্ধ হবে। আমাদের পক্ষ থেকে খামারিদের সার্বিক সহায়তা দেয়া হবে।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online