ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘর্ষ, আহত ৩০

এবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাওর বেষ্টিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ১৪ নভেম্বর এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আহতদেরকে নাসিরনগর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোয়ালনগর গ্রামে মেঘনা-ভলভদ্র নদীর তীর থেকে ট্রলি দিয়ে মাটিকাটা নিয়ে নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের মাসুক মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার রফিক মিয়া লোকজনের প্রথমে বাদানুবাদ হয়। পরে এ নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে।

উত্তেজনার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন লাঠি, বল্লম, টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষে জড়িয়ে পরে। পরে থেমে অন্তত তিন ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে উপজেলার চাতলপাড় তদন্ত কেন্দ্রে থেকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ১৬ জনকে নাসিরনগর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পাঁচ জনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে নাসিরনগর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লা সরকার বলেন, এ ঘটনায় চার জনকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও পক্ষ মামলা দায়ের করতে থানায় আসেনি। তবে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

আড়াই লাখ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ছেলের শিক্ষকের সঙ্গে উধাও মা

এবার চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় দিনমজুর সিদ্দিক মৈশালের স্ত্রী গৃহবধূ জেসমিন বেগমকে নিয়ে মাদরাসার শিক্ষক সাইমুন সিরাজী উধাও হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী সিদ্দিক মৈশাল বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আজ সোমবার ১৪ নভেম্বর সকালে হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত শুক্রবার ১১ নভেম্বর গৃহবধূ জেসমিন বেগম ঘরে থাকা আড়াই লাখ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ সাইমুন সিরাজীর হাত ধরে পালিয়ে যায়। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সাইমুন সিরাজী। তিনি উপজেলার উত্তর চরভাঙ্গা কারীমিয়া নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক।

জানা যায়, জেসমিন বেগমের ছোট ছেলে ছাব্বির হোসেনকে এক বছর পূর্বে মুফতি সালমান সাকির পরিচালিত প্রতিষ্ঠান উত্তর চরভাঙ্গা কারীমিয়া নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করেন। সেই সুবাদে ছেলেকে আনা-নেওয়া ও খাবার দিয়ে আসার জন্য নিয়মিত মাদরাসায় যান জেসমিন। সেখান থেকেই মাদরাসার শিক্ষক সাইমুন সিরাজীর সঙ্গে সখ্যতা বেড়ে ওঠে তার।

এক পর্যায়ে অবৈধ পরকীয়ায় লিপ্ত হন তিনি। মাদরাসার শিক্ষক সাইমুন বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে জেসমিনের কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে গত ৫ নভেম্বর অভিযুক্ত জেসমিন বেগম ঘরে থাকা আড়াই লাখ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ সাইমুন সিরাজীর হাত ধরে পালিয়ে যায়।

এদিকে মাদরাসার পরিচালক মুফতি সালমান সাকি জানান, পরীক্ষা শেষে গত ৩ নভেম্বর থেকে মাদরাসা সাত দিনের জন্য বন্ধ দেওয়া হয়েছে। খোলার তারিখে সবাই উপস্থিত হলেও নূরানী বিভাগের শিক্ষক সাইমুন সিরাজী উপস্থিত হননি। তার ফোনে কল দিয়েও যোগাযোগ করতে পারিনি। পরে শুনেছি আমার মাদরাসার ছাত্র ছাব্বির হোসেনের মাকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। তবে তাকে খুঁজে পেলে থানা পুলিশের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি করব, ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত জেসমিন বেগমের স্বামী সিদ্দিক মৈশাল বলেন, আমার ছেলেকে প্রবাসে পাঠানোর জন্য টাকা জমিয়েছিলাম। সেই আড়াই লাখ টাকা নিয়ে সাইমুন সিরাজীর হাত ধরে আমার স্ত্রী অন্যত্র চলে গেছে। এনজিও থেকে কিস্তিতে টাকা উত্তোলন করে সেগুলোও নিয়ে গেছে। লম্পট সাইমুন সিরাজী ও জেসমিন বেগমকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি করছি।

এদিকে জেসমিন বেগমের বাবা লনি মিজি বলেন, আমার মেয়ে জেসমিন বেগম কোথায় আছে সেটা বলতে পারছি না। তবে শুনেছি নাতি ছাব্বির হোসেনের শিক্ষক সাইমুন সিরাজীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে অন্যত্র চলে গেছে। এরপর সে ফিরে এলেও আমরা তাকে মেয়ে হিসেবে পরিচয় দিবো না।

এ বিষয়ে হাইমচর থানা ইনচার্জ মো. আশরাফ উদ্দিন জানান, মাদরাসা শিক্ষক সাইমুন সিরাজী গৃহবধূ জেসমিন বেগমকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন গৃহবধূর স্বামী সিদ্দিক মৈশাল। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। আসামিদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

About admin

আমার পোস্ট নিয়ে কোন প্রকার প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন অথরা মেইল করতে পারেন admin@sottotv.com এই ঠিকানায়।