শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি কিনতে পারতেন সংসদ সদস্যরা। সেই সুবিধায় বিভিন্ন সংসদ সদস্যদের নামে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে ৫০টি বিলাসবহুল গাড়ি। তবে সংসদ না থাকায় সংসদ সদস্য পদমর্যাদা আর নেই। ফলে গাড়িগুলো বিনাশুল্কে ছাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগও নেই আর। ফলে গাড়িগুলো বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার (২৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এই তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, সাবেক এমপিদের নামে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে আটকে থাকা শুল্কমুক্ত গাড়ি ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না। ফেরত পাঠালে দেশ রাজস্ব হারাবে। তাই এই গাড়িগুলো বিক্রি করার শর্ত সহজ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৫০টি বিলাসবহুল গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর আগেই জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ফলে গাড়িগুলো এখন ছাড় নিতে হলে অন্তত ছয় কোটি টাকা করে শুল্ক দিতে হবে। এগুলোর আমদানি মূল্য পড়েছে কোটি টাকার মধ্যে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তারা বলেছেন, সংসদ সদস্য না থাকায় এখনও আর শুল্কমুক্ত গাড়ি ছাড়ের সুবিধা পাবেন না কেউ। এসব গাড়ি ছাড় নিতে হলে নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। তবে চার হাজার সিসির প্রতিটি গাড়িতে শুল্ক দিতে হবে ৮২৬% হারে।
তারা জানান, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের কয়েকদিন আগে কয়েকজন সংসদ সদস্য গাড়ি খালাস নিয়েছেন। এর মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদসহ কয়েকজন। তবে সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনসহ অনেক মন্ত্রী-এমপি গাড়ি ছাড় করাতে পারেননি।
কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক সুবিধার আওতায় বেশিরভাগ গাড়ি জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করা হয়েছে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগট মডেলের এসব গাড়ির ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি চার হাজার সিসি। সংসদ সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। এ ধরনের গাড়ির ওপর কর ৮১০% পর্যন্ত হতে পারে; তবে এমপিদের তা দিতে হয় না। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ির ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়নি।