বন্যার মধ্যেই কুমিল্লায় প্রাণ-আরএফএল’র একটি গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকায় অবস্থিত প্রাণ-আরএফএলের গুদামটিতে আগুন লাগে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করছে। কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গুদামটিতে আগুন লাগার খবরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হতে সময় লাগেব। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে পরে জানানো হবে।
বন্যাদুর্গত তিন জেলায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষ উদ্ধার করেছে কুমিল্লা সেনাবাহিনী
বন্যাদুর্গত জেলা ফেনী, নোয়াখালী এবং কুমিল্লার বুড়িচং ও চৌদ্দগ্রামে পানিতে আটকে থাকা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষকে উদ্ধার করেছে কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩৩ পদাতিক ডিভিশন। সেই সাথে সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে সেনাবাহিনী । এখনো অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তিন জেলায় এ উদ্ধার অভিযানের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী সূত্র। কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম বন্যাদুর্গত এলাকায় উপস্থিত থেকে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
এছাড়া প্রায় ২০ জন রোগীকে হেলিকপ্টারে করে ফেনী থেকে কুমিল্লা সিএমএইচ হাসপাতালে এনে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একজন প্রসূতিও রয়েছে। তিনি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। মা ও ছেলে দুইজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে সেনাবাহিনী সূত্র জানিয়েছেন।
বন্যার্ত সহযোগিতা করতে টিএসসিতে ‘গণ ত্রাণ’ সংগ্রহ, উপচে পড়া মানুষের ঢল
বন্যার্তদের সহযোগিতা করতে ‘গণ ত্রাণ’ সংগ্রহ এবং হলে হলে শিক্ষার্থীরা নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। কাপড় থেকে হলে হলে আর্থিক সহযোগিতা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গণ ত্রাণ সংগ্রহ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবকরা।
শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) বিকাল পাঁচটায় টিএসসি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ছাত্র-জনতার দেয়া ত্রাণে টিএসসির ভিতরের কাফেটেরিয়া, গেমস রুম ভর্তি হয়ে গেছে। এখন ক্যাফেটেরিয়ার বারান্দা ও টিএসসি অডিটোরিয়ামে রাখা হচ্ছে এসব ত্রাণ। নগদ অর্থও গ্রহণ করা হচ্ছে এ কর্মসূচিতে।
টিএসসিতে ত্রাণ দিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভিড়ও ছিল বেশ চোখে পড়ার মতন। সকল পেশাজীবী যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী ভলান্টিয়ারদের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেন। মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট, স্যালাইন খেজুর সহ যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী শুকনা খাবার ত্রাণ হিসেবে দিয়ে যাচ্ছেন। কেউ স্যানিটারি ন্যাপকিন দিচ্ছেন। আবার কেউবা নগদ অর্থ দিচ্ছেন। বুথে বসা শিক্ষার্থীরা খাতায় অনুদানের অঙ্ক লিখে টাকা জমা রাখছেন। এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে অনলাইনেও ত্রাণ উত্তোলনের কাজ করছেন।
এদিকে দুপুর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হলে শিক্ষার্থীদের জামা-কাপড় সংগ্রহ করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যার্তদের জন্য জামা-কাপড় দিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে পুরোনো কাপড়গুলো ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে ফ্যানেও শুকিয়ে প্রস্তুত করে গুছিয়ে রাখছেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট ) দিবাগত রাত একটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার জানান, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত নগদ ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৩ টাকা সংগ্রহ হয়েছে।