ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও মহানগর ডিবির সাবেক প্রধান ও ডিএমপির ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স হারুন অর রশিদ ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
রোববার (১৮ আগস্ট ) তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।এর ফলে এখন থেকে ডিবি হারুন ও তার পরিবারের সদস্যরা ব্যাংক থেকে আর কোনও টাকা তুলতে পারবেন না। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এক মাসের জন্য অ্যাকাউন্ট স্থগিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিএফআইইউ’র চিঠিতে বলা হয়েছে, হারুন ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তার এবং তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে কোনও হিসাব থাকলে তাও স্থগিত করতে হবে।
এছাড়া হারুন, তার স্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের (মা, বাবা, ভাই ও বোন) নামে পরিচালিত সব ধরনের হিসাব সংক্রান্ত তথ্য বা দলিলাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি দালিলাদি, লেনদেন বিবরণী প্রভৃতি) এবং প্রদত্ত তথ্য-শিট মোতাবেক তথ্যাদি পত্র ইস্যুর তারিখ থেকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
আছাদুজ্জামান-হারুনের অবৈধ সম্পদের তদন্তে দুদক
সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ এর আগে ডিবিপ্রধান হিসেবে বেশ সমালোচিত হয়েছেন। সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে খাবার খাওয়ান হারুন। এরপরেই তাদেরকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করেন তিনি। এ ঘটনায় হাইকোর্ট থেকে হারুনকে ভর্ৎসনা করে বলা হয়— এসব তামাশা বন্ধ করতে।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুদক সূত্রে জানা যায়, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ জুন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদের অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী, একজন সচেতন নাগরিক এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। গত ১৬ জুন দৈনিক মানব জমিন পত্রিকায় ‘মিয়া সাহেবের যত সম্পদ’, ২০ জুন দৈনিক পত্রিকায় ‘এবার আলোচনায় আছাদুজ্জামান মিয়ার বিপুল সম্পদ’ এবং ২১ জুন আরেক দৈনিক পত্রিকায় ‘আছাদুজ্জামানের কত সম্পদ?’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, জাতীয় দৈনিকের পাতা জুড়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও অনুসন্ধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বিষয়টি দুদকের নিষ্ক্রিয়তা, যেখানে প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। অতএব এ বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধানের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।