আমি বিএনপি করায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ডিবি হারুন: যুবদল নেতা

সালটা ছিল ২০১৭ মে মাসের ২৬ তারিখ। গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার হারুন ও তার দোসরদের জুলুম ও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য রমজান আলী । হারুনের অর্থদণ্ড ও বীভৎস নির্যাতনের কথা মনে পড়লে এখনও শিউরে ওঠেন তিনি। ভেতরে অস্থিরতা পেয়ে বসে, কেঁদেও যেন মেলে না স্বস্তি।

রমজান আলী গাজীপুর সদর উপজেলা মির্জাপুর ইউনিয়ন তালতলী গ্রামের মরহুম আকবর আলির ছেলে। গাজীপুর জেলা যুবদলের সদস্য ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। শুধু বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত বলেই হারুনের ভয়াবহ নির্যাতন সইতে হয় তাকে।

তিনি জানান, গাজীপুরের মনিপুর পিরুজালী রোড (তারেক জিয়া মোড়) সংলগ্ন গাড়িতে আগুন দেয়ার মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের সাজানো মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ বিএনপির ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে নাশকতা মামলায় ৩ নম্বর আসামি করে। এই মামলার সূত্র ধরেই হারুন আমার ওপর নিষ্ঠুরতা শুরু করে।

হারুনের নির্দেশে তারই পেটোয়া বাহিনী দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নেয়। বিভিন্ন মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে দশ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চোখ বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। কে-বা বলছে স্যার ওকে সুট করে জঙ্গলে ফেলে দিন। আমি ভয়ে কুঁকড়ে যায়। পরবর্তীতে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাতেই পরিবারের সাথে কথা বলে সাড়ে তিন লাখ টাকা আদায় করে। কিন্তু আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, পরদিন সকালে আমাকে নেয়া হয় সাবেক জয়দেবপুর থানায়। সেখানে পুনরায় চলে নির্যাতন। বলে তোকে হারুন স্যার দেখতে চেয়েছেন চল তোকে হারুন স্যার সাইজ করবে কারণ স্যারের বদলির খবর শুনে মনিপুর বাজারে মিষ্টি বিতরণ করিস এবং বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে

আরও দুই লাখ টাকা আদায় করে ডিবি হারুনের পেটোয়া বাহিনী। পরে আদালতে সোপর্দ করলে ৪৫ দিন কারাভোগ করে জামিনে বের হই। সেই বছরের ৭ নভেম্বর রাতে আবারও বাসা থেকে তুলে আনা হয় আমাকে । রাখা হয় হোতাপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে। আরও একটা নাশকতা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে দুই লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দিলেও মামলা থেকে রেহাই মেলেনি।

পরবর্তীতে ২০২৩ সালে ২৬ অক্টোবর আমাকে গ্রেফতার করে আনা হয় বর্তমান হোতাপাড়া জয়দেবপুর থানায় এবং পূর্বে রুজু করা একটি নাশকতা মামলার আসামি করে আদালতে প্রেরণ করে। পরে ৮৫ দিন জেলে থাকার পর জামিনে বের হই। এখনো নির্যাতনের ক্ষত ও ৭টি রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা কাঁধে নিয়ে একরকম মানসিক যন্ত্রণা নিয়েই বেঁচে আছি।

রমজান আলী মেম্বার বলেন, বিএনপি করার কারণে হারুন আমার মতো অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন করেছে। নির্যাতন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমি এই ডিবি হারুন ও তার পেটোয়া বাহিনী যারা নির্যাতন করেছে তাদের বিচার দাবি করছি।

Check Also

এক টুকরো কাপড়ের জন্য আমাদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিচ্ছে: মুসকান

ভারতের কর্নাটকের মাণ্ড্য প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজ প্রাঙ্গনের একটি ভিডিও নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, হিজাব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *