চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন যুবলীগের দুই নেতা। তারা হলেন- মোহাম্মদ আনিস (৩৮) ও মাসুদ কায়সার (৩২)। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার অনন্যা আবাসিক এলাকায় অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আনিস ও কায়সার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে হেঁটে যাচ্ছিলেন। নাহার কমিউনিটি সেন্টারের কাছে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আনিস। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে কায়সার সুপারিপাড়া এলাকায় গেলে সেখানে আবারও তাকে গুলি করলে তার মৃত্যু হয়। পুলিশের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড।
জানা যায়, কায়সার ও আনিসের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম কুয়াইশ এলাকায়। তারা দুজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং স্থানীয় রাজনীতিতে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস গণি চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
শিকারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তারা দুইজনই আমার এলাকায় মানুষ। আনিস আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং মাসুদ যুবলীগের সদস্য।
এ বিষয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় সিনহা জানান, নাহার গার্ডেনের সামনে দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে আনিস ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং কায়সার হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। তবে কি নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে তা এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি।
জাতিসংঘকে জুলাই-আগস্টের সহিংসতা তদন্তের অনুরোধ ড. ইউনূসের
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের শীর্ষ নির্বাহী ভলকার তুর্ককে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। সেই সঙ্গে গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সহিংসতার যত ঘটনা ঘটেছে, সেসবের আনুষ্ঠানিক তদন্তের অনুরোধও করেছেন তিনি।
ভলকার তুর্ক এই আমন্ত্রণকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে নিশ্চিয়তা না দিলেও আনুষ্ঠানিক তদন্তের ইস্যুতে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে এসব তথ্য।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক শিক্ষার্থী-জনতা আন্দোলনে ঘটা সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করতে গত ২২ তারিখ মানবাধিকার হাইকমিশন কার্যালয়ের একটি টিম ঢাকায় এসেছিল। মানবাধিকার হাইকমিশনের এশিয়া-প্যাসিফিক শাখা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রধান ররি মঙ্গোভেন ছিলেন এই টিমের নেতৃত্বে।
সে সময় জাতিসংঘের বাংলাদেশ শাখা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা সে সময় রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, এই টিমের মূল লক্ষ্য সহিংসতার তদন্ত নয়, বরং বরং পর্যালোচনা এবং এসব সহিংসতার ঘটনা কীভাবে তদন্ত করা হবে— সে বিষয়ক নির্দেশনা বা গাইডলাইন প্রদান করা।
বাংলাদেশ শাখা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “তাদের মূল লক্ষ্য কিন্তু সহিংসতার তদন্ত নয়, বরং পর্যালোচনা এবং এসব সহিংসতার ঘটনা কীভাবে তদন্ত করা হবে— সে বিষয়ক নির্দেশনা বা গাইডলাইন প্রদান করা।”
সাত দিন ঢাকায় অবস্থানের পর গতকাল ২৯ নভেম্বর বিদায় নিয়েছে জাতিসংঘের টিম। ঢাকায় অবস্থানকালে টিমের সদস্যরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী বিভিন্ন গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে শুক্রবারের বিবৃতিতে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন।