সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাদের রিমান্ডে দেয়া হয়। সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমান এ আদেশ দেন।
এদিন কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে, রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করে আসামিপক্ষ।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করলে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমান তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে চতুর্থ দফায় তাদের রিমান্ডে দেয়া হলো।
গত ১৩ আগস্ট নৌপথে পালানোর সময় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তিন দফায় তাদের ২৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। সবশেষ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে ইউনূস-মোদির বৈঠক হচ্ছে না
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাঝে কোনও বৈঠক হবে না।
আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে, একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে বৈঠক করার কথা থাকলেও, মোদি ও ইউনূসের মধ্যে কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে না। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্থান টাইমসের।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যান্য বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করলেও ইউনূসের সঙ্গে মোদির সাক্ষাতের কোনো পরিকল্পনা নেই।
হিন্দুস্তান টাইমসের দাবি, এই মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে তা দূর করতে সাহায্য করবে এই আশায় ঢাকা এই বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহী।
এরই মধ্যে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তার ভারতে অবস্থান নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান এবং এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে থাকা মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের কাছে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ এবং তার বিভিন্ন বিবৃতির প্রসঙ্গও একাধিকবার তুলে ধরেছেন। এই পরিস্থিতিতে, ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন এবং কলকাতার ডেপুটি হাই কমিশনে কর্মরত হাসিনা সরকারের দুই কূটনীতিককে বরখাস্ত করেছে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
এছাড়াও, হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট প্রত্যাহার করার ফলে তিনি কতদিন ভারতে অবস্থান করতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি, জামাতে ইসলামি ও হেফাজতে ইসলামের মতো দলগুলোর প্রভাব নিয়ে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন। জাতিসংঘের সাধারণ সভায় বক্তৃতা দেয়ার পাশাপাশি তিনি কোয়াডের শীর্ষবৈঠকেও অংশগ্রহণ করবেন এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেবেন। তবে, বাংলাদেশের নতুন সরকারের প্রধানের সঙ্গে তার কোনো বৈঠক হবে না বলে জানা গেছে।