পাকিস্তানকে ধবলধোলাই, যা বললেন মাশরাফি

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে স্বাগতিক পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। যদিও এর আগে এশিয়ার দেশটির বিরুদ্ধে কোনো টেস্ট ম্যাচ জয়েরও রেকর্ড ছিল না টাইগারদের। এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তে টাইগারদের অভিনন্দন জানাতে ভুললেন না সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।

নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে অভিনন্দন জানিয়ে মাশরাফি লিখেছেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়! অভিনন্দন বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন লাভ ইমোজি।

পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দুটিতেই দাপুটে ও গৌরবময় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জনের ২৪ বছর পর এই সিরিজেই এলো পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়।

১০ উইকেটের বিশাল জয়ের পর এবার দ্বিতীয় টেস্টেও এলো অসামান্য এক জয়। দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমরা ঠিকই দলকে নিয়ে যান ১৮৫ রানের ল্যান্ডমার্কে।

এর আগে চতুর্থ দিনে পেসারদের দাপুটে পারফরম্যান্সের পর জয় ছিল সময় আর ধৈর্য্যের ব্যাপার। ৫ম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শেষ দিনে টাইগার ব্যাটারদের ধৈর্য্য আর ‘কমিটমেন্টে’র সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই। আবরার আহমেদের বলে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব। পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে।

পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের

এর আগে কখনো পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। গতকাল রাতেই আশা ছিল আজ সেই স্বপ্ন সত্যিপূরণ হবে। স্বপ্ন সত্য হলো বাংলাদেশের। প্রথম টেস্টে জয়ের পর পাকিস্তানের মাটিতে স্বাগতিকদের দ্বিতীয় টেস্টে হারিয়ে ২-০ তে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।

পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট এলেই বাংলাদেশের স্মৃতিতে উঠে আসে মুলতান টেস্টে হারের স্মৃতি। দীর্ঘদিন পর সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির প্রথম টেস্ট। ১০ উইকেটের জয় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার বাংলাদেশকে দিয়েছে টেস্টে পাকিস্তানকে হারানোর স্বাদ। এবার দ্বিতীয় টেস্টেও এলো অসামান্য এক জয়। দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমরা ঠিকই দলকে নিয়ে যান ১৮৫ রানের ল্যান্ডমার্কে।

চতুর্থ দিনে পেসারদের দাপুটে পারফরম্যান্সের পর জয় ছিল সময় আর ধৈর্য্যের ব্যাপার। ৫ম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এসে এলো সেই ক্ষণ। শেষ দিনের টাইগার ব্যাটারদের সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই। পাকিস্তানও ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে।

বাংলাদেশ দিন শুরু করেছিল ১৪৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে। ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটি থেকে এদিন যোগ হলো আরও ১৪ রান। দলীয় ৫৮ রানে জাকির আর ৭০ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান। দুই ওপেনার মিলে ১০ ওভারে রান তুলেছেন পার করেছেন ৫০ এর মার্ক। এরপরেই অবশ্য বিপত্তি। মির হামজার বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন জাকির। জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমান। মিডঅফে আলতো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন শান মাসুদের হাতে। খুররাম পেয়েছেন নিজের প্রথম উইকেট।

অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আর মুমিনুল এরপর খেললেন নিখুঁত টেস্ট ইনিংস। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে শুরুতে খানিক কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই নিজেদের খুঁজে পেয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়ক। ২০ ওভার খেলে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। ম্যাচটাও ততক্ষণে পাকিস্তানের নাগালের অনেকটা বাইরে।

লাঞ্চের পর শান্ত পারেননি নিজের ইনিংস বড় করতে। সালমান আঘার বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। করেছেন ৩৮ রান। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে তখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন এখন ৫৮ রান।

সেখান থেকে এরপর আর ফিরতে হয়নি বাংলাদেশের। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে বাংলাদেশকে নিয়ে গেলেন জয়ের আরও কাছে। মুমিনুল ফিরলেও সাকিব আল হাসান এসেছিলেন জয় করতে। তাতে বাংলাদেশ আবারও পেল দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ছিল বিদেশে সিরিজ জয়ের স্মৃতি। এবার তাতে যুক্ত হলো পাকিস্তানের নাম।

গতকালের দিনটাই মূলত ভিত গড়ে দেয় জয়ের। তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে হাসান মাহমুদ তুলে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ২১ রানের লিড থাকলেও ব্যাকফুটেই ছিল পাকিস্তান। ৪র্থ দিন বাংলাদেশের পেসাররা ঝরালেন আগুন। নাহিদ রানার গতির সামনে অসহায় পাকিস্তানের টপ আর মিডল অর্ডার। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং স্পেল উপহার দিলেন। সঙ্গ দিলেন হাসান মাহমুদ নিজেও। দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান আর সালমান আঘাকে ফিরিয়েছেন। ১৭২ রানে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১৮৫ রান।

এর আগে লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম ইনিংসে গড়া ১৬৫ রানের বিশ্বরেকর্ড জুটিটাও টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের পালে দিয়েছে বাড়তি হাওয়া। টেস্ট ক্রিকেটে ৫০ এর আগে ৬ উইকেট হারানোর পর ৭ম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড ১৬৫ রানের জুটি গড়েন দুই টাইগার ব্যাটার। লিটন পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। প্রথম ইনিংসের পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ গিয়েছিল ২৬২ পর্যন্ত।

১২ রানে পিছিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের ম্যাচে ফিরতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। গ্যালারিতে বাংলাদেশের পতাকা উড়েছিল সিরিজের শুরু থেকেই। শেষ পর্যন্ত সিরিজ শেষে উঁচুতেই থাকলো লাল-সবুজের সেই পতাকা।

আন্দোলনে নিহত আজিজের দেনমোহর পরিশোধ করল জামায়াত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টস কর্মী আব্দুল আজিজের স্ত্রীর এক লাখ টাকা দেনমোহর পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুরের নকলা উপজেলা শাখার আমির গোলাম সারোয়ার নিহতের স্ত্রী হোসনা বেগমের হাতে বিয়ের কাবিন বাবদ দেনমোহরের এ টাকা তুলে দেন।

এ সময় জামায়াত নেতা আতিক আলম, নারায়ণখোলা কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ইমরান হোসেন সবুজসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নকলা উপজেলার ৮ নম্বর চরঅষ্টধর ইউনিয়নের মৃত মোজাম্মেল হকের মেঝো ছেলে ছিলেন আব্দুল আজিজ (৩০)। জীবিকার তাগিদে গাজীপুরের বাসন থানা এলাকার টেক্সইউরোপ বিডি লিমিটেড নামে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে তিনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত ১ জুলাই আব্দুল আজিজের সঙ্গে পারিবারিকভাবে একই গ্রামের হোসনা বেগমের একলাখ টাকা দেনমোহর সাব্যস্ত করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। তার লক্ষ্য ছিল আগস্ট মাসের বেতন ভাতা নিয়ে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করবে।

তবে এর আগেই গত ৫ আগস্ট গাজীপুরে তার কর্মস্থলের কাছে নিজ মোবাইলে আন্দোলনের ভিডিও করার সময় পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটে তিনি আহত হন। পরে তার এক সহকর্মীর সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ২ দিন চিকিৎসার পর ৭ আগস্ট আজিজের মৃত্যু হয়। পরের দিন ৮ আগস্ট জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্তানে তার লাশ দাফন করা হয়।

নকলা উপজেলা জামায়াতের আমির গোলাম সারোয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, স্ত্রী হোসনা বেগমের দেনমোহর ইসলামী শরিয়া মোতাবেক পরিশোধ করার বিধান রয়েছে। তাই শহীদ আব্দুল আজিজের কাবিনের এ দেনমোহর পরিশোধ করে তাকে দায়মুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে নিহত আব্দুল আজিজের পরিবারকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা ও জামায়াতে ইসলামীর শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী ব্যক্তিগতভাবে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে।

Check Also

Where Do Health Care Assistants Work? A Comprehensive Guide

Health care assistants play a crucial role in the medical field, offering hands-on care to …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *