হিটাচি ফ্রিজের সম্পর্কে বিস্তারিত এবং দাম জানুন ২০২৫

বর্তমান আধুনিক জীবনে ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর এমন এক যন্ত্র যা ছাড়া একদিনও কল্পনা করা কঠিন। বাজারে অসংখ্য ব্র্যান্ড থাকলেও হিটাচি (Hitachi) ফ্রিজ তার উন্নত প্রযুক্তি, দীর্ঘস্থায়ীতা, এবং নির্ভরযোগ্যতার জন্য গ্রাহকদের মাঝে আলাদা স্থান করে নিয়েছে। জাপানি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় তৈরি এই ব্র্যান্ডের ফ্রিজ আজ সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

এই ব্লগে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো:

  • হিটাচি ব্র্যান্ড পরিচিতি
  • হিটাচি ফ্রিজের বিভিন্ন সিরিজ ও মডেল
  • প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য ও উদ্ভাবন
  • ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা ও রিভিউ
  • কেন হিটাচি ফ্রিজ কিনবেন?
  • হিটাচি ফ্রিজের দাম ও কোথা থেকে কিনবেন
  • রক্ষণাবেক্ষণ ও কেয়ার টিপস

হিটাচি ব্র্যান্ডের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

হিটাচি লিমিটেড (Hitachi Ltd.) ১৯১০ সালে জাপানে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম পুরাতন এবং বৃহত্তম ইলেকট্রনিকস কোম্পানিগুলোর একটি। হিটাচি মূলত ভারী যন্ত্রপাতি, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, তথ্যপ্রযুক্তি এবং নির্মাণ সামগ্রীর জন্য পরিচিত। হিটাচি ফ্রিজ তৈরি করে থাকে তাদের উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে, যা দীর্ঘ সময় ধরে খাবার সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে।

হিটাচি ফ্রিজের বিভিন্ন সিরিজ ও মডেল

হিটাচি বিভিন্ন ধরনের ফ্রিজ তৈরি করে, যা ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহারকারী ও প্রয়োজন অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে। নিচে কিছু জনপ্রিয় সিরিজ তুলে ধরা হলো:

১. French Door সিরিজ

এই সিরিজে সাধারণত চারটি দরজা থাকে এবং বড় পরিবার অথবা যারা বেশি পরিমাণ খাবার সংরক্ষণ করেন তাদের জন্য আদর্শ। ফিচার হিসেবে থাকে:

  • ইনভার্টার কম্প্রেসর
  • ভ্যাকুয়াম ফ্রেশ প্রযুক্তি
  • আইস মেকার
  • স্মার্ট টাচ কন্ট্রোল

২. Side-by-Side সিরিজ

দুইটি দরজা পাশাপাশি থাকে এবং এক পাশে ফ্রিজ এবং অন্য পাশে ফ্রিজার থাকে। আধুনিক কিচেনের জন্য একদম পারফেক্ট।

৩. Top Mount Freezer সিরিজ

এই সিরিজে ফ্রিজার থাকে উপরে এবং ফ্রিজ নিচে। সাধারণত মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে জনপ্রিয়।

৪. Bottom Freezer সিরিজ

যাদের রান্নাঘরে বেশি ফ্রিজিং প্রয়োজন হয় না, তাদের জন্য এই সিরিজটি বেশ আরামদায়ক, কারণ ফ্রিজ থাকে চোখের উচ্চতায়।

প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য ও উদ্ভাবন

হিটাচি ফ্রিজের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এটির উন্নত প্রযুক্তি। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচার আলোচনা করা হলো:

১. ইনভার্টার প্রযুক্তি

হিটাচির ফ্রিজে ব্যবহৃত ইনভার্টার কম্প্রেসর বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে এবং নীরবভাবে কাজ করে। এতে করে বিদ্যুৎ বিল কমে যায় এবং ফ্রিজ দীর্ঘদিন ভালো থাকে।

২. ভ্যাকুয়াম ফ্রেশ প্রযুক্তি

এই প্রযুক্তি খাবারের পুষ্টিগুণ এবং তাজা ভাব ধরে রাখে অনেকদিন পর্যন্ত। বিশেষত ফলমূল ও সবজির ক্ষেত্রে এটি খুব কার্যকর।

৩. Dual Fan কুলিং সিস্টেম

এটি ফ্রিজ এবং ফ্রিজার আলাদাভাবে ঠান্ডা রাখে, যাতে করে গন্ধ মিশে না যায় এবং প্রতিটি অংশে সমানভাবে ঠান্ডা পৌঁছে।

৪. Nano Titanium ফিল্টার

এই ফিল্টার খারাপ গন্ধ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে, ফলে ফ্রিজে সবসময় থাকে একটি সতেজ পরিবেশ।

৫. Smart Control Panel

এই প্যানেলের মাধ্যমে ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, মোড পরিবর্তন (eco, holiday), child lock ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যায়।

ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা ও রিভিউ

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় হিটাচি ফ্রিজ ব্যবহারকারীরা বেশ সন্তুষ্ট। নিচে কিছু সাধারণ মন্তব্য:

  • ইলেকট্রিক বিল কম আসে – ইনভার্টার প্রযুক্তির কারণে।
  • খাবার অনেক দিন ভালো থাকে – বিশেষ করে ফলমূল ও মাছ-মাংস।
  • ফ্রিজের ডিজাইন আকর্ষণীয় – মডার্ন কিচেনে দারুণ মানায়।
  • অপারেশন খুব নিঃশব্দ – রাতেও কোনো শব্দ হয় না।

কেন হিটাচি ফ্রিজ কিনবেন?

হিটাচি ফ্রিজ কেনার পেছনে কিছু যৌক্তিক কারণ রয়েছে:

  1. দীর্ঘস্থায়ীতা: হিটাচি ফ্রিজ সাধারণত ১০–১৫ বছর পর্যন্ত ভালোভাবে চলে।
  2. টেকসই ডিজাইন: ভেতরের পার্টস ও বাইরে কাঠামো খুবই শক্তপোক্ত।
  3. ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তি: স্মার্ট সেন্সর, ইকো মোড, এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ।
  4. পর্যাপ্ত স্পেস: খাবার গুছিয়ে রাখার জন্য পর্যাপ্ত তাক ও বক্স।

হিটাচি ফ্রিজের দাম ও কোথা থেকে কিনবেন

বাংলাদেশে দাম

হিটাচি ফ্রিজের দাম সাধারণত ৩০,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ২,০০,০০০ টাকার বেশি হতে পারে, মডেল ও সিরিজ অনুযায়ী। নিচে কিছু অনুমানিক মূল্য:

  • Top Mount Freezer – ৳৩৫,০০০–৳৬৫,০০০
  • Bottom Freezer – ৳৪৫,০০০–৳৮০,০০০
  • Side-by-Side – ৳৮০,০০০–৳১,৫০,০০০
  • French Door – ৳১,২০,০০০–৳২,২০,০০০

কোথা থেকে কিনবেন?

  • অফিশিয়াল শোরুম: হিটাচির নিজস্ব স্টোরে গেলে ওয়ারেন্টি ও অফারসহ ফ্রিজ কিনতে পারবেন।
  • অনলাইন স্টোর: Daraz, Pickaboo, Rangs eMart
  • ইলেকট্রনিকস দোকান: Walton Plaza, Transcom Digital, Best Electronics

রক্ষণাবেক্ষণ ও কেয়ার টিপস

যেকোনো যন্ত্রপাতির মতো হিটাচি ফ্রিজেরও যত্ন প্রয়োজন, যাতে এটি দীর্ঘদিন ভালো থাকে।

কিছু টিপস:

  • নিয়মিত ভিতরের তাক ও বক্স গুলো পরিষ্কার করুন।
  • একবারে খুব গরম খাবার রাখবেন না।
  • দরজা খোলার পর অপ্রয়োজনীয় সময় খোলা রাখবেন না।
  • বিদ্যুৎ সমস্যা থাকলে ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করুন।

আরও দেখতে পারেন, হিটাচি ফ্রিজের দাম ২০২৫-ফ্রিজটির সম্পর্কে

বর্তমানে ফ্রিজ বাসা বাড়ির পাশাপাশি বাণিজ্যিক পরিবেশে, দোকান, হোটেল, রেস্তোর সহ অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় । ফ্রিজ মূলত খাদ্যদ্রব্যকে দীর্ঘকালীন তাজা ও ঠান্ডা রাখার ক্ষমতা বহন করে। আপনি মানসম্মত ও লাক্সারি ফ্রিজ খুঁজলে আপনি হিটাচি ফ্রিজ ও হিটাচি ফ্রিজের দাম অবশ্যই দেখতে পারেন।

বাংলাদেশে হিটাচি ফ্রিজের দাম কত

বর্তমানে হিটাচি ফ্রিজের দাম বিভিন্ন ক্যাপাসিটি, ডিজাইন, গুণগতমান ,প্রযুক্তি ইত্যাদির ভিত্তিতে নির্ধারণ করে থাকে। বাংলাদেশে বর্তমানে হিটাচি রেফ্রিজারেটরের সর্বনিম্ন মূল্য ৬৮,০০০থেকে ৭০,০০০ হাজারের মধ্যে শুরু হয় যা একটি ২৩০ লিটার সম্পূর্ণ রেফ্রিজারেটর জন্য প্রযোজ্য। এছাড়াও 300 লিটার ক্যাপাসিটি সম্পূর্ণ হিটাচি ফ্রিজের জন্য এক লক্ষ(১,০০,০০০) টাকার বেশি লাগতে পারে।
তাছাড়া বাংলাদেশের ৬০০ লিটার করে বেশি ক্যাপাসিটি সম্পূর্ণ হিটাজি ফ্রিজের জন্য আপনাকে ১লক্ষ 85 হাজার থেকে ১ লক্ষ৯০ হাজার টাকা বা তার থেকেও বেশি টাকা খরচ করতে হতে পারে।বাংলাদেশে হিটাচি ফ্রিজের দাম ও বর্তমান মূল্য তালিকা দেওয়া হল। বিস্তারিত দেখুনঃ-
  • Hitachi Rvg 610 PUC7 Inverter Refrigerator মডেলের বর্তমান মূল্য প্রায় 1,40,000 টাকা
  • Hitachi R-VGX440PUC9-GBK 365L Refrigerator মডেলের বর্তমান মূল্য প্রায় 105,000 টাকা
  • Hitachi R-H330PUC7 230L refrigerator মডেলের বর্তমান মূল্য প্রায় 70,000 টাকা
  • Hitachi R-S700PUCO-GBK 605L NOn Frost Refrigerator মডেলের বর্তমান মূল্য 189,000 টাকা
  • Hitachi Refrigerator R-V490P8PB(BBK) মডেলের বর্তমান মূল্য 104,000 টাকা
  • Hitachi Refrigerator R-S800PBO(GBK) মডেলের বর্তমান মূল্য 248,000 টাকা
  • Hitachi Refrigerator R-WB640VOPB(GBK)মডেলের বর্তমান মূল্যমডেলের বর্তমান মূল্য 275,000 টাকা
  • Hitachi Refrigerator R-H350P7PBK(BBK) মডেলের বর্তমান মূল্য86,500 টাকা
  • Hitachi Refrigerator R-W690P7PB(GBk)Water Dispenser মডেলের বর্তমান মূল্য 219100 টাকা
  • Hitachi Refrigerator R-M820VAG9PBX(GBK) মডেলের বর্তমান মূল্য 51730 টাকা
  • Hitachi Refrigerator R-VG420P8PB(GBK) মডেলের বর্তমান মূল্য103,000 টাকা।

Hitachi Rvg 610 PUC7 Inverter Refrigerator এই মডেলের ফ্রিজটিতে সব চমৎকার ফিউচার বিদ্যমান আছে। তাছাড়া এই ফ্রিজটি একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ফ্রিজ। অনেক বড় জায়গা ও স্পেসের জন্য ফ্রিজটির চাহিদা অনেক।ফ্রিজটির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ও ফিউচার সম্পর্কে জানুনঃ-

  • নীট ভলিয়মঃ ফ্রিজের অংশঃ৫১০ লিডার ও ডিপ অংশঃ১৪৫ লিটার
  • ন্যানো টিটানিয়াম টেকনোলজি
  • টাচ স্কিন কন্ট্রোলার
  • ইনভার্টার কম্প্রেসার
  • সেন্সর কন্ট্রোলিং সুবিধা রয়েছে
  • ডুয়াল ফ্যান কুলিং সিস্টেম
  • এর বর্তমান মূল্য=১,৪০,০০০

হিটাচি ফ্রিজ কেন নিবেন জানুন

হিটাচি রেফ্রিজারেটর একটি উন্নত প্রযুক্তির রেফ্রিজারেটর সিস্টেম। যা আপনাকে দীর্ঘ সময় খাবার সতেজে রাখতে সক্ষম করবে অনায়াসে। এছাড়াও এর একটি বিশেষ ফিউচার হল রেফ্রিজারেটরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা প্রয়োজন অনুসারে কমানো বাড়ানো যায়। হিটাচির রেফ্রিজারেটর আকর্ষণীয় ডিজাইনের সাথে প্রদর্শিত হয় যা আমাদের বাসা বাড়ির অভ্যন্তরের মানানসই।
শক্তিশালী আন্টি ব্যাকটেরিয়াল ডিওডোরাইজার প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে হিটাচি রেফ্রিজারেটরে যা রেফ্রিজারেটরের মধ্যকার খাবার কে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে। তাছাড়াও হিটাচি রেফ্রিজারেটরের এই ডিওডোরাইজার প্রযুক্তির কারণে ভিতরে গন্ধ তৈরি হয় না এবং মধ্যকার বাতাস সতেজ থাকে
ডাবল ডোর এবং সিঙ্গিং ডোর অনুসারে বিভিন্ন ক্যাপাসিটির রেফ্রিজারেটর বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। হিটাচি রেফ্রিজারেটরের সাথে নির্দিষ্ট সময়ের পার্টস এবং সার্ভিস ওয়ারেন্টি থাকে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হিটাচি রেফ্রিজারেটর কোন প্রকার সমস্যা হলে কোম্পানি পক্ষ তা বিনামূল্যে রেফ্রিজারেটর পার্ট পরিবর্তন অথবা সার্ভিসিং সুবিধা প্রদান করে থাকে।
হিটাচি রেফ্রিজারেটর উন্নত গুণগত মানের উপাদান দ্বারা তৈরি করা হয় তাই এই রেফ্রিজারেটর দীর্ঘদিন অনায়াসে ব্যবহার করা যায় রেফ্রিজারেটর ব্যবহারকারীদের রিভিউ অনুযায়ী এ রেফ্রিজারেটর ১৫ বছর ব্যবহার করার পরেও ভালো কর্ম ক্ষমতা প্রদান করে।

ফ্রিজ কেনার আগে যা জানা জরুরী

আমাদের দেশে কুরবানি ঈদ আসলেই ফ্রিজ কেনার ঢল নেমে পড়ে । এই সময়টাতেই আমাদের আমাদের দেশের প্রায় অনেক কেনাবেচা হয়ে থাকে। এই সময় মানুষ চেয়ে থাকে কখন একটু অফার আসবে আর কখন ফ্রিজ নিব। তাই আমরা আর জানবো ফ্রিজের বিভিন্ন খুঁটিনাটি ও দরদাম সম্পর্কেঃ-
ফ্রিজের আকারঃ-ফ্রিজের মাপ হয় আন্তর্জাতিক বাজারে লিটার হিসাবে। আর যার কারণে প্রায় সব দোকানে ফ্রিজের গায়ে মাপ দেওয়া থাকে লিটারের। তবে অনেকের প্রশ্ন থাকে “লিটার বুঝিনা”,কত সেপ্টি? আসলে সেপ্টি বলে কোন কথা নেই। কথাটি মূলত হবে এই যে(সিএফটি বা কিউবিক ফুট) এই শব্দটির লোকমুখের কারণে শব্দের বিবর্তন হয়ে গেছে। যার জন্য সবাই সেপ্টি বলে।
অনেক বিষয় বিবেচনা করার পর আমাদের ভাবতে হয় ফ্রিজ বড় নাকি ছোট কিনব। বাসায় সদস্য , বাজার করার অভ্যাস, খাবার সংগ্রহের মাত্রা ইত্যাদি এসব বিষয় বিবেচনা করে আমাদের ফ্রিজ নিতে হবে।তবে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে একটু বড় কেনা কেউ বুদ্ধিমানের মনে করে অনেকে। পরে  ভবিষ্যতে সদস্য সংখ্যা বাড়লে তা অভাব পূরন করবে।
একটি পরিবারে প্রায় তিন থেকে চারজন সদস্য গড়ে থাকে তাই এসব পরিবারের জন্য ২০০ লিটারের একটি ফ্রিজ যথেষ্ট। আবার পরিবারের সদস্য সংখ্যা যার থেকে ছয় জন হলে ৩৫০ লিটার পর্যন্ত নিতে পারে। তারপরও যদি না হয় সদস্য সংখ্যা আরো বেশি হয় তাহলে তাদের জন্য ৬০০ লিটার ফ্রিজ নেওয়া উত্তম।
ফ্রস্ট নাকি নন-ফ্রস্টঃ-“ফ্রস্ট” এই ধরনের ফ্রিজে মূলত বিদ্যুৎ খরচ সামান্য কম হয়। ফ্রিজের ভেতরে বরফ জমে থাকার কারণে বিদ্যুৎ না থাকলে ভেতরের খাবার চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ভালো থাকে। তবে মনে করে এর কারণে খাবার খাওয়ার এক ঘন্টা আগে তা বের করে রাখতে হবে এবং মাংস একেবারে বরফ পরিষ্কার করতে হবে।”নন-ফ্রস্ট” এর ক্ষেত্রে এইসব কোন ঝামেলা নেই আর বিদ্যুৎ খরচের পার্থক্যটাও খুব সামান্য।
ইনভার্টার নাকি নন ইনভার্টারঃ-একটি ফ্রিজের মূল যন্ত্র হলো কম্প্রেসার। ইনভার্টার ফ্রিজের কম্প্রেসার কখনো বন্ধ হয় না আর নন ইনভার্টার ফ্রিজের কম্প্রেসার ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা অনুযায়ী সক্রিয়ভাবে চালু হয় আবার বন্ধ হয়। আর এর কারণে নন ইনভার্টার এর বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয় আবার নন ইনভার্টার এর সঙ্গে ভোল্টেজ স্টাবিলাইজার কিনতে হয় আলাদাভাবে।
আবার ইনভার্টার ফ্রিজের দাম বেশি হল বিদ্যুৎ খরচ আর ভোল্টেজ স্টেবিলাইজারের দিক দিয়ে চিন্তা করলে বেশ সাশ্রয়ী।
যে বিষয়গুলো আরো জানা উচিতঃ-মানবদেহের রক্তের মত হলো ফ্রিজের গ্যাস। গ্যাস ভালো মানের না হলে ঠান্ডা হাওয়া, বিদ্যুৎ খরচ স্থায়িত্ব সবটাকে গোলমাল করে দেয়। ফ্রিজে প্রধানত দুই ধরনের গ্যাস চলে ‘আর ৬০০ এ’ এবং ‘আর ১৩৪ এ’। আর ৬০০ এ গ্যাসটি থাকলে সেই দুটো ঠান্ডা হয় ফলে বিদ্যুৎ খরচে সাশ্রয়ী হয়।
“আর ১৩৪এ” তার উল্টো। পুরনো ফ্রিজের গ্যাস ফুরিয়ে গেল আর ৬০০এ গ্যাস্টিক ফ্রিজে দেওয়া যেতে পারে। কনডেন্সার পাইপের দুই ধাতুর হয়, কপার এবং এ অ্যালুমিনিয়াম। অ্যালুমিনিয়াম কনডেন্সার পাইপ এসব দিক থেকে দুর্বল। যে কারণে অ্যালুমিনিয়ামের কনডেন্সার পাইপ যুক্ত ফ্রিজের বিদ্যুতের খরচ বেশি হয়।
ডিপ নিচে বস ওপরে থাকার বিশেষ কোনো উপকারিতা নেই।ডিপ উপরে হলে ফ্রিজের ওপরের দিকে ্স্যাত স্যাতে ভাব হয়ে যায়, ফলে ফ্রিজের উপরে কিছু রাখলে সেটা নষ্ট হয়ে যায়। ফ্রিজের প্লাগটা লাগানো হবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে শক্ত হয়ে লেগে থাকে কারণ হালকা টানে যাতে খুলে না যায় এতে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিরাপদ হবে।
মাঝে মাঝে বৈদ্যুতিক সংযোগে ভোল্টেজের কম বেশি হয় তাই ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার রাখতে হবে ওয়ান ডিলে “মোড”এ। ভোল্টেজ কম কিংবা বেড়ে গেলে তার ফ্রিজের উপর সরাসরি কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারবে না।
দরদামঃ-আমাদের দেশের প্রায় সব এলাকাতেই ফ্রিজে শোরুম আছে বাংলাদেশের দেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে ওয়ালটন সিঙ্গার বাটারফ্লাই ইকো প্লাস কনকা ইত্যাদি অনেক সুপরিচিত। অন্যদিকে বিদেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে আছে হায়ার , এলজি , স্যামসং ,হিটাচি ওয়ার্পুল ইত্যাদি। এসব ব্র্যান্ডের নিজস্ব শোরুম তো আছেই পাশাপাশি ডিলারদেরও আলাদা শোরুম রয়েছে।
বর্তমানে ক্রেতাদের চাহিদাতে এসব কোম্পানি ও শোরুম গুলো কিস্তিতে ফ্রিজ দিতে থাকে শোরুম গুলো। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ০ শতাংশ ইএমআই পাওয়া যাবে নূন্যতম ৬ মাস। বার মাসের জিরো শতাংশ ইএমআই হাতে গোনা কিছু ব্যাংকের কার্ডে পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে সিটি ব্যাংকের আমেক্স কার্ডটাই হবে বেশি কার্যকর।
ব্রান্ড ও আকাশ সর্বনিম্ন ১২০০০ টাকায় ওয়ালটনের ছয় সিএসটি এর একটা নন ফ্রস্ট , ইনভার্টার ফ্রিজ হওয়া সম্ভব। আবার অন্যদিকে ৪ লাখ টাকার উপরে চোখে পড়বে এসব শোরুম ও দোকানগুলিতে। ডিসপেন্সার গ্লাস ডোর ৪লা ৬ পাল্লা টাচ প্যানেল ফ্রিজের দরজার মাঝে ছোট আকারের একটা পান নিয়ে অফিস ইত্যাদি নানান মজার সব সুবিধা দেখা যাবে দামি ওই ফ্রিজ গুলোতে।

ফ্রিজ কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

আপনার মূলত বাজারে যেয়ে পছন্দ মতন ফ্রিজ কেনে আনি এবং অনেক সময় দেখা যায় যে ঘরের পছন্দের যে জায়গাটা রাখতাম সেই জায়গাটায় আর বসানো যাচ্ছে না। আবার অনেক সময় দেখা যায় অনেক ফ্যামিলির প্রথমে একটা সাধারণ ফ্রিজ কেনার পর সেটাতে চাহিদা মেটা না কারণে আরেকটি ডিপ ফ্রিজ কিনেছে ফলের প্রয়োজন হয় বাড়তি জায়গার।
আমরা সবাই প্রায়ই সময় নানান কারণে ফেইস কেনার আগে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে যাই চাহিদা অনুযায়ী কার কেমন ফ্রিজ লাগতে পারে সেই সেইসব বিষয় নিয়ে। আমরা যারা ব্যাচেলার আছি তারা অনেকেই জানতে চাই, ব্যাচেলারদের জন্য কোন ফ্রিজ নেওয়া উচিত? ব্যাচেলররা বেছে নিতে পারে নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ। যে ফ্রিজের ভিতরে সংরক্ষিত খাবারে বড় জমে না তাকে বলে নন ফ্রস্ট।
আবার অন্য দিকে ফ্রিজের ভেতরে সংরক্ষিত  খাবার যদি বরফ যমে যায় তাহলে তখন সেটাকে ফ্রস্ট ফ্রিজ বলে। নন-ফ্রস্ট জামাই না বলে যেকোনো সময় খাবার বের করে খাওয়ার উপযোগী হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই দ্বিধাদ্বন্ধে পড়ে যাই এই নিয়ে যে ফ্রিজ ঘরে কোথায় রাখব রান্নাঘরে নাকি বেডরুমে নাকি ড্রয়িং রুমে।
ফ্রিজ কেনার সময় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে কিনা এটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আবার অনেক সময় দেখা যায় বেশি সদস্যের পরিবারে থাকেন। তবে দুটি না কিনে ভালো হয় যদি শুরুতেই ডাবল সেন্টারে নেওয়া যায় তাহলে। তাকে যেমন ঘরের জায়গাও আছে তেমনি ফ্রিজের প্রয়োজনটাও মেটে। ফ্রিজে রাখার বড় হলে নিশ্চিন্তেই সবকিছু স্টোর করে রাখা যায় ভিতরে।
ব্যাচেলার কিংবা যাদের পরিবারের সদস্য কম, চাহিদা অনুযায়ী ছোট ফ্রিজ কিনে থাকেন তারা ।ফ্রিজ ছোট হলেউ স্টোরিংস করারউপর নির্ভর করে ফ্রিজের সর্বোত্তম ব্যবহার। শাকসবজি মাছ মাংস কেটে প্রক্রিয়া করে পরিপাটি ভাবে ফ্রিজে রাখুন । এতে করে অল্প জায়গায় অনেক কিছু এটে যাবে ।পরিবারের দুজনকে কখনো বাসার বাইরে কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকতে হয় ।
তখন অনেকেই একেবারে কয়েক দিনের খাবার রেঁধে ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করে থাকে সেই রান্না করা খাবার সংরক্ষণের জন্য ভালো মানের কন্টেইনার বেছে নিতে পারেন একটা বড় একটা ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে দাম ও বাড়তে থাকে।
বাজার ঘুরে দেখা যায় ,২৭৫ লিটারের স্যামসাং আরটি ২৯ ফ্রিজ তিন হাজার টাকা ছাড়ে সর্বনিম্ন ৫৯,৯০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। । ৩২১ লিটা.৭৫,৯০০ টাকা। হিটাচি ব্র্যান্ডের ৩৭৫ লিটারের হিটাচি ফ্রিজের দাম পড়বে এক লাখ ৬ হাজার ৪০০ টাকা। ২৩৪ লিটার ধারণক্ষমতার ওয়ার ফুল নিতে পড়বে ২০০০ টাকা ছাড়ে ৪০হাজার ৯৯০ টাকা। পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি হলে বড় ফ্রিজ নেওয়ার উত্তম।
সদস্য সংখ্যা বেশি হলে সে ক্ষেত্রে ৬৭০০ লিটারের ডাবল চেম্বারে স্যামস আর এস ৭২ মডেল ১০ হাজার টাকা ছাড়ে নেওয়া যাবে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯০০ টাকায়। ওয়ালটনের ফ্রিজের দাম পড়বে ১৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ .৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনটা ফ্রিজের দাম পড়বে ৩২ হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ 60 হাজার টাকা পর্যন্ত।

হিটাচি ফ্রিজ কেমন? – এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দিতে চাইলে বলা যায়: দারুণ! কিন্তু একটু বিশদে বললে:

হিটাচি ফ্রিজের ভালো দিকগুলো:

🔹 ১. টেকসই ও নির্ভরযোগ্য:

হিটাচি জাপানি ব্র্যান্ড, যেটার ফ্রিজ ১০-১৫ বছর পর্যন্ত আরামে চলে।

🔹 ২. বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী:

এর ইনভার্টার কম্প্রেসর প্রযুক্তি বিদ্যুৎ খরচ অনেক কমায়।

🔹 ৩. খাবার দীর্ঘ সময় টাটকা থাকে:

বিশেষত ভ্যাকুয়াম ফ্রেশ এবং ন্যানো টাইটানিয়াম ফিল্টারের কারণে ফলমূল, মাছ-মাংস অনেক দিন ভালো থাকে।

🔹 ৪. চুপচাপ চলে:

মেশিনে কোনো আওয়াজ থাকে না বললেই চলে – নিঃশব্দভাবে কাজ করে।

🔹 ৫. ডিজাইন ও স্পেস:

মডার্ন কিচেনের সাথে মানানসই ডিজাইন আর ভেতরে অনেক জায়গা – তাকগুলোও ব্যবহারবান্ধব।

❗ কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে:

  • দাম একটু বেশি অন্যান্য সাধারণ ফ্রিজের তুলনায়।

  • সব মডেলে আলাদা ফ্রিজার কন্ট্রোল বা আইস মেকার না-ও থাকতে পারে।

⚖️ তাহলে, কেমন?

যদি আপনি একটি টেকসই, বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী ও আধুনিক ডিজাইনের ফ্রিজ খুঁজছেন—তাহলে হিটাচি ফ্রিজ এক কথায় অসাধারণ।

হিটাচি ফ্রিজ কি জাপানের তৈরি?

হ্যাঁ, হিটাচি একটি জাপানি ব্র্যান্ড।
Hitachi Ltd. ১৯১০ সালে জাপানে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এখনো এটি একটি গ্লোবাল জাপানিজ কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃত।

তবে…

⚠️ সব হিটাচি ফ্রিজ সরাসরি জাপানে তৈরি হয় না।

বর্তমানে হিটাচি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে তাদের ফ্রিজ প্রোডাকশন করে থাকে, যেমন:

  • জাপান (প্রিমিয়াম/উচ্চমানের মডেল)

  • থাইল্যান্ড (বেশিরভাগ সাধারণ ও মিড-রেঞ্জ মডেল)

  • ভারত, মালয়েশিয়া, চীন – কিছু নির্দিষ্ট মডেল বা যন্ত্রাংশ এখানে তৈরি হয়

🧠 তাহলে মূল কথা:

  • ব্র্যান্ড: জাপানি (Hitachi Ltd.)

  • কারখানা: কিছু মডেল জাপানে, বাকিগুলো বিভিন্ন দেশে (কোয়ালিটি কন্ট্রোল সব হিটাচির)

  • বাংলাদেশে পাওয়া বেশিরভাগ হিটাচি ফ্রিজ: থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়াতে তৈরি

ভিডিওতে দেখুন Hitachi refrigerator update price in 2025🔥। Hitachi fridge | Hitachi fridge price in bangladesh 2025

উপসংহার

হিটাচি ফ্রিজ কেবল একটি ঘরোয়া যন্ত্র নয়, বরং এটি একটি আধুনিক জীবনধারার অংশ। এর প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব বৈশিষ্ট্য, এবং টেকসইতা একে অনন্য করে তুলেছে। যদি আপনি এমন একটি ফ্রিজ খুঁজছেন যা দীর্ঘমেয়াদে নির্ভরযোগ্য হয় এবং আধুনিক সুবিধা সম্বলিত হয়, তাহলে হিটাচি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।

আরও পড়ুন: এলজি ফ্রিজের দাম ২০২৫, ডিপ ফ্রিজের দাম ২০২৪, ছোট ফ্রিজের দাম, সবথেকে ছোট ফ্রিজের দাম কত, কম দামে ফ্রিজ ২০২৫, ফ্রিজ এর দাম, হিটাসি ফ্রিজ, সার্ফ ডিপ ফ্রিজ

Check Also

সিম কার নামে রেজিস্ট্রেশন জানব কীভাবে?

সিম কার নামে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে বা সিমের মালিক কে এই তথ্য অনেক সময় জানার প্রয়োজন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *