আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম বড় প্রকল্প চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল। অর্থনৈতিক করিডরের কথা চিন্তা করে এ প্রকল্প নেওয়া হলেও সেখানে বিনিয়োগের তেমন দেখা নেই। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে যে পরিমাণ গাড়ি চলাচলের কথা ছিল তার সিকি ভাগও সেখানে চলছে না। টানেল দিয়ে এখন পর্যন্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী যানবাহন চলছে না। ফলে টোল আদায় কম হচ্ছে। আয়ের চেয়ে টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় এখন পর্যন্ত বেশি।
সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাবে টানেল দিয়ে এখন পর্যন্ত দিনে গড়ে সাড়ে চার হাজারের কিছু বেশি যানবাহন চলাচল করেছে। পূর্বাভাস ছিল, এর অন্তত চারগুণ যানবাহন চলবে। টানেল থেকে টোল বাবদ দৈনিক গড়ে আয় হচ্ছে ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অন্যদিকে এই টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ দিনে ব্যয় গড়ে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে এ টানেলের মূল দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এটি দেশের নদীর তলদেশের প্রথম টানেল। চীনা ঋণ ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এ টানেল তৈরি করা হয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এখনো আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো যদি যাতায়াতের করিডর হিসেবে থেকে যায়, তাহলে অবশ্যই বড় শঙ্কার ব্যাপার ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে।
এ প্রকল্পগুলো যাতায়াত করিডর থেকে অবশ্যই অর্থনৈতিক করিডরে রূপান্তর করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক করিডর করতে হলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে। সেখানে শিল্পকারখানা ভারী কারখানা আমরা সুপরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা যদি সময়মতো না নিতে পারি, সেখানে বড় ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছি।’
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এত বড় বিনিয়োগ শুধু যাতায়াতের করিডর হওয়ার সুযোগ আমরা দেখছি না। এ প্রকল্পগুলোর ঋণ টাকায় না, আমাদের ডলারে শোধ করতে হবে। আমরা বিনিয়োগ না আনতে পারি, ডলার না আনতে পারি তাহলে অবশ্যই বড় ঝুঁকি আছে।’
হাদিউজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল করা হয়েছে মিরসরাই ও মাতারবাড়ীর মতো অর্থনৈতিক করিডরগুলো মাথায় রেখেই করা হয়েছে। এগুলো যদি সঠিক সময়ে চালু না করতে পারি, তাহলে এ বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়বে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।