ভ্যানে লাশের স্তূপের ভিডিও ভাইরাল, কোথায় আছেন সেই পুলিশ সদস্যরা

ভ্যানে লাশের স্তূপের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে নিহতদের। যাদের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ভিডিওটি ভাইরাল হবার পর ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন খোঁজ নেই সেই সব পুলিশ সদস্যদের।

ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও ও ছবি যারা দেখছেন, তারা সবাই শিউরে উঠছেন ভয়ে ও আতঙ্কে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে নির্বিচার গুলিতে গণহত্যার পর ভ্যানে তোলা কয়েকটি মরদেহের স্তূপের পাশে পুলিশকে হাঁটাহাঁটি করতেও দেখা গেছে। তাদের একজনকে ইতোমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে আত্মগোপনে চলে গেছেন ভিডিওচিত্রে থাকা পুলিশের সদস্যরা।

পরে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানায়, ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের ঘটনাটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে প্রতিষ্ঠানটি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভ্যানে কয়েকটি লাশ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আরেকটি লাশ ভ্যানে তুলে দিচ্ছে পুলিশ। পরে একটি পোস্টার দিয়ে লাশগুলো ঢেকে ফেলা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন পুলিশকে আশপাশে হাঁটাহাঁটি করতেও দেখা যায়।

রিউমর স্ক্যানার জানায়, লাশের স্তূপের বহুল আলোচিত ভিডিওটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার ঘটনা। ৫ আগস্ট বিকালে এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকেন এমন দুজন দাবি করেন, ভিডিওর দেয়ালে যার পোস্টার দেখা যায়, তিনি আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী আবুল হোসেন ভূঁইয়া।

জানা গেছে, দেয়ালের এই পোস্টার এখন আর নেই। ৫ অগাস্টের পরপরই সব দেয়ালে নতুন রং করা হয়েছে।

আশুলিয়ার একজন সাংবাদিক জানান, ভিডিওচিত্রটি আশুলিয়া থানার সামনে থেকে করা হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাই থেকে আন্দোলন করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে গুলি চালায় পুলিশ।

সালমানকে ধরিয়ে দেন আনিসুল, মুখভর্তি দাড়ি নিজেই কাটেন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও ভয়াবহ বেকায়দায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা। অনেকে সুযোগ বুঝে দেশ ছাড়তে পারলেও আটকে পড়া অনেক এমপি-মন্ত্রী।

তাদের মধ্যে দুজন হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তারা নৌপথে পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন মিয়ানমার-ভারত, সুবিধা করতে না পেরে বঙ্গোপসাগরে সাতদিন ভেসে ছিলেন। পরে গত ১৩ আগস্ট পালানোর সময় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা গ্রেফতার হন তারা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকার চারপাশের ভয়ংকর অবস্থা বুঝতে পারেন সালমান এফ রহমান। বিমানবন্দরসহ সব জায়গা থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে উত্তরার নিজের মালিকানাধীন একটি জুট মিলে যান। সেখানে গিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করতে মুখভর্তি সফেদ সাদা দাড়ি নিজেই কাটেন। সেখানে বেক্সিমতো গ্রুপে কর্মরত নৌবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে নৌপথে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেন। সেই কর্মকর্তাই মোটা অঙ্কের টাকায় তাকে ম্যানেজ করে দেন একটি ইঞ্চিনচালিত ট্রলার। রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়কের কাঞ্চন ব্রিজ এলাকা থেকে ওই ট্রলারে চড়েন সালমান। সঙ্গে নেন স্যাটেলাইট ফোন, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, প্রয়োজনীয় সামগ্রী। সঙ্গী হিসেবে ডেকে নেন তার ঘনিষ্ঠজন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে। নৌযানটি চলে যায় সোজা ভোলায়। যাওয়ার সময় মাঝ পথ থেকে সঙ্গে নেয়া হয় যাবতীয় খাদ্য ও জরুরি সামগ্রী।

টানা সাত দিন বঙ্গোপসাগরে ভাসতে থাকেন তারা। সুযোগ খুঁজতে থাকেন মিয়ানমার পাড়ি দেওয়ার। মাঝখানে ভারতে পাড়ি দিতে সুন্দরবনের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকার কাছাকাছি পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তবে পরিস্থিতি সুবিধাজনক মনে না হওয়ায় নৌকার সারেং ফের ফিরে আসেন ভোলা এলাকায়। সিদ্ধান্ত নেন মিয়ানমার পাড়ি দেবেন।

কোস্টগার্ড সদস্যরা শুরুতে সালমানকে চিনতে পারেননি বলে দাবি করেছেন সালমান। তিনি বলেছেন, শেভ করার পর তিনি নিজেই নিজেকে চিনতে পারছিলেন না। কোস্ট গার্ডের সদস্যরাও তাকে শুরুতে চিনতে পারছিলেন না। তারা প্রথমে আনিসুল হককে চিনে ফেলেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আনিসুলই কোস্ট গার্ডের সদস্যদের সালমানকে চিনিয়ে দেন।

গত ১৪ নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের দশ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।

About admin

Check Also

নিহত হয়েছেন হাসান নাসরাল্লাহ, নিশ্চিত করল হিজবুল্লাহ

হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংগঠনটি। একটি বিবৃতিতে, লেবাননের গোষ্ঠীটি ইসরায়েলি দাবির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *