শেখ হাসিনার সরকারে পতনের পর গ্রেপ্তার মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা ডিবি পুলিশের রিমান্ডে জেরার মুখে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্যও দিচ্ছেন তারা।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অবস্থা বেগতিক দেখে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিতে বলেছিলেন সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এনিয়ে সেদিন গণভবনে তুলকালাম হয় বলে জানান পলক।
ডিবি হেফাজতে থাকা আসামি সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকার পতনের একদফা অন্দোলনের শেষ পর্যায়ে ৪ আগস্ট গণভবনে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়।
সেখানে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, প্রয়োজনে তাকে (পলক) বলি দেওয়া হোক। তবুও শিক্ষার্থীদের অন্দোলন বন্ধ করা দরকার।
প্রধানমন্ত্রীকে ছাত্র-জনতার চোখের ভাষা, মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করতে বলেন পলক। সেসময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পলককে তেড়ে মারতে আসেন। তখন সাহসী হয়ে পলক প্রধানমন্ত্রীকে স্টেপ ডাউন করতে বলেন।
আওয়ামী লীগকে মানুষ ঘৃণা করছে, থুতু দিচ্ছে বলার পর পলককে গণভবন থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে রিমান্ডে জানান তিনি।
জুনাইদ আহমেদ পলক ডিবিকে জানান, স্মার্ট বাংলাদেশে গঠনে টেন মিনিট স্কুলের সঙ্গে ৫ বছর মেয়াদি সরকারের যে ৫ কোটি টাকার চুক্তি ছিল সেটা তিনি বাতিল করতে চাননি। জোর করে ওই চুক্তি বাতিল করান সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
কারণ টেন মিনিট স্কুলের অন্যতম কর্ণধার আইমান সাদিক অন্দোলনকারী ছাত্রদের পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তারা তাদের ফেসবুক প্রোফাইল লাল করেছিলেন।
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে পলক জানান, প্রধানমন্ত্রীকে বাস্তবতা মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তিনি মানতে রাজি হচ্ছিলেন না। এ সময় সংশ্লিষ্ট ডিবি কর্মকর্তা পলককে প্রশ্ন করেন, দেশের স্থিতিশীলতা চাইলে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেননি কেন? সে সময় নিশ্চুপ থাকেন পলক।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রিকশাচালক কামাল মিয়া। এ ঘটনায় পল্টন থানায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হন সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। নিরাপত্তার কারণে তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে রাখা হয়।