সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের ১০ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন আনসার সদস্যদের অনেকে। তাদের নেতারা আজ রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আন্দোলনের স্থগিতের ঘোষণা দেন। আনসারদের আন্দোলনের সমন্বয়ক নাসির মিয়াও ছিলেন সেখানে। তারপর রাত ৯টার দিকে জানা সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, তাদের ঘেরাও করে রাখা হয়েছে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রথমে রাজু ভাস্কর্য ও পরে সচিবালয়ে সব শিক্ষার্থীদের অগ্রসর হতে আহ্বান জানান। এরপরই হাজারও শিক্ষার্থী সেদিকে অগ্রসর হন। এ সময় তাদের ওপর বিভিন্ন পয়েন্টে হামলা চালান আনসার সদস্যরা। একপর্যায়ে প্রতিরোধ ভেঙে ছাত্রজনতার স্রোত এগিয়ে গেলে পালাতে শুরু করেন তারা। দৌড়ে পালানোর সময় অরেকে আহত হন। পরে ভয়ে অনেকে সচিবালয়ের গেটের পাশে ও আশপাশে লুকিয়ে থাকেন। এর আগে তারা জামা খুলে ফেলেন। তবে, প্যান্ট, জুতা ও অন্যান্য বিষয়াদী দেখে শিক্ষার্থীরা তাদের চিহ্নিত করেন। পরে আহতদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছে দেন।
তাদের সঙ্গে ঢামক হাসপাতালে যাওয়া আহত শিক্ষার্থীরাও অনেকে জানান, আনসার বাহিনীদের সঙ্গে মিশে ছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের পেটুয়া বাহিনী। তারাও পালিয়েছে। যদিও তারা নামধারী আনসার সদস্যদের হাতে মারই খেয়েছেন, কিন্তু কিছুই বলতে পারেননি। তবে, তাদের স্রোতের গতি এতটাই বেশি ছিল যে, সবাই পালিয়েছে। পরে আহত অনেক আনসার সদস্যদের তারা দেখতে পান। এসময় ভীত-সন্ত্রস্ত এসব আনসার সদস্যদের তারা হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।
সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত অন্তত ৩৫
সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আজ রাত পৌনে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
এর আগে আজ রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে ত্রাণের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় আনসারদের। সে সময়ই শিক্ষার্থীরা দাবি তোলেন, ষড়যন্ত্র চলছে। আর তারপর কর্মসূচি প্রত্যাহারের তথ্য পাওয়া গেলেও দেখা গেছে, আনসার সদস্যরা সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটকে রেখে বিক্ষোভ করতে। তারপর রাত ৯টার দিকে থেকে আন্দোলনের নামে মারমুখী হয়ে ওঠেন সেখানে অবস্থানরত আনসার সদস্যরা। এরপর সমন্বয়কদের আটকে রাখার খবরে শিক্ষার্থীরা সেদিকে অগ্রসর হতে চেষ্টা করলে বেধরক পেটান তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আনসারদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ মিলে তাদেরকে পিটিয়ে অন্তত ৩৫ জনকে আহত করেছেন। গুলির শব্দ শুনলেও গুলিবিদ্ধের খবর এখনও তাদের কাছে পৌঁছেনি। আহতদের অনেকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আজ বিকেলে জানা যায়, চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আনসার বাহিনীর সদস্যরা। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আন্দোলনের স্থগিতের ঘোষণা দেন আনসারদের আন্দোলনের সমন্বয়ক নাসির মিয়া। কর্মসূচি প্রত্যাহারের তথ্য পাওয়া গেলেও দেখা গেছে, আনসার সদস্যরা সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটকে রেখে বিক্ষোভ করতে।
একপর্যায়ে সমন্বয়কদের অবরুদ্ধ করে রাখেন সচিবালয়ে। এই খবরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হলে বিভিন্ন স্থানে তাদের ওপর হামলে পড়েন আনসার সদস্যরা। যদিও কয়েক মিনিটেই সচিবালয়ের চারদিক দখলে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ে আহত হন অন্তত ৩৫ শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, হামলা শুধু যে আনসার সদস্যরা করেছেন তা নয়, তাদের সঙ্গে ছিলেন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেকে।