আমি চেষ্টা করে গেছি, আল্লাহ সহজ করে দিয়েছেন: ম্যাচসেরা রিজওয়ান

গত এশিয়া কাপেই সতীর্থ বাবর আজমকে পেছেন ফেলে টি-টোয়েন্টি র‍্যাংকিয়ে ব্যাটারদের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে , চার-ছক্কার বৈশ্বিক আসরে এসে পথ হারাতে থাকেন পাক ওপেনার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা ব্যর্থতায় ভারতের সূর্যকুমার যাদবের কাছে শীর্ষস্থান হারিয়েছেন। দলের হয়ে ওপেনিংয়ে নেমে মন্থরগতির ব্যাটিংয়ে জন্য নিন্দুকদের প্রচন্ড সমালোচনার মুখেও পড়েছেন।

কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেকে হারিয়ে খোঁজা পাক ওপেনার দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই এসে ই ঝলক দেখালেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ফিফটি হাঁকিয়েছেন রিজওয়ান। কাপ্তান বাবর আজমকে নিয়ে রান তাড়া করতে নেমে গড়েছেন দুর্দান্ত শতরানের জুটি। এতে কিউইদের আরেকবার স্বপ্ন ভেঙে পাকিস্তানও দীর্ঘ ১৩ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে।

গতকাল বুধবার সিডনিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম সেমি-ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। ৫ বল বাকি থাকতে প্রতিপক্ষের ১৫২ রান পেরিয়ে যেতে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন রিজওয়ান। ৪৩ বলে ৫ চারে দলের জয়ে সর্বোচ্চ রান করেন পাক ওপেনার। এতে ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি। আসরের দ্বিতীয়বার ম্যাচসেরা পুরস্কার জিতেছেন।

এতে শাহীদ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ হাফিজে সঙ্গে যৌথভাবে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১১বার ম্যাচ সেরা পুরস্কার জেতার কীর্তি গড়েন তিনি। দুর্দান্ত ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে জিতিয়ে বেশ খুশি মোহাম্মদ রিজওয়ান।ম্যাচশেষে পাক ওপেনার জানান, পরিশ্রম করে তিনি বাকিটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়ে ছেন।

গতকাল ম্যাচসেরা পুরস্কার নিতে এসে তারকা ওপেনার বলেন, “বিশ্বাস ছিল কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে। আল্লাহ বলেছেন, তোমরা পরিশ্রম করো, পুরস্কার পাবে। আমি চেষ্টা করে গেছি। তিনি সহজ করে দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “পিচ খেলার জন্য সহজ ছিল না। তবু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নতুন বলে আক্রমণ শুরু করব। এরপর পাওয়ার–প্লেটা যখন খেলে ফেললাম, সিদ্ধান্ত নিই একজনকে শেষ পর্যন্ত থাকা দরকার।”

বিশ্বকাপ শেষ, দেশে ফিরে গাড়ি ধোয়া ও ডেলিভারিম্যানের কাজে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা

জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন দেশে এসব নিয়ে বিদ্রোহ-আন্দোলনের কথাও শোনা যায়। তবে জিম্বাবুয়ে, নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেটারদের অনেকে কতটা আর্থিক দৈন্যতার মধ্যে থেকেও বিশ্বকাপের মঞ্চে পারফর্ম করেছেন, শুনলে চোখ কপালে উঠবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অবাক করা কিছু তথ্য। জানা গেছে, নেদারল্যান্ডস-জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার কিংবা স্টাফদের অনেকে তাদের চাকরি থেকে বিনা বেতনে ছুটি নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছিলেন।

এদিকে নেদারল্যান্ডসের পেসার পল ফন ম্যাকেরেন বলেন, ‘আমাদের ম্যানেজারকে বেতন দেওয়া হয়নি। তাদের একজনকে (টুর্নামেন্টের মাঝপথে) অফিসে ফিরতে হয়েছে, কেননা তাকে সেখান থেকে কল করা হয়। ফলে আমাদের নতুন ম্যানেজার ডাকতে হয়। আমাদের দুজন খেলোয়াড় আছে স্টিভেন মাইবার্গ আর এন টেজা, দুজনই একটি কনসালটেন্সি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তারা বিশ্বকাপে খেলছেন (বিশ্বকাপ চলার সময়ের কথা) বিনা বেতনে ছুটি নিয়ে। টুর্নামেন্ট শেষে তাদের অফিসে ফিরতে হবে।’

তাছাড়া জিম্বাবুয়ের কয়েকজন ক্রিকেটারও ‘দিন এনে দিন খাওয়ার’ চাকরি করেন। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে জিম্বাবুয়ের এক ক্রিকেটার বলেন, ‘আমি কারও নাম বলব না, কারণ আমরা সহানুভূতি নিতে চাই না। কিন্তু আমাদের একজন সতীর্থ গাড়ি ধোয়ার কাজ করেন, আরেকজন ডেলিভারিম্যান, আরেকজন খেলাধুলার সরঞ্জাম বিক্রি করে সংসার চালান।’

এদিকে ক্রিকেট বোর্ড তাদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারে না, এমনকি অনুশীলনের সময় পানি এবং ক্রিকেট বল কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্যও নেই। জিম্বাবুয়ের একজন খেলোয়াড় বলেন, ‘আমাদের কেউ কেউ তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলের ফি দিতে ধারকর্জ করেছেন।’

অনেকটা একইরকম অবস্থা ডাচ ক্রিকেটারদের। ফন মিকেরেন বলেন, ‘আমাদের অনেক ক্রিকেটারকে দেখবেন কম বয়সেই অবসরে চলে যাচ্ছে। কারণ তারা অন্য চাকরির অফার পাচ্ছে কিংবা পড়াশোনা শেষ করে চাকরিতে ঢুকতে হচ্ছে। আমাদের দলে বয়স্ক ক্রিকেটার নেই, কারণ ডাচ খেলোয়াড়রা ২৩-২৪ বছরেই খেলা শেষ করে ফুলটাইম চাকরিতে ঢুকে যাচ্ছে।’

এদিকে ফন মিকেরেন নিজেও ফুড ডেলিভারির কাজ করেছেন, যখন তার সঙ্গে ইংলিশ কাউন্টি সমারসেটের চুক্তি শেষ হয়ে যায়। গ্লুচেস্টারশায়ারের সঙ্গে নতুন করে দুই বছরের চুক্তি হওয়ার আগে উবারে এবং খণ্ডকালীন সেলসম্যান হিসেবেও চাকরি করেছেন মিকেরেন।

About admin

Check Also

আমরা ভারতকে হারালে সেটা অঘটন হবে: সাকিব

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে এশিয়ার অন্যতম দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান। বিশ্বকাপে …