ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস।
তিনি বলেন, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পরবর্তী পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে, ২০১৫ সালে খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে ডিএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ বর্তমান ও সাবেক ১৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করে মামলা করা হয়। গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির খিলগাঁও থানায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়। জনির বাবা ইয়াকুব আলীর এ মামলা দায়ের করেন
সিলেটে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ কমিশনারের মতবিনিময়
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের নবাগত পুলিশ কমিশনার মোঃ রেজাউল করিম পিপিএম (সেবা) সিলেটে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক ওঅনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
বুধবার দুপুরে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, আমি নিজে চাকুরী জীবনে দীর্ঘদিন থেকে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছিলাম। ছাত্র জনতার ত্যাগের বিনিময়ে নতুন বা়ংলাদেশে আজ পদোন্নতি পেয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি, আমরা তাঁদের রক্তের কাছে ঋণী। সিলেট পবিত্র নগরী ও খুবই শান্তিপূর্ণ পূণ্যভূমি হিসেবে সারা দেশের মানুষের কাছে সুপরিচিত। ছাত্র জীবন থেকে সিলেটের সাথে আমার হৃদিক একটা সর্ম্পক রয়েছে। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ নগর গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন,আমরা জনতার পুলিশে পরিণত হতে চাই। আমরা দলীয় বা কোনো গোষ্ঠীর পুলিশ নয়।জনগণের পুলিশ। আমরা আর দলদাস বা দলান্ধ হতে চাই না। বিগত সময়ে কিছু সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের অপেশাদারিত্মের কারণে আমরা আজ বিপর্যস্ত। পুলিশ কমিশনার বলেন, অপরাধী যেই হোক বিচার হবে।অপরাধী পুলিশ সদস্যদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, আমরা মেট্রোপলিটন পুলিশ সিলেট মেট্রোপলিটন সিটিকে শান্তির নগরী হিসেবে গড়তে চাই৷ বিগত দিনে পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বাড়াবাড়িতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তাহলে ভবিষ্যতে কেউ আর আইনের দায়িত্ব পালনের সময়ে অপরাধ করার সাহস করবে না। আমরা সাংবাদিক আবু তাহের মোঃ তুরাবের রুহের মাগফেরাত কামনা করি ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সাংবাদিক তুরাব হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে ও শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। বিগত দিনে যারা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে রাজপথে প্রদর্শন করেছেন ও ব্যবহার করেছেন সেগুলো উদ্ধারে আপনাদের সহযোগিতা চাই৷
তিনি আরও বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আহত ও নিহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যদের মনে ভয়ভীতির সঞ্চার হয়েছে ও কাজ করার মনোবল কমেছে। এই সুযোগে পুলিশ সদস্যদের দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করা হয়েছিল। এই দুঃসময়ে আমরা পুলিশ সদস্যের বুঝিয়েছি ও এই অবস্থাও কাটিয়ে উঠেছি। আমাদেরকে শান্তি, শৃঙ্খলা ও দেশের কল্যানে কাজ করে যেতে হবে। আমরা জনতার মাঝে জনতার পুলিশ হিসেবে থাকতে চাই৷ বিগত দিনে যারা অন্যায় কর্মকান্ড করেছেন, যারা দূর্বৃত্ত ও অপরাধী তাদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের পূর্বে মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবাদিক আবু তাহের মোঃ তুরাব হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা, অবৈধ চিনি ব্যবসা, অস্ত্র, মাদক ও চোরাইপথে ভারতীয় পণ্য সিলেট নগরী হয়ে সারা দেশে যাচ্ছে,এই সব কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে৷ এগুলো অতীতে প্রশাসনের একশ্রেণীরর কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হয়েছে বলে অনেক বক্তব্যে উল্লেখ করেন। বিগত দিনে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের যে প্রদর্শন হয়েছে সেগুলো উদ্ধারেরও দাবি জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমদ হেলাল, সাধারণ সম্পাদক এম সাইফুর রহমান তালুকদার, ইমজার সভাপতি সজল ছত্রী, সাধারণ সম্পাদক শ্যামানন্দ দাশসহ সিলেটে কর্মরত সকল প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য,নবাগত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এর আগে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মাহাবুর রহমান শেখের সই করা প্রজ্ঞাপনে রেজাউল করিমকে কমিশনার হিসেবে পদায়ন হন। রেজাউল করিম আগে অ্যাডিশনাল ডিআইজি হিসেবে এন্টি টেরোরিজম ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। এর আগে ছিলেন ঝিনাইদহ জেলার পুলিশ সুপার। ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে তিনি সিলেটে নিয়োগ পেয়েছেন।