রাজধানীতে সহ-সমন্বয়ক পরিচয়ে বাসের হেলপারকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে কটূক্তির শিকার হচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়কসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসের হেলপারকে মারধর করছে এক যুবক। এ সময় তিনি বলছেন— আমাকে চিনিস, আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সমন্বয়ক। এক মিনিট ৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে পুরোটা সময়জুড়ে মারমুখী অবস্থায় ছিলেন সেই যুবক।
জানা যায়, হেলপারকে মারধর করা এ যুবকের নাম তৌসিফ শাকিল। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-সমন্বক নামে কখনোই কোন পদ ছিল না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া একাধিক সমন্বয়ক। গত ২৯ জুলাই ২৭ সদস্যবিশিষ্ট যে সমন্বয়ক পরিষদ গঠন করা হয় তাতেও নাম নেই এই শাকিলের।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নূর নবী বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো সহ-সমন্বয়ক নামে কোনো পদ ছিল না। যতটুকু জানতে পেরেছি, বাসের হেলপারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা শাকিল আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এরা বিশ্ববিদ্যালয় ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারীদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অর্গানাইজিং উইংয়ের সদস্য শাহিন আলম সান বলেন, বাসের হেলপারকে মারধর করা শাকিল নামের এই ছেলেকে আমি চিনি না। এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে সে ছাত্রলীগ কর্মী ছিল। এই অপকর্মের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
অভিযোগ রয়েছে, শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরণ বাস কমিটির সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেয় ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে। তবে ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে শাকিলের অবস্থান থাকায় তাকে উত্তরণ বাস থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা।
চিকিৎসার জন্য ৭ হাজার টাকা দাবি, অক্সিজেন না দেওয়ায় অভিযোগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর হামলা-মামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার সঞ্জয় পাল (২৪) নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এ ছাড়া নিহত আহসানুল ইসলাম দীপ্তর চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে টাকা দাবি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া গাইবান্ধা থানা হেফাজতের একটি ভিডিওতে সঞ্জয় পালকে এসব কথা বলতে শোনা যায়।
ভিডিওতে সঞ্জয় পালকে বলতে শোনা যায়, আমার বন্ধুর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়রা সাত হাজার টাকা দাবি করেছিল। আমার বন্ধুর অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু তারা দেয়নি। আমরা গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে এবং যারা ঢামেকে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ) নিয়ে গেছে তাদের থেকে এসব জানতে পেরেছি। এবং বন্ধু মৃত্যুর আগে যাদেরকে এসব কথা বলে গেছে তাদের থেকে শুনেছি। দুইজনের মোবাইল নম্বর আছে আপনারা জানতে পারবেন।
সঞ্জয় পালকে আরও বলতে শোনা যায়, এসব জানার পর আমার বন্ধুর চিকিৎসার রেকর্ড দেখতে গিয়েছি। কিন্তু গিয়ে দেখি পুরো ফাইল গায়েব। এরপর আমরা একজন ডাক্তারকে নিয়ে ব্রিগেডিয়ারের কাছে গেয়েছি। আমরা কখনো ভাঙচুর করিনি। ওইসময় কারা ভেঙেছে, আসলে কিছু জানি না। আমরা আমার বন্ধুর মৃত্যুর কারণ জানতে মেডিকেলে গিয়েছিলাম বলে ভিডিওতে শোনা যায়।