ইহরামের কাপড় পরেও দেশ ছাড়তে পারলেন না দুই আ.লীগ নেতা

সৌদি আরবে যাওয়ার সময় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় তাদেরকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে। তাদের সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জানা গেছে, তারা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবের জেদ্দায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

আটকরা হলেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শামিম আহমদ ও প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমান জামিল। আটক জামিল সিলেট রেড ক্রিসেন্ট শাখার সেক্রেটারি। আটকের সময় তারা হজের ইহরামের কাপড় পরা অবস্থায় ছিলেন।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আটক আওয়ামী লীগের দুই নেতা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (বিজি ২৩৫) সৌদি আরবের জেদ্দায় যাওয়ার কথা ছিল। বিমানবন্দরের কয়েকটি নিরাপত্তা স্তর পেরিয়ে ইমিগ্রেশনে চলে যান তারা। কিন্তু ইমিগ্রেশনের সময় তাদের আটকে দেয়া হয়। পরে বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়। আটকের সময় তারা হজের ইহরামের কাপড় পরা অবস্থায় ছিলেন।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, তাদের কোতোয়ালি থানায় আনা হয়েছে। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জামায়াত-শিবির নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজ

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) প্রত্যাহার করা হতে পারে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে, পতনের দ্বারপ্রান্তে যখন শেখ হাসিনার সরকার; ঠিক সেসময় ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আওয়ামী লীগ সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই-ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসেবে গণ্য করা হইয়াছে।’

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘যেহেতু বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে রাজনৈতিক দল হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বাতিল করিয়া দিয়াছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত রায়কে বহাল রাখিয়াছে। যেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল; এবং যেহেতু, সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে। সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল। উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসাবে তালিকাভুক্ত করিল।’

জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের বিষয়ে দলটির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তা মঙ্গলবারের মধ্যে প্রত্যাহার হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।

তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলেই নিবন্ধন ফিরে পেতে আইনি লড়াই শুরু করা হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ভিন্ন দিকে নিতে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার।

দলটির আইনজীবী আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করে আসছে। শুধুমাত্র ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঠেকাতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দলটিকে নিষিদ্ধ করেছিল।

About admin

Check Also

দুই মাসেই দেউলিয়া হওয়ার পথে বাংলাদেশ : বাহাউদ্দিন নাছিম

বাংলাদেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *