জমি লিখে না দেওয়ায় নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় আব্দুর রাজ্জাক (৯০) নামে এক বৃদ্ধ বাবার পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে দেড় মাস যাবত গৃহবন্দি করে রাখে সন্তানরা। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়েরের পর রোববার সকালে আটক হামিদা আক্তার ও সেলিমকে আদালতে সোপর্দ করেছে থানা পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) কেন্দুয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) তানভীর মেহেদী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মামলাটির দুই আসামিকে এরই মধ্যে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং অন্য দুজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ ও
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাকের নামে থাকা বসতবাড়িসহ সমস্ত সম্পত্তি স্ত্রী হামিদা আক্তার ও তার তিন ছেলেকে লিখে না দেওয়ায় তারা বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাককে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল। একপর্যায়ে গত ৫ এপ্রিল বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাকের পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে বসতঘরের এক কোণায় চৌকির সঙ্গে বেঁধে রাখেন সন্তানরা। সংবাদ পেয়ে স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের সহযোগিতায় শনিবার বিকালে
কেন্দুয়া থানা পুলিশ উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া গ্রাম থেকে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করেছে। এ সময় ওই বৃদ্ধের স্ত্রী হামিদা আক্তার ও বড় ছেলে সেলিমকেও আটক করে পুলিশ। বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্ত্রী ও ছেলেদের কথামতো জমিজমা লিখে না দেওয়ায় তারা আমাকে শিকল দিয়ে ঘরের কোণে বেঁধে রাখে। তিনি আরও বলেন, শিকলবন্দি করার পরও তারা আমাকে মারধর করত। এমনকি ঈদের দিনও তারা
আমাকে এভাবে বেঁধে রেখেছিল। স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও কল্যাণী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কল্যাণী হাসান বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে আমরা বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাককে শিকলবন্দি করে রাখার সংবাদ পাই। পরে শনিবার বিকালে ওই গ্রামে গেলে বসতঘরের এককোণে পায়ে লোহার শিকল দিয়ে চৌকির সঙ্গে তাকে বেঁধে রাখতে দেখি। এ সময় আমি নিজহাতে উনাকে শিকলমুক্ত করি। মানবাধিকারকর্মী শাহ আলী তৌফিক রিপন
বলেন, এরকম অমানবিক ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বিষয়টি জানার পরপরই ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যাই। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে শিকলমুক্ত করা হয়। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online