যানবাহন পারাপারের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। রবিবার (২৬ জুন) ভোর ৬টা থেকে সাইকেল-থ্রি হুইলার ব্যতীত টোল দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল শুরু হয়েছে এ সেতুতে। এরপরই নিজস্ব গাড়িতে কিংবা বাসে সপ্নের পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাদেরই একজন লেডি বাইকার রোবায়েত রুবা। পদ্মা সেতুতে নারী হিসেবে মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রথমে উঠেছেন তিনি।
জানা গেছে, রাজধানী মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে রুবা মোটরসাইকের নিয়ে সকালে সেতুতে ওঠেন। উদ্বোধনের পরদিনেই নারী মোটরসাইকেল চালক হিসাবে প্রথমে সেতুতে উঠলেন তিনি। সে হিসাবে রুবা পদ্মা সেতুতে ওঠা প্রথম লেডি বাইকার।
রোববার (২৬ জুন) সকাল ৯টায় পদ্মা সেতুতে পৌঁছান তিনি। পেশায় একজন ইউটিউবার রোবায়েত রুবা জানান, তার উচ্ছ্বাসের কথা। তিনি বলেন, এ অনুভূতি ব্যক্ত করার মতো না। সকালে মিরপুর শেওয়াড়াপাড়া থেকে বাইক চালিয়ে এসেছি। অনেক আনন্দ লাগছে। যদিও আমার বাড়ি ঢাকায়, তবে এই সেতু নদীর ওইপাড়ের মানুষের জন্য বড় পাওয়া।
সঠিক ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে রুবা বলেন, সেতুতে নিয়ম অনুয়ায়ী গাড়ি চালানো উচিত। লিখে দিয়েছে ৮০কি.মি। আমি আইন মান্য করে বাইক চালিয়ে এসেছি। সবাইকেই একই অনুরোধ করবো।
এর আগে গতকাল শনিবার (২৫ জুন) সকালে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো।
প্রথম টোল দিয়ে বাইক নিয়ে পদ্মা পার হলেন যিনি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরদিন যান চলাচল শুরু হয়েছে স্বপ্নের সেতুতে। রবিবার (২৬ জুন) ভোরের আলোয় সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় পদ্মা সেতুর প্রবেশদ্বার। এদিন সকাল ৬ টা থেকে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পার হওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের দশ মিনিট আগেই ৫টা ৫০ মিনিটে আমিনুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী মাওয়া টোল প্লাজার ৩ নম্বর লেইনে ১০০ টাকা টোল দিয়ে পদ্মাসেতু পার হন।

আমিনুল ইসলাম জানান, কামরাঙ্গীর চর থেকে তারা বন্ধুরা মিলে দল বেঁধে এসেছেন পদ্মা সেতু পার হওয়ার জন্যই। টোল প্লাজা খোলার অপেক্ষায় ছিলেন ভোর থেকে। তার মোটর সাইকেল সামনে থাকায় প্রথম সুযোগটা তিনিই পেয়ে গেছেন। এরপর একে একে প্রাইভেটকার, বাস, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সসহ অনুমোদিত যানগুলো টোলপ্লাজা পেরিয়ে মাওয়া প্রান্তের দিকে ছুটে গেছে।
স্বপ্নের সেতু দিয়ে প্রথম পারাপারের ইতিহাসের অংশ হতে শনিবার রাত থেকে আশপাশের এলাকায় গাড়ি নিয়ে অবস্থান করতে থাকেন অনেকে। মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, বাস ও ট্রাকের সারি ছিল সকাল থেকেই।
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা সারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাওয়া প্রান্তে টোল দিয়ে তিনিই হন এ সেতুর প্রথম যাত্রী। রবিবার সকাল থেকে সবার জন্য সেতু খুলে দেওয়ার কথা থাকায় প্রথম যাত্রার অভিজ্ঞতা স্মরণীয় করে রাখার অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। সে কারণে অনেকেই মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন বাহন নিয়ে রাতে এসে অপেক্ষা করছিলেন সেতুর দুই প্রান্তে।
পদ্মা সেতুতে ৮ ঘণ্টায় টোল আদায় ৮২ লাখ আজ থেকে সাধারণ যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। শুরুতেই উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। পদ্মা সেতুতে প্রথম ৮ ঘন্টায় গাড়ি চলাচল করেছে ১৫ হাজার ২০০টি এবং এসব গাড়ি থেকে এই সময়ের মাঝে ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে।
আজ রোববার (২৬ জুন) বিকেলে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন । তিনি জানান, আট ঘণ্টায় দুই পাড়ে মোট ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর আগে আজ রোববার (২৫ জুন) সকাল ৫টা ৪০ মিনিটে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় পদ্মা সেতু। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় আসতে দীর্ঘদিন যে অসহনীয় দুর্ভোগ ও কষ্ট ছিল আজ থেকেই তা দূর হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মেহেরপুরের জাজিরা প্রান্ত দিয়ে উত্তাল পদ্মা নদী পার হতে যেখানে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতো এখন সেই নদী পার হতে সময় লাগছে মাত্র কয়েক মিনিট। এতে অনেকেই বাইক ও প্রাইভেটকার নিয়ে পার হচ্ছেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেই সঙ্গে ট্রাক, বাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানচলাচল করছে সেতু দিয়ে।
পদ্মা সেতু পার হতে মোটরসাইকেল ভাড়া ২০০-৪০০ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দুয়ার খুলেছে। শনিবার (২৫ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সেতুর উদ্বোধনের পর ২৬ জুন থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। রোববার সকাল থেকেই সেতুতে ভিড় করছে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ। কেউ নিজস্ব পরিবহনে, কেউ হেটে কিংবা ব্যক্তিগত পরিবহনে সেতু পারাপার হচ্ছেন।

তবে এদিন সকাল থেকেই সেতুপ্রান্তে প্রচুর মোটরসাইকেল লক্ষ্য করা গেছে। অধিকাংশই এসেছেন পদ্মা সেতু ঘুরে দেখতে। তবে কিছু মোটরসাইকেল ভাড়ায়ও যাত্রী পারাপার করছেন। পদ্মা সেতু পার হতে ভাড়ায় চালিত সেসকল মোটরসাইকেলে জনপ্রতি দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা। দুইজন উঠলে ৪০০ টাকা। তবে দুই জন যাত্রী ছাড়া মোটরসাইকেলগুলোও যাত্রী নিচ্ছে না। কেউ একা যেতে চাইলে তাকে গুনতে হচ্ছে ৪০০ টাকা।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মোশাররফ নামের এক মোটরসাইকেল চালক জানান, ‘টোল ভাড়া ১০০ টাকা, বাকি ১০০ টাকা মোটরসাইকেলের ভাড়া। আবার বেশিরভাগ সময় ফিরে আসতে হবে খালি। আবার তেল খরচ তো আছেই। সবকিছু হিসাব করে ২ জন যাত্রী নেওয়া হচ্ছে এবং জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা করে।’
এদিকে রোববার পদ্মা সেতুতে দেখা গেছে, কেউ গাড়ি থেকে নেমে হাঁটাহাঁটির পাশাপাশি তুলেছেন ছবি। শাড়ি পরা কয়েকজন নারী নেচে-গেয়ে টিকটক ভিডিও করছেন। অনেকেই আবার হেঁটেই সেতু পার হয়েছেন। ভিডিওকলে স্বজনদের সেতু দেখানোরও দৃশ্য দেখা গেছে। এদিকে সেতুতে ঘুরতে এসে অনেকেই বলছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ঘোষণার পর থেকেই ঠিক করেছি প্রথম দিনই সেতু দেখতে আসব। সারাদিন ঘুরব, তারপর বিকেলে ফিরে যাব।
তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে চলেছে প্রশাসন। আগামীকাল (সোমবার) থেকে পদ্মা সেতুতে নেমে ছবি তুললে জরিমানার কবলে পড়তে হবে। একই সঙ্গে বাইকের গতি কিংবা নিয়ম না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা। রোববার (২৬ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানান
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online