জর্ডানের ইতিহাসের সাক্ষী ও পবিত্র এই গাছটি নিয়ে জানা আছে কি আপনার? হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর বয়স যখন ১২ ছিল, তখন তিনি মক্কা থেকে দামেস্কাস যাওয়ার পথে এই গাছটির নিচে বসে বিশ্রাম নিয়েছিলেন।
সময়টা ছিল হিজরি সন হিসেবে ১৪৫৯ বছর আগে। নবীজিকে ছায়া দেয়া এতো বছর পুরানো এই গাছটি দেখলে এখনও মনে হবে যেন অনন্ত যৌবনা। চলুন ইতিহাসের সাক্ষী এই পবিত্র গাছটি সম্পর্কে আরও কিছু জেনে নেয়া যাক।
পবিত্র এই গাছটি রয়েছে জর্ডানে যেখানে হজরত মুহাম্মদ (সা.) আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে বিশ্রাম করেছিলেন। এরপর এই গাছটির জন্য তিনি দোয়া করেন। এই গাছটি আজও পর্যন্ত ঠিক একই অবস্থায় রয়েছে, এমনকি একটুও ক্ষয়ও হয়নি এবং শুষ্কও নয়! তাই এই গাছটি যে পবিত্র এক নিদর্শন তা আর বলার
অপেক্ষা রাখে না। পরিবেশের নানান প্রতিকূলতা ছাপিয়ে সেই ১৪০০ বছর ধরে একই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে গাছটি। জর্ডানের মরুভূমির উত্তর দিকে দেখা মিলবে এই গাছটির। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, এই গাছটির আশেপাশে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত কোনো গাছপালা বা সবুজের ছিটাফোঁটাও নেই।
তাই ইতিহাস থেকে আপনি জানতে পারবেন যে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) মায়সারা (হজরত খাদিজা রাঃ. এর সহযোগী) এর সাথে সিরিয়াতে গিয়েছিলেন পণ্য বিনিময়ের জন্য। হজরত মুহাম্মদ (সা.) তখন এই গাছের নিচে গিয়ে শুধু বসেছিলেন। আর এই গাছটির ডালপালা এবং পাতা সেভাবেই হজরত মুহাম্মদ
(সা.)-কে ছায়া দিয়ে সূর্যের আলোর তাপ থেকে রক্ষা করছিল। এছাড়াও একজন পাদ্রি বা যাজক বিষয়টি লক্ষ্য করার পর মায়সারাকে বলেন যে, নবীজিকেই গাছটির এরকম ছায়া দেয়ার কথা। এই গাছটিকে বলা হয় ‘দ্য মেইন লিভিং সাহাবী’ বা কম্প্যানিয়ন’ অর্থাৎ নবীজির সঙ্গী যা এখনও জর্ডানে জীবিত
অবস্থায় রয়েছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) যখন তাঁর চাচা আবু তালিবের সাথে দামেস্কাসে যান,তখন সেই ভ্রমণকারী মরুযাত্রী দল মক্কা ও দামেস্কাসের মধ্যকার মরুভূমিতে বেশ বিপদের সম্মুখীন হয়েই বর্তমানের সাফাওইতে থামেন এবং অবস্থান করেন। সেখানেই একটি জায়গার নাম বাকাওইয়া, যেখানে এই গাছের নিচে বসে
ছোটবেলায় নবীজি বিশ্রাম করেছিলেন। অলৌকিকভাবে এই গাছটির গোঁড়ায় পানির খুব স্বল্প উৎস থাকা সত্ত্বেও অনুর্বর মরুভূমি আর তপ্ত রোদের মাঝেও চির সবুজ হয়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে। চারিদিকে ডালপালা ছড়িয়ে দেয়া এই গাছটির চারপাশে এখন দেয়াল দিয়ে আলাদা করে দেয়া হয়েছে এবং এটি নির্মাণ এবং
পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন মিনিস্ট্রি অব ওকওয়াফ্ এন্ড ইসলামিক অ্যাফেয়ারস্। ইসলামিক ইতিহাসবিদেরা চাক্ষুস সাক্ষীদের বক্তব্য মোতাবেক লিপিবদ্ধ করেন যে, এটিই সেই গাছ যেখানে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্রাম নিচ্ছেলন এবং তখনই তাঁর দেখা হয় যাজক বা পাদ্রি বাহিরার সাথে। তাকে সেই গাছের নিচে দেখেই পাদ্রি বাহিরা ঘোষণা করেন যে এই বালকই শেষ নবী ও
রাসুল এবং তাঁর চাচা আবু তালিবকে বলেন যে তাকে যেন খেয়াল করে আর সুরক্ষিত অবস্থায় রাখেন। তবে অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, পাদ্রি বাহিরার সাথে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর এই সাক্ষাৎকার হয়েছিল কাস্ট্রাম মাফাতে যা বর্তমানের আম্ রাস্সাস বা সিরিয়ার বসরা হিসেবে পরিচিত। আর দামেস্কাসে যাওয়ার পথে এই বাকওইয়া গাছটির নিচে তিনি শুধুমাত্র বিশ্রামের জন্য
বসেছিলেন। এমনকি এই গাছটির বয়স নিয়েও রয়েছে নানান তর্ক বিতর্ক। সেখানকার অনেক স্থানীয়রাই দাবি করেন যে, এই পেস্তা বাদাম গাছটির বয়স ১,৫০০ বছরের বেশি নয়। তবে, যত দাবী, মতবিরোধ আর যুক্তিতর্কই থাকুক না কেন, জর্ডানের পবিত্র এই গাছ বাকওইয়া অলৌকিকতা এবং নিদর্শনের মূর্ত প্রতীক।
বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে থাকা এই গাছটি মার্চ মাসের পর যেকনোন সময় সবুজের সমারোহতে পরিনত হয়। গাছটি সম্পর্কে জেনে আপনার কতটা ভালো লাগলো তা শেয়ার করুন আমাদের সাথে!
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online