বাংলাদেশে আমার মেসিকে ঘিরে উদযাপন করে সেটা নিঃসন্দেহে গর্বের: মেসির মা

এবার বিশ্বজয়ের হাতছানি মেসিদের সামনে। আর এরই মধ্যে বাংলাদেশ নামটাও বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে আর্জেন্টাইনদের কাছে। কোটি বাঙালি ভক্তের ভালোবাসার কথা জানেন বিশ্বতারকা লিওলেন মেসির মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি ও সহধর্মীনী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর।

এদিকে কাতারের দোহায় তারা তাদের ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করলেন একাত্তরের প্রতিবেদক অর্ণব বাপির কাছে। খেলাযোগ টিমের পক্ষ থেকে তারা গ্রহণ করেছেন লাল-সবুজ বাংলার জার্সিও। গত মঙ্গলবার ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ক্রোয়েশিয়ার সাথে ম্যাচ শেষে ফিরছিল মেসির পরিবার।

সে সময় এ বিশ্বতারকার মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি উচ্ছ্বাস নিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে সেটা অভাবনীয়। এতো দূরের একটা দেশ যে আমার মেসিকে ঘিরে উদযাপন করে সেটা নিঃসন্দেহে গর্বের। আমাদের পক্ষ থেকেও তাদের জন্য ভালোবাসা।’

এদিকে লিওলেন মেসির সহধর্মীনী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর খানিক বাদেই বলে ওঠেন, ধন্যবাদ- বাংলাদেশ। সেই সাথে বাংলাদেশের ভক্তদের ভালোবাসা জানান মেসির ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

‘২০২৬ বিশ্বকাপেও খেলতে পারবেন মেসি’

আগামী রবিবার ফাইনালটিই হতে যাচ্ছে লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়েই এ ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা নিজেই। ৩৫ বছর বয়সী মেসির জন্য ৪ বছর পর আরেকটি বিশ্বকাপ অবশ্য কষ্ট–কল্পনাও বটে। তবে বয়সের এসব হিসাব–নিকাশ মানতে রাজি নন মেসির সতীর্থ গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।

তিনি বলেছেন, মেসি চাইলে ৫০ বছর বয়সেও খেলতে পারবেন। আর সেটি হলে মেসিকে অন্তত ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে নিশ্চিতভাবেই দেখা যাবে। কাতার বিশ্বকাপে মেসির নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত দারুণ খেলেছে আর্জেন্টিনা।

প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে শুরু করলেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আর্জেন্টিনা। মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ ষোলোর টিকিট নিশ্চিত করে তারা। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া, শেষ আটে নেদারল্যান্ডস এবং শেষ চারে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়েছে তারা। এখন আরেকটি ম্যাচ জিতলে হাতে উঠবে স্বপ্নের বিশ্বকাপ ট্রফি।

এদিকে বিশ্বকাপজুড়ে দারুণ খেলেছেন মার্তিনেজও। বিশেষ করে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকারে তাঁর কৃতিত্বেই বৈতরণী পার হয় আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের আগে মার্তিনেজ বলেছিলেন, মেসির জন্য জীবন দিতে পারবেন। এবার মেসির ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাইলে বলেছেন, ‘আমার জন্য সে ৫০ বছর বয়সেও খেলতে পারবে। সে এখনো দুর্দান্ত। মেসি বিষয়গুলো অনেক সহজ করে দিতে পারে—যা সবচেয়ে কঠিন।’

এ সময় মার্তিনেজ আরও বলেছেন, ‘তাঁর সঙ্গে খেলাটা আমাকে খেলোয়াড় হিসেবে আরও ভালো করেছে। মেসির কোপা জেতাটা দারুণ ব্যাপার ছিল। সে একজন নায়ক হয়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। মানুষ মেসিকে প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি সম্মান করে। মেসি বললে মানুষ ২৪ ঘণ্টা বাসায় বসে থাকবে। সে সবার শীর্ষে। কঠোর পরিশ্রমী এবং সবার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী একজন।’

মেসিকে ভালোবাসলেও ফাইনালে ফ্রান্সকে সমর্থন দেবেন সিজার

ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার প্রতিদ্বন্দ্বীতা নতুন নয়, তাই একে অপরের জন্য গলা ফাটানোর তো প্রশ্নই আসে না। সাবেক ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক জুলিও সিজারও তেমনই। লিওনেল মেসিকে খুব ভালোবাসেন তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপের ফাইনালে মেসি নয় ফ্রান্সকেই সমর্থন দেবেন তিনি। কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের যাত্রা কোয়ার্টার ফাইনালেই থমকে গেছে। ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে আসর থেকে বিদায় নেয় সেলেসাওরা।

তবে আজ যদি ফ্রান্সের বিপরীতে ব্রাজিল থাকত তাহলে আর্জেন্টিনা ভক্তরাও একই কাজ করতেন বলে মনে করেন সিজার। তিনটি বিশ্বকাপ খেলা সাবেক এই গোলরক্ষক বলেন, ‘একজন ব্রাজিলিয়ান হিসেবে, ফ্রান্সকে সমর্থন করতেই হবে আমার। আমি মেসিকে ভালোবাসি। আমার কাছে সে অবিশ্বাস্য, দুর্দান্ত এক খেলোয়াড়। তাকে খেলতে দেখাটা দারুণ। তবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে স্বাস্থ্যকর এক প্রতিন্দ্বন্দ্বীতা চলে। যদি ব্রাজিল ফাইনালে থাকত তাহলে অবশ্যই আর্জেন্টিনা আমাদের বিরুদ্ধে থাকত। এই মুহূর্তে কোনো ভণ্ডামি দেখাচ্ছি না আমরা।’

এদিকে ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নে দাঁড়িয়ে মেসি। আগামী ১৮ ডিসেম্বর খেলতে নামবেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের শেষ ম্যাচ। ক্যারিয়ারে এতো সব অর্জনের ভীড়ে যদি বিশ্বকাপটাই না থাকে, তাহলে বড় এক অপূর্ণতাই থেকে যাবে ক্যারিয়ারে। তাই অনেক ফুটবল ভক্তই চাইছেন মেসির হাতেই এবারের বিশ্বকাপ উঠুক। সে কথা অজানা নয় সিজারের। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মেসির যা ক্যারিয়ার, যা অতীত; সেকারণে ব্রাজিলিয়ান নন এমন সমর্থকরা খুব করে চাইছেন মেসিই বিশ্বকাপ জিতুক।’

সিজার বলেন, ‘যেকোনো বাদ পড়াই খারাপ লাগার কারণ একজন খেলোয়াড় তার ভালোভাবে প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বকাপে আসে। আমি মনে ব্রাজিল জাতীয় দলের কাছেও তা ভিন্ন নয়। আমরা দেখেছিলাম সেলেসাও কতটা ঐক্যবদ্ধ ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, ফুটবল ফুটবলই। এবং মাঝেমধ্যে সেরা দলও জেতে না। তাই আমি মনে করি, এটাই শেখার উপায় এবং সেটা নিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে যেতে হবে।’

মেসির জার্সি শেষ, রাতারাতি বানানো অসম্ভব: অ্যাডিডাস

এবার অ্যাডিডাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাতারাতি উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব নয়। এই জার্সি যে সাড়া জাগাবে তা তারা জানতো। তবে সারাবিশ্বে, এমনকি অনলাইনেও যে এই ধরনের কাড়াকাড়ি দেখা যাবে সেই অনুমান তাদের ছিল না। ফুটবলের বড় উন্মাদনার নাম লিওনেল মেসি। ৩৫ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন তারকা কাতার বিশ্বকাপে আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। বলা চলে, দলকে একাই টেনে নিয়ে গেছেন ফাইনালে।

কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ সৌদি আরবের কাছে হারের পর সবকটি ম্যাচেই জ্বলে উঠেছেন এই তারকা। চার ম্যাচে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। বিশ্বকাপ জিতলেই সর্বকালের সেরার তর্কে কিংবদন্তিদের ছাপিয়ে যাবেন লিওনেল মেসি। তিনি আছেন সেই স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে, আর মাত্র একটি ম্যাচ সফলভাবে পাড়ি দিতে পারলেই তার হাত ছোঁবে সোনালী ট্রফি।

এদিকে মেসির সোনালী ট্রফি ছোঁয়ার সাক্ষী হতে উন্মুখ হয়ে আছেন মেসি ভক্তরা। বিশ্বব্যাপী ফুটবলের এই সেরা দৃশ্য উদযাপনে মেসির ১০ নম্বর জার্সি গায়ে জড়াবেন ভক্তরা সেটিই স্বাভাবিক। ফলে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে আর্জেন্টিনার ১০ নম্বরের জার্সি। তবে শেষ মুহূর্তে এসে আর জার্সিও মিলছে না। অ্যাডিডাসের দোকানগুলো থেকে হতাশ হয়ে ফিরছেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। বুয়েনস আইরেস থেকে মাদ্রিদ, দোহা কিংবা টোকিও সব জায়গায় একই দশা।

সাইজ ছোট থেকে বড় যাই হোক, নারী কিংবা পুরুষের হোক, কোনো জার্সিই আর মিলছে না। আর্জেন্টিনা আগে থেকেই বিশ্বের অন্যতম ফেভারিট ফুটবল দল। এবার ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার পর দেশটির জার্সি বিক্রি বেড়েছে আরও। অ্যাডিডাসের ব্যবসা বাড়াতে বরাবরই ভূমিকা রেখেছে আর্জেন্টিনা। অন্যকোনো শীর্ষ ও বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় জাতীয় দল জার্মান এই ব্র্যান্ডের জার্সি পরে না।

এদিকে জার্সি শেষ হলে কী হবে, নকল জার্সির অভাব নেই। কিছুদিন আগে জার্সি না মেলার অভিযোগের মুখে আর্জেনটাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জানায়, “আমাদের এখানে কিছু করার নেই। যদিও বিক্রি বাড়লে আমাদেরই লাভ। এটা অ্যাডিডাসের বিষয়। আমদানি, জনশক্তি স্বল্পতাসহ জনরোষের মতো অনেকগুলো বিষয়ের কারণেই তারা সমস্যায় পড়েছে।”

অ্যাডিডাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাতারাতি উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব নয়। এই জার্সি যে সাড়া জাগাবে তা তারা জানতো। তবে সারাবিশ্বে, এমনকি অনলাইনেও যে এই ধরনের কাড়াকাড়ি দেখা যাবে সেই অনুমান তাদের ছিল না।

Check Also

Where Do Health Care Assistants Work? A Comprehensive Guide

Where Do Health Care Assistants Work? A Comprehensive Guide

Health care assistants play a crucial role in the medical field, offering hands-on care to …